
চিলমারী (কুড়িগ্রাম): চরাঞ্চলের কোটি টাকার বিদ্যালয় ভবনটি ব্রহ্মপুত্রের ভাঙ্গণে বিলীন হয়ে গেছে।-ছবি মুক্ত প্রভাত
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে বন্যায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে নয়ারহাট চরাঞ্চলের পৌঁনে এক কোটি টাকার বিদ্যালয় ভবন ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গণে বিলীন হয়ে গেছে।
জানা গেছে, চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ খাউরিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাকা ভবনের একাংশ ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে। মাত্র চার বছর আগে বিদ্যালয় ভবনটি নির্মান করা হয়েছিল।
রবিবার ভোরে ভবনটির একাংশ ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গনে ধ্বসে পড়ে। ভাঙনের তীব্রতায় পুরো ভবনটি যেকোনও সময় নদের গর্ভে চলে যেতে পারে বলে ধারনা করছেন স্থানীয়রা।
ভাঙনের কবল থেকে ভবনটি রক্ষায় বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ২ বছর ধরে চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা হয়নি। কর্তৃপক্ষ বছরের শুরুতে ভবন থেকে পাঠদানের কার্যক্রম সরিয়ে নিয়ে অন্যত্র পাঠদান কার্যক্রম চালাচ্ছে।
২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর চারতলা ভিত্তি বিশিষ্ট একতলা এই ভবনটি নির্মাণ করে। প্রায় ৭৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভবনটি ২০২০ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
চিলমারী (কুড়িগ্রাম): চরাঞ্চলের কোটি টাকার বিদ্যালয় ভবনটি ব্রহ্মপুত্রের ভাঙ্গণে বিলীন হয়ে গেছে।-ছবি মুক্ত প্রভাত
প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ভাঙনের তীব্রতায় আগের স্থান থেকে সরিয়ে নতুন স্থানে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চলছিল। পাকা ভবনটিতে কিছু আসবাবপত্র রাখা ছিল।
গত বছর ভাঙনের পর নদী অনেকটা দূরে সরে যাওয়ায় আমরা ভেবেছিলাম ভবনটি হয়তো রক্ষা হবে। কিন্তু দুইদিন থেকে পানি বেড়ে যাওয়ায় আবারও ভাঙন শুরু হয়েছে। রবিবার ভোরে ভবনটির একাংশ ব্রহ্মপুত্র নদে ধ্বসে পড়ে। বাকিটাও হয়তো চলে যাবে। কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
কলেজ অধ্যক্ষ জহিরুল ইসলাম মন্ডল বলেন, এই প্রতিষ্ঠানটি নয়ারহাট ইউনিয়নের একমাত্র মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। ভবনটি পাওয়ার পর আমরা অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছিলাম।
চিলমারী (কুড়িগ্রাম): চরাঞ্চলের কোটি টাকার বিদ্যালয় ভবনটি ব্রহ্মপুত্রের ভাঙ্গণে বিলীন হয়ে গেছে।-ছবি মুক্ত প্রভাত
কিন্তু ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে সে আনন্দ মাত্র কয়েক বছরেই বেদনায় পরিণত হলো। শেষ রক্ষা হলো না। এখন নতুন স্থানে শিক্ষা কার্যক্রম চললেও শ্রেণিকক্ষ সংকট রয়েছে। নতুন ভবন পেলে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে সুবিধা হবে।
নয়ারহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘পাকা ভবনটি ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে ধ্বসে পড়েছে। এর দরজা জানালা ও অন্যান্য আসবাবপত্র সরিয়ে নতুন স্থানে নেওয়া হয়েছে।’
এদিকে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে নয়ারহাট, চিলমারী ও অষ্টমীরচর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ জানান, কোন ঘর বাড়ীতে পানি না উঠলেও নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। তবে এই মুহুর্তে মাঠে তেমন কোন ফসল নেই।
আরো পড়ুন