
—ছবি মুক্ত প্রভাত
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে বাস্তবায়িত হয়েছে নজরকাড়া উন্নয়ন কর্মকাণ্ড। উপজেলা প্রশাসনের পরিকল্পনা ও তদারকিতে প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ১১৮টি প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে।
শিক্ষা, ক্রীড়া, কৃষি, অবকাঠামো ও সরকারি সেবা খাতের এই প্রকল্পগুলো ইতোমধ্যেই জনজীবনে এনে দিয়েছে দৃশ্যমান পরিবর্তন। সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার পেয়েছে সড়ক নির্মাণ ও সংস্কার। আগে যেখানে বর্ষাকালে গ্রামের কাঁচা রাস্তা ছিল জনদুর্ভোগের প্রধান কারণ, এখন সেখানে নির্মিত হয়েছে পাকা রাস্তা।
বিশেষ করে, দুর্গানগর ইউনিয়নের বাবলাপাড়া সুরুজ্জামানের বাড়ি থেকে গাড়লগাতি রহিমের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তাটি পাকাকরণ করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, আগে এই পথে চলাচল করতে হতো হাঁটু কাদা পেরিয়ে। বর্তমানে পাকা সড়ক হওয়ায় যাতায়াতে এসেছে স্বস্তি।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল করিম বলেন, এই রাস্তা আগে ছিল একেবারেই চলাচলের অনুপযুক্ত। বর্ষায় পানি জমে থাকত, বাচ্চাদের স্কুলেও পাঠাতে ভয় পেতাম। এখন অনেক আরামদায়ক যাতায়াত করা যায়।
শিক্ষা ও ক্রীড়া খাতে প্রাণচাঞ্চল্য
উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও এসেছে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। ৫টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বেঞ্চ বিতরণ করা হয়েছে। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও ক্লাবে মোট ৪০০টি ফুটবল বিতরণ করা হয়েছে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে খেলাধুলার আগ্রহ বেড়েছে, মাঠে ফিরেছে প্রাণ।
উধুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হারুন অর রশিদ বলেন,
আমাদের স্কুলেও ফুটবল এসেছে। শিক্ষার্থীরা খেলায় আগ্রহী হচ্ছে, শারীরিক ও মানসিক বিকাশে এটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
উপজেলা খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মিলন বলেন, উপজেলা প্রশাসন থেকে দেওয়া ফুটবলে খেলোয়াড়রা প্রতিদিন নিয়মিত অনুশীলন করছে। এর ফলে স্থানীয় ক্রীড়াঙ্গনে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে।
কৃষক মুজাহার হোসেন বলেন, আমার স্প্রে মেশিন ছিল না। এবছর আমি উপজেলা থেকে ১টি স্প্রে মেশিন পেয়েছি। স্প্রে মেশিন পেয়ে আমি খুব উপকৃত হয়েছি।
শিল্পী খাতুন নামের একজন দুস্থ মহিলার সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, উপজেলা থেকে একটি সেলাই মেশিন পেয়েছি। এখন আমি সেলাইয়ের কাজ করে অর্থ উপার্জন করে ছেলেদের লেখাপড়া করাতে পারছি।
সরকারি দপ্তরের আধুনিকায়ন
উন্নয়ন প্রকল্পের অংশ হিসেবে উপজেলার কয়েকটি পুরাতন ও জরাজীর্ণ সরকারি কার্যালয় সংস্কার করা হয়েছে। এতে সরকারি সেবাপ্রদান এখন আরও দ্রুত ও কার্যকরভাবে সম্পন্ন হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমী জানান, আমাদের অফিসটি দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় ছিল। সংস্কারের পর এখন নির্বিঘ্নে অফিসের কার্যক্রম চালানো যাচ্ছে। কৃষকদের সেবা দিতেও সুবিধা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত বলেন,
আমরা জনগণের চাহিদা বিবেচনায় প্রকল্প নির্বাচন করেছি এবং প্রতিটি প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করেছি। কোনো অনিয়ম ছাড়াই কাজগুলো সম্পন্ন হয়েছে। উল্লাপাড়ার মানুষ এখন উন্নয়নের সুফল পাচ্ছেন।