
—ছবি মুক্ত প্রভাত
রাজশাহীতে সক্রিয় একটি ভিসা প্রতারণা চক্র ৮ হাজার টাকা করে প্রতিটি আবেদনকারীর কাছ থেকে আদায় করে সরকারি প্রক্রিয়া এড়িয়ে ভারতীয় ভিসা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, আশিক মাহমুদ নামে এক ব্যক্তি “বাঘা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস” নামের ব্যানারে এই অবৈধ কার্যক্রম চালাচ্ছেন।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীতে অবস্থিত ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন কেবলমাত্র প্রকৃত ও জরুরি প্রয়োজনের ভিত্তিতে ভিসা প্রদান করে থাকে। কিন্তু অভিযুক্ত চক্রটি ‘গ্যারান্টিযুক্ত ফিঙ্গারপ্রিন্ট অ্যাপয়েন্টমেন্ট’ এবং সম্পূর্ণ ভিসা প্রসেসিংয়ের আশ্বাস দিয়ে প্রতিজনের কাছ থেকে ৮ হাজার টাকা করে নিচ্ছে।
সরাসরি ফোনালাপে আশিক মাহমুদ নাকি স্বীকার করেছেন, নির্ধারিত অর্থ পরিশোধ করলে ভারতীয় ভিসা পাওয়া যাবে—যা ভারতীয় কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত সরকারি ফি’র বহুগুণ বেশি।
আশিক মাহমুদ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ পরিচালনা করছেন, যেখানে ১১ হাজারেরও বেশি সদস্য রয়েছে। সেখানে তিনি দাবি করছেন, তার মাধ্যমে ভিসা প্রত্যাখ্যানের হার অত্যন্ত কম এবং মেডিকেল ভিসার জন্য প্রেসক্রিপশন ও মেডিকেল রিপোর্ট জমা দিতে উৎসাহিত করছেন।
তার এমন প্রকাশ্য ভিসা বিজ্ঞাপন সহকারী হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের বিস্মিত করেছে, যারা ব্যক্তিগতভাবে ভিসা প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের বিষয়ে কঠোর নীতিমালা অনুসরণ করেন।
ভারতীয় জাতীয় পতাকার অপব্যবহারউক্ত ফেসবুক গ্রুপের ব্যানারে ভারতীয় জাতীয় পতাকা ও বাংলাদেশের পতাকা পাশাপাশি প্রদর্শিত হয়েছে। আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, বাণিজ্যিক প্রচারে জাতীয় পতাকা ব্যবহার করা ভারতের ঊসনষবসং ধহফ ঘধসবং (চৎবাবহঃরড়হ ড়ভ ওসঢ়ৎড়ঢ়বৎ টংব) অপঃ, ১৯৫০ এবং বাংলাদেশের আইন উভয়েরই লঙ্ঘন হতে পারে।
বাংলাদেশেও অনুমোদন ছাড়া জাতীয় প্রতীক বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কর্তৃপক্ষের সতর্কবাণী—এ ধরনের কাজ দ্বিপাক্ষিক আস্থার ক্ষতি করে এবং সংশ্লিষ্টদের আইনি জবাবদিহিতার মুখোমুখি হতে হতে পারে।
জনসচেতনতার আহ্বান:ভারতের হাইকমিশন বাংলাদেশি নাগরিকদের সতর্ক করে দিয়েছে— অনুমোদনহীন এজেন্ট এড়িয়ে কেবল অনুমোদিত সরকারি চ্যানেলের মাধ্যমে ভিসা আবেদন করার জন্য।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত ভিসা দেওয়ার নামে অতিরিক্ত অর্থ দাবি করে এমন প্রতিশ্রুতি থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, কারণ এসব প্রতারণামূলক চক্র আবেদনকারীদের অর্থ এবং সুযোগ— উভয়ই নষ্ট করে দিতে পারে।আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইতোমধ্যে বিষয়টি তদন্ত শুরু করেছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভিসা প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা রক্ষা করা কেবল কূটনৈতিক সম্পর্ক নয়, সাধারণ মানুষের আস্থার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।