-1688306066.jpg)
গুরুদাসপুরের চাঁচকৈড় বাজারে মরিচ বিক্রেতা- ছবি মুক্ত প্রভাত
গুরুদাসপুরে এখন কাঁচা মরিচের কেজি ৬০০ টাকা। এই দামই এযাবৎকালের সেরা। অথচ গত সপ্তাহে ৩০০ টাকা থেকে ৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। মাত্র তিনদিনের ব্যবধানে এই দাম কেজিতে দ্বিগুনে গিয়ে ঠেকেছে। শনিবার (১ জুলাই) গুরুদাসপুরের হাট-বাজার ঘুরে ৬০০ টাকা কেজি দরে কাঁচা মরিচ কেনা-বেচা করতে দেখা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, গত শনিবার (২৩ জুন) থেকে বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) পর্যন্ত ২৮০ টাকা থেকে উর্ধ্বমূখী হয়ে প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজিতে। যা গুরুদাসপুরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। কাঁচা মরিচের এমন লাগামহীন দামে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠেছে। মূলত সরবরাহ কম দেখানো এবং পরিবহন সংকটের দোহাই দিয়ে বেশি দামে কাঁচা মরিচ বিক্রি করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।
মহররম আলীসহ অন্তত পাঁচজন খুচরা ব্যবসায়ী জানান, আড়তদারদের কাছ থেকে তারা প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ মানভেদে কিনেছেন ৫০০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা পাইকারী দরে। পাইকারী কিনে তা বিক্রি করছেন ৫৮০ টাকা থেকে শুরু করে ৬০০ টাকা দরে।
গুরুদাসপুর কৃষি বিভাগ বলছে, গুরুদাসপুরে কাঁচা মরিচের যে পরিমাণ চাহিদা, তার তিনভাগ আমদানি করেন পাইকারী ব্যবসায়ীরা। বাকি একভাগ আসে কৃষকের কাছ থেকে।
চাঁচকৈড় বাজারে সব্জি বিক্রেতা মহরম আলী বলেন,ঈদে পরিবহন সংকট ও বৃষ্টির কারণে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কম। ফলে বাজারে অতিরিক্ত দাম। আমাদের কোন কারসাজি নেই। আমরা বেশিদামে কিনে সামান্য লাভে বিক্রি করি। দাম বাড়ায় ব্যাবসায়ীদের বিক্রি কমে গেছে ফলে আমরা ক্ষতির সম্মুখিত হচ্ছি। তবে সরবারহ বাড়লে আশা করছি ২-৪ দিনের মধ্যে বাজার আবার স্বাভাবিক হবে।
গুরুদাসপুর পৌরসদরের আনন্দ নগর মহল্লার সবজি চাষী দেলবর হোসেন ও গোলাম মোস্তফা জানান,বেশ কিছুদিন ধরে চলমান খড়তাপের কারনে মরিচগাছের ফুল ঝরে গেছে,গাছ মরে গেছে। এরইমধ্যে শুরু হয়েছে বর্ষা মৌসুম। রোদে পুড়ে অবশিষ্ট যে গাছ জীবিত ছিলো জমিতে বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতায় গাছগুলো পচে মারা গেছে। একারনে কাচা মরিচের দাম চড়া।
ক্রেতা রফিক,শাজাহান,খালেকসহ অন্তত ১০জন অভিযোগ করে বলেন,-‘পরিবহন ও বৃষ্টির দোহাই দিয়ে দাম বাড়ানো ব্যবসায়ীদের এক ধরনের কারসাজি। কাঁচা মরিচের এতো বেশি দাম কখনও কল্পনাও করতে পারেননি তারা। তাদের দাবি,১৫ দিন আগেও এই মরিচের কেজি ছিল মাত্র ৭০ থেকে ৮০ টাকা। সে মরিচ কিভাবে ৬০০ টাকা হয়। তারা দ্রুত বাজার নিয়ন্ত্রণের দাবী জানান।’
গুরুদাসপুর পৌর এলাকার বাসিন্দা আনিসুর রহমান বলেন,-‘১৬ হাজার টাকার সামান্য বেতনে চাকরি করি। যদি একটি পরিবারে মাসে কাঁচা বাজার করতেই ৫-৭ হাজার টাকা লাগে তবে অন্য জিনিসপত্র কীভাবে কিনবো ? তারপর আবার কাঁচা মরিচ নিয়ে লঙ্কাকান্ড শুরু হয়েছে। এমন চললে মরিচ দিয়ে রান্না করে খাওয়া বাদ দিতে হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশীদ বলেন,গুরুদাসপুরে যে পরিমান কাচা মরিচ উৎপাদন হয় তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। প্রতিবেশী উপজেলাগুলো থেকে কাচামরিচ সরবারহ করে স্থানীয় চাহিদা পুরণ করতে হয়। অতিরিক্ত খড়া ও বৃষ্টির কারণে মরিচের উৎপাদন কমেছে। এ ছাড়াও কোরবানির ঈদের কারণে পরিবহন সংকটে স্থানীয় বাজরে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কম। ফলে বাজারগুলোতে মরিচের দাম ঊর্ধ্বমুখী।