
—ছবি মুক্ত প্রভাত
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে বাতিল হওয়া নিয়োগ ফিরে পাওয়ার দাবিতে মহাসমাবেশ থেকে সচিবালয় অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করেন তৃতীয় ধাপে নিয়োগের সুপারিশ প্রাপ্তরা।
এসময় সচিবালয়মুখী সড়কে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। বাধা পেয়ে সড়কেেই অবস্থান করেন আন্দোলনকারীরা। আন্দোলকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে প্রথমে জলকামানের ব্যবহার করে। এরপর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপের পর লঠিপেটা করে পুলিশ।
আরো পড়ুন———
> বেতন নিয়ে শিক্ষকদের যে নির্দেশনা দিল মাউশি
> শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
> আন্দোলনরত নিবন্ধনধারীদের দাবি পূরণ হচ্ছে
> জাতীয়করণের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বেসরকারি শিক্ষকদের অবস্থান শুরু
আজ রোববার বিকেল তিনটার দিকে শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু করেন আন্দোলনকারাী। এসময় সহস্রাধিক আন্দোলবারী শাহবাগ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি হয়ে হাইকোর্টে মাজার সড়কের দিকে যাচ্ছিলেন।
সেখান থেকে সচিবালয়ের দিকে রওনা দেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় পুলিশ ব্যারিকেড দেয়। বিকেল চারটার কিছু আগে পুলিশ আন্দোলনকারীদের দিকে জলকামান ছোড়ে। জলকামানের পরও আন্দোলনকারীরা সেখানেই অবস্থান করেন।
আন্দোলনকারীদের মধ্যে ইব্রাহীম খলিল দুপুরে বলেছিলেন, মিছিল নিয়ে তারা হাইকোর্ট মাজার পর্যন্ত যাবেন। তারপর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এসে আবারও অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন। কিন্তু এর মধ্যেই পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে।
এর আগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগপ্রত্যাশীরা এবার মহাসমাবেশের ডাক দেন বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি)। সেখানে রাজধানির শাহাবাগে আন্দোলনে লাঠিচার্জ ও জলকামান শিকারের পর আন্দোলনকারীরা এই সিদ্ধান্ত নেন।
বৃহস্পতিবার বিকালে সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে জান্নাতুন নাঈম, সামিয়া আক্তার ও নওরীন আক্তার এই মহাসমাবেশের ঘোষণা দেন। তবে কোথায় এই সমাবেশ করা হবে তা এখনো জানানো হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আগামী দুই দিন শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি চলমান থাকবে। নারী শিক্ষকদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের প্রতিবাদ এবং যোগদানের দাবিতে রবিবার মহাসমাবেশ করা হবে।
আন্দোলণরত শিক্ষকদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়েছে নিয়োগ প্রত্যাশীরা মুক্ত প্রভাতকে বলেন, আন্দোলন থেকে পুলিশ যেসব শিক্ষকদের আটক করেছে, তাদের এক ঘন্টার মধ্যে ছেড়ে দিতে হচেব। দাবি আদায় না হলে আমরা রাজপথে আত্মহত্যা করবো। রবিবারের মধ্যে অবৈধ প্রহসনের রায় বাতিল করে নিয়োগপ্রত্যাশীদের যোগদান নিশ্চিত করতে হবে।
এর আগে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আন্দোলনের সময় শাহবাগ মোড় থেকে আন্দোলনকারীদের মধ্যে ১৪জনকে আটক করে পুলিশ।
আন্দোলন থেকে আটককৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার শাহাবাগে আন্দোলনে ছিলেন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক পদে নিয়োগ বাতিল হওয়া প্রার্থীরা। আন্দোলন ভেঙে দিতে আন্দোলনকারীদের ওপর লাঠিচার্জের পর জলকামান নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শাহবাগ মোড় অবরোধ করলে পুলিশ আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হয়। জলকামান নিক্ষেপ করার পর আন্দোলন কারীদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন।
কয়েকদিন ধরেই চাকরি প্রার্থীরা নিয়োগ পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন করছেন। আন্দোলনের অংশ হিসেবে এর আগেও তারা সড়ক অবরোধ করেন। তখনও আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ জলকামান ব্যবহার করে।
আন্দোলনকারীরা বলেন, তারা নিয়োগ পেয়েছিলেন ২০২৩ সালের বিধিমালা অনুযায়ী। একই প্রক্রিয়ায় দুইধাপে সুপারিশপ্রাপ্তরা প্রায় বছর খানেক আগে কর্মস্থলে যোগদান করেছেন। কিন্তু ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের তৃতীয় ধাপের সাড়ে ৬ হাজার সুপারিশপ্রাপ্তদের নিয়োগ ৬ মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। এটি বৈষম্য বলে মনে করেন তারা।
এর আগে বুধার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে আন্দোলন চলাকালে সন্ধ্যার আগে নিয়োগ প্রত্যাশীরা বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি ে‘জাস্টিস ফর টিচার, লং মার্চ টু ঢাকা’ শুরুর ঘোষণা দেন।
নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত আসার পর ৬ হাজার ৫৩১ জনের যোগদান নিশ্চিত করতে এই কর্মসূচি দেওয়া হয়।
সোমবার পুলিশরে জলকামান নিক্ষেপের পর মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিবের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি দল বৈঠক করেন। সরকারের পক্ষ থেকে তাদের নিয়োগের ব্যবস্থা নিতে আদালতে আপিল করা হয়। কাউকে নিয়োগ থেকে বাদ দেওয়া হবে না বলে আশ্বস্ত করা হয়। কিন্তু উচ্চব আদালতের আদেশ প্রত্যাহার না পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষাণা দেওয়া হয় আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে।