
—ছবি মুক্ত প্রভাত
গাইবান্ধার ফুলছড়িতে বাল্যবিবাহ বন্ধে পদক্ষেপ তরান্বিত করার লক্ষ্যে স্কুলপড়ুয়া কিশোর-কিশোরী ও অভিভাবকদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য ‘সম্ভাবনার উৎসব’ (ক্যারিয়ার ফেস্টিভ্যাল) অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর এবং জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ)-এর যৌথ উদ্যোগে, একশন এইড বাংলাদেশ এর কারিগরি সহায়তায় ও এসকেএস ফাউন্ডেশন দ্বারা বাস্তবায়নাধীন বাংলাদেশে বাল্যবিবাহ বন্ধে পদক্ষেপ ত্বরান্বিত করা (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় গত ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রি. তারিখে ফুলছড়ি উপজেলার বুড়াইল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গণে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ০৯:৩০ টা থেকে দুপুর ০১:০০ টা পর্যন্ত উৎসবটি চলে। অনুষ্ঠানে প্রায় ২৩০ জন শিক্ষার্থী (৬ষ্ঠ–১০ম শ্রেণি), শিক্ষক, অভিভাবক ও স্থানীয় প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের বাংলাদেশের ফার্স্ট সেক্রেটারি, হিউম্যানিটেরিয়ান অ্যান্ড জেন্ডার -ইয়ান সুইলেস, সিনিয়র ফিনান্সিয়াল এডভাইজার -বার্ট ইসিং, সিনিয়র পলিসি এডভাইজার-মাশফিকা জামান সাটিয়ার, ইউএনএফপিএ বাংলাদেশ চিফ, এডলোসেন্স এন্ড ইয়ুথ ইলিজা আজরেই,একশন এইড বাংলাদেশের সিনিয়র অফিসার এ.জেড.এম. মৌসুম ইসলাম,এসকেএস ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম খন্দকার জাহিদ সারোয়ার (সোহেল), এসকেএস-এর কো-অর্ডিনেটর (ফিল্ড অপারেশন) বাহরাম খান,ফুলছড়ি উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম, উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি অফিসার তাজমিরা আক্তার, উপজেলা মৎস্য অফিসার আঁখি সরকার, উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমিক সুপারভাইজার নূরে আলম সিদ্দিক, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর ডেন্টাল সার্জন ডা. রুবিনা আফরোজ,এ্যাপ লইয়ার সানজিদা আক্তার, নারী উদ্যোক্তা তাসলিমা আক্তার, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মিফতাহুল জান্নাত, গাইবান্ধা জেলা নারী ফুটবল দলের সদস্য সুবর্ণা আক্তার প্রমুখ।
আলোচনায় বক্তারা বাল্যবিবাহের ক্ষতিকর দিক এবং শিক্ষিত ও দক্ষ প্রজন্ম গঠনের জন্য দীর্ঘমেয়াদি শিক্ষা ও ক্যারিয়ার পরিকল্পনার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
উৎসবে ১০টি বিষয়ভিত্তিক স্টল স্থাপন করা হয়, যেখানে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা, শিক্ষা, কৃষি, মৎস্য ও পশুপালন, ব্যবসা ও স্বাধীন কর্মসংস্থান (ফ্রিল্যান্সিং), আইন ও বিচার, ক্রীড়া, ব্যাংক ও বীমা, সাংবাদিকতা ও কন্টেন্ট ক্রিয়েশন খাতের সফল নারী পেশাজীবীরা অংশগ্রহণকারীদের সাথে সরাসরি মতবিনিময় করেন। শিক্ষার্থীরা স্টল ঘুরে বিভিন্ন পেশা সম্পর্কে বাস্তব তথ্য, কর্মজীবনের নির্দেশনা এবং প্রেরণাদায়ক গল্প শুনে অনুপ্রাণিত হয়।
বিশেষ করে মেয়েরা ডাক্তার, শিক্ষকদের সাথে কথা বলে নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুনভাবে ভাবার সুযোগ পায়। উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ছিল ড্রিম ওয়াল ও কুইজ প্রতিযোগিতা। ড্রিম ওয়ালে শিক্ষার্থীরা তাদের ভবিষ্যৎ স্বপ্ন ও পেশাগত আকাঙ্ক্ষা লিখে। অপরদিকে কুইজ প্রতিযোগিতায় কিশোর-কিশোরীরা জেন্ডার, এসআরএইচআর (যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার) এবং জিবিভি (নারীর প্রতি সহিংসতা) সম্পর্কিত বিষয়ে নতুন ধারণা লাভ করে। কুইজের মাধ্যমে তারা নিজেদের জ্ঞান যাচাই করার পাশাপাশি নতুন কিছু শেখে এবং প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের মাঝে আকর্ষণীয় উপহার প্রদান করা হয়।