
—ছবি লেখকের
মেহেক আরাশ আহমেদ কে কি বলবে কিছুই ভেবে পাচ্ছিলো না। তারপর মুখে বলল,ইটস ওকে।এখানে আপনার তো কোন দোষ নেই। এক্সিডেন্ট যে কোনো ভাবেই হতে পারে। আরাশ তাকে ধন্যবাদ জানায়। তাকে এখনি বের হতে হবে।ডি সি অফিসে জরুরী মিটিং আছে। মানি ব্যাগ থেকে একটা কার্ড বের করে মেহেক কে নিতে বলে।
আরও পড়ুন
মেহেক কিছুখন চুপ থেকে আরাশ এর দিকে তাকিয়ে কার্ড টা নিয়ে বালিশের পাশে রেখে দেয়। যাবার সময় অনুরোধ করে বলে যায় মেহেক এর বাবা মা আসলে যেন অবশ্যই তার সাথে কথা বলায়। মেহেক সম্মতি সুচক জবাব দেয়। আরাশ বিদায় জানিয়ে চলে যায়। মেহেক আরাশের চলে যাওয়ার তাকিয়ে থাকে। তার বুকের মধ্যে কেমন মোচর দিয়ে উঠে। এ কিসের অনুভূতি। মেহেক জানেনা।
মেহেক মানজারীন। সদ্য পাস করা ইন্টার্ন ডাক্তার। বাবা মায়ের আদর ভালবাসা দিয়ে গড়া এক পুতুল। যার মনটা এখনো সেই ছেলে বেলার পুতুল খেলা সময়ের মত নিষ্পাপ। ঝোপঝাড়, রাস্তার পাশে ফোটা ফুল দেখলে,প্রজাপতি দেখলে যার মন এখনো আনন্দে বিমোহিত হয়। ছোট বাচ্চা দেখলেই এখনো যার কোলে নিয়ে আদর করতে ইচ্ছে করে। বয়স্ক মানুষ দেখলে তাদের সাথে গল্প করে এখনো যে অপার্থীব আনন্দ পায়। কারো জন্য কিছু করতে পারলে এখনো যার রাতে সস্তির ঘুম আসে।
মেহেক এর মাথায় আর হাতে স্টিচ দেয়া জায়গায় ব্যথা করছে। নার্চ এসে কিছুখন আগেই ব্যথার ইঞ্জেকশন দিয়ে গিয়েছে। সে চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর চেস্টা করে।এর মাঝেই তার বাবা মা চলে আসে। মা রুমে ঢুকেই মাথায় ব্যান্ডেজ দেখে কান্না শুরু করে দেয়। মেহেক তাকে বলে এটা তেমন কিছুনা না। কয়েক দিন পরেই সেরে যাবে। মেহেক বাসার সবাই কেমন আছে জানতে চায়। বাবা মা মেয়ে মিলে গল্প আর খুনসুটি চলতে থাকে।
এরই মাঝে রাউন্ড দিতে রুমে স্যার ঢোকেন।কিছু কথাবার্তা বলে স্যার বলেন সে চাইলে এখন বাসায় যেতে পারে। মেহেক ও চলে যেতে চায়।হাসপাতাল থেকে ছুটির কাগজ নিয়ে বাবা মার সাথে করে মেহেক বাসায় চলে আসে। তার বাসা। নিজের মত করে যেটা সে সাজায় প্রতিদিন। মা বাসায় এসে ফ্রেশ হয়েই রান্না ঘরে চলে যায়। মেহেক তার রুমে এসে বিছানায় হেলান দিয়ে মোবাইল টা হাতে নেয়। হঠাৎ করেই সামনে ভেসে ওঠে একজোড়া মায়াবী চোখ।
সেই চোখ দুটো। কেন আবার? মেহেক আশ্চর্য হয়। মা রান্না ঘর থেকে তাকে জিজ্ঞেস করে সে কি খাবে? সে জানায় যেটা রান্না করবে সেটাই। মা রান্না করতে থাকে।বাবা পাশের রুমে ফোনে বন্ধুদের সাথে কথা বলছে। বিছানায় শুয়ে থাকতে থাকতেই মেহেক ঘুমিয়ে পড়ে। তাকে রাতে পড়তে বসতে হবে।
(চলবে....)
মুক্ত/আরআই