
—ছবি মুক্ত প্রভাত
ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) ১৪৪৭ উদযাপন উপলক্ষে বদলগাছী উপজেলাতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২হাজার বরাদ্দের টাকা নয় ছয়ের অভিযোগ।
অভিযোগ উঠেছে, উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) ১৪৪৭ উদযাপন উপলক্ষে ২হাজার টাকা বরাদ্দের পরেও কোন বিদ্যালয়ে কোন খরচ করেন নি, আবার কোনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নাম মাত্র খরচ করেছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে জরিত সকলের প্রতি কঠিন ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান অভিভাবক সহ সচেতন মহল।
জানা গেছে, গত ৩ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অর্থ রাজস্ব (অর্থ বিভাগের) উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত স্বারক নং- (৩৮.০১.০০০০.১৫২.০২০.৪৮.২০২০.২৭৭)তে ১২ রবিউল আওয়াল পবিত্র ইদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) ১৪৪৭ উদযাপন উপলক্ষে মাঠ পর্যায়ের দপ্তর সমূহের বরাদ্দ দেন।
পরিপত্রে শর্তবলী দেন যে এ অর্থ সরকারি বিধি মোতাবেক ব্যয় করতে হবে। এ অর্থ হতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহ এবং পিটিআই সংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয়সমূহে ১২ রবিউল আউয়াল পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) ১৪৪৭ উদযাপন ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে অর্থ ব্যয় করা যাবে না। যে কোন প্রকার অনিয়মিত বায়ের জন্য সংশ্লিষ্ট আয়ন-ব্যয়ন কর্মকর্তা ব্যক্তিগতভাবে দায়ী থাকবেন।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিতে দেখা যায়, গত ৬ই সেপ্টেম্বর ভান্ডারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা দুপুরে ১২ রবিউল আউয়াল পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন করে চলে যাবার সময় ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে কিকি করেছে, কোন খাবার(তবারক) তাদের দেওয়া হয়েছে কি জনতে চাইলে ঐ বিদ্যালয়ের কয়েক জন ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবক বলে যে, তাদেন কোন খাবার দেওয়া হয়নি।
এছাড়া ভিডিওতে ভান্ডারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক জানান যে শুধু ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে নবীর জীবনী নিয়ে আলোচনা করে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাদের কোন খাবার দেওয়া হয়নি।
তিনারা বলেন, গতবারেও বলেছিলো। হেডমাষ্টার খরচ করেছিলো কিন্তু তার বিল পায় নি। এই বারে শুনিচ্ছি ২হাজার টাকা দিবে, হেড মাষ্টার বললো গতবার খরচ করে টাকা পাই নাই, এই বারে খরচ করে যদি না পাই।টাকা আসলে খরচ করবোআর হেড মাষ্টার অসুস্থ তাই আসেন নি।
ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) পালনের ব্যাপারে সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহ কালে জানাযায়, উপজেলার বালুভরা ইউনিয়নের মির্জাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, আমাদের স্কুলে ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে মহানবীর জীবনী নিয়ে আলোচনা করে ৫শত টাকার মতো খাবারে খরচ করে।
এছাড়াও কোলা ইউনিয়নের কেশাইল সরকারি বিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায় ৩কেজি বালসা(চিনির মিষ্টি) খাবার দিয়েছে যার মূল্য ৫০০টাকার মতো এ ছাড়া আর কোন টাকা খরচ করে নি এবং ঐ দিন প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসেনি আর ভান্ডারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোন টাকা খরচ করে নি।
এ দিকে আধাইপুর ইউনিয়নের কার্তিকাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন উপলক্ষে মহানবীর জীবনী নিয়ে আলোচনা, খাবার, কুইজ প্রতিযোগিতা এবং পুরুষ্কার বিতরণ করেছে।
বরাদ্দের পরেও খরচ না করার ব্যপারে জানতে চাইলে মির্জাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন করেছি,আমাদের কাছে ছবি আছে।
আলোচিত ভান্ডারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাহমিনা খাতুন মোবাইলে বলেন, এটা আসলে হাম,নাথ পিস সবই করা হয়েছে। কিন্তু আপনার সাথে দেখা হয়ে কথা বলবো। আমি কিছুক্ষণের মধ্যে বদলগাছীতে গিয়ে আপনার সাথে দেখা করবো নি। খরচ আসলে করা হয়নি মানে আমরা তো টাকাটা হাতে পাইনি কোন কারনে মিস হয়ে গেছে। টাকাটা আসলে টাকাটা দিব।
সব রেডি করে রাকছি।
এ ব্যপারে কেশাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কল্পনা খানম বলেন, স্কুলে ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে হাম,নাত এবং নবীর জীবনী নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের জন্য তিন কেজি বালসা তবারক হিসেবে দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দের টাকা পেলে টাকা পেলে পুরস্কার কিনে দেয়া হবে।
ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন ও বরাদ্দকৃত অর্থের ব্যপারে জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা অফিসার আমিরুল ইসলাম জানান, না কোন ফ্রেন্ড নেই বরাদ্দ নেই। মন্ত্রণালয় থেকে যে চিঠি করছে সেটা কি আই ওয়াশ। তিনি বলেন,চিঠি দেখেন চিঠিতে কোন ফান্ড আছে কি? চিঠিতে কোন ফান্ড নেই। এবারে বরাদ্দের কথা বলে নাই।
ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপনে বরাদ্দের ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, বরাদ্দ আছে তা দেওয়া হবে।