
নদী ভাঙ্গন
কয়েক দিন ধরেই ঝিনাই নদীর ঢেউ আছড়ে পড়ছিল তীরে। ঢেউয়ের আঘাতে ভেঙ্গেছে তীর। এরপর আঘাত হেনেছে ফতেপুর বাজারে। আঘাতে নিশ্চিহৃ হয়েছে গোবিন্দ পালের দোকানও। প্রলয়ঙ্করী স্রোতে চোখের সামনেই নদীতে বীলিন হলো দোকানঘর। পানির তোরে ভেসে গেল দোকানের মালামাল—অবকাঠামো।
গোবিন্দ পালের মতো আরো অনেকেই হারিয়েছেন দোকানঘর। পানিতে ভেসে গেছে জীবিকার শেষ সম্বল টুকুও। এইতো দেখতে দেখতেই মানচিত্র থেকে বিরান হলো ফতেপুর বাজার।
ফতেপুর বাজার টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় অবস্থিত। বানের পানির আগ্রাসনে ইতিমধ্যেই মির্জাপুরের সাথে বিচ্ছিন্ন হয়েছে ফতেপুরের যোগাযোগ।
ফতেপুর বাজারের সাথে বিলীন হয়েছে আরো ১৮টি বাড়ি। সব হাড়িয়ে গুমরে কাঁদছেন গোবিন্দ পালরা। ফতেপুরজুড়ে কেবলই সব হারানোদের বুকফাটা কান্নার আওয়াজ।
নদী ভাঙ্গনের মুখে আছে ফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয়, ফতেপুর ইউপি ভবন, আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়, দোতলা সরকারি রয়েল মাকের্ট বাজার, ফতেপুর উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র। এখনই ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা না নিলে এসব স্থাপনা মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে।
—স্থানীয় বাসিন্দা
ফতেপুর বাজারের মিষ্টি ব্যবসায়ী গোবিন্দ পাল মুক্ত প্রভাতকে জানালেন, চোখের সামনেই মূহুর্তেই দোকানঘরটি ভেসে যেতে দেখলেন। কিন্তু কিছু করার ছিলনা। ভাঙ্গনে সব হারিয়ে তিনি এখন বিলাপ করছেন।
ফতেপুরের সাথে কুরনি পাকা সড়কটির কমপক্ষে প্রায় ১ হাজার ফুট নদীর পেটে গেছে। এরফলে মির্জাপুরের সাথে বিচ্ছিন্ন হয়েছে ফতেপুরের যোগাযোগ।
গত ২০ জুন থেকে শুরু হয় ঝিনাই নদীর ভাঙ্গন। এখনো তা থামেনি। ১৪ দিনের অব্যহত ভাঙ্গনে ২০টি বাড়ি ও ১৮টি দোকান নদীর পেটে গেছে।
স্থানীয়রা জানালেন— নদী ভাঙ্গনের মুখে আছে ফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয়, ফতেপুর েইউপি ভবন, আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়, দোতলা সরকারি রয়েল মাকের্ট বাজার, ফতেপুর উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র। এখনই ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা না নিলে এসব স্থাপনা মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে।
এদিকে কুরনি-ফতেপুর পাকা সড়কের এক টাকার (হিলড়া) বাজারের কাছে অনেকাংশ ঝিনাই নদীর পেলে চলে গেছে। ফলে উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে উত্তরাংশের।
বানকাটা গ্রামের ওমর শরীফ মুক্ত প্রভাতকে জানান, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঝিনাই নদী থেকে ড্রেজার মেশিনে বালু উত্তোলন করেছেন। এতে করে নদীর পাড়ে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। একারণে বানকাটা ও ফতেপুরের পালপাড়া গ্রামের মানুষ ব্যপকভাবে ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তা ওই ভাঙ্গনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। ফতেপুর বাজারের পূর্ব পাশের ৫০ মিটার এলাকায় ভাঙ্গন রোধে জিও ব্যাগ ফেলার ব্যবস্থা করেছেন বলে জানিয়েছেন।
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাকিলা বিনতে মতিন মুক্ত প্রভাতকে বলেন, নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তুতের কাজ চলছে। তালিকা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।