
—ছবি মুক্ত প্রভাত
বর্ষা মৌসুম এলেই সাপের উপদ্রব বাড়ে এই এই ভয়াবহ বাস্তবতা দেখা দিয়েছে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গোবিপ্রবি)। ক্যাম্পাসে একের পর এক বিষধর সাপের দেখা মিলেছে।
এতে চরম আতঙ্গকে দিন কাটাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। মসজিদ, শিক্ষকদের কোয়ার্টার থেকে শুরু করে আবাসিক হল পর্যন্ত সাপের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
যা শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অবস্থারত সকলের নিরাপত্তার হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসনের উদ্যোগ আশ্বাসের গণ্ডি পেরোতে না পারায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাব ও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় এ সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে বলে মন্তব্য করেন সংশ্লিষ্টরা।
গত ১৭ই জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের টিনসেডে একটি বিষধর গোখরা সাপ দেখা যায়। উপস্থিত কয়েকজন শিক্ষার্থী সাপটিকে মেরে ফেলে। জানা যায় এর আগেও মসজিদের আশেপাশে বিষধর সাপ দেখা গেছে।
এর কয়েকদিন আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কোয়ার্টারের সামনেও বড় একটি সাপ মারা হয়।নিয়মিত বিরতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় সাপের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভয় ও উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে তুলছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ে একের পর এক সাপ দেখা গেলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার না করাই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় জঙ্গল হয়ে গেছে ফলে সাপের বসবাসের অন্যতম একটি বাসস্থান হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জঙ্গল পরিষ্কার এবং প্রয়োজনীয় জীবানুনাশক ও কীটনাশক ছিটানোর উদ্যোগ জরুরী। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় সাপ দেখা দেওয়ায় মেডিকেলে এন্টিভনম রাখার দাবিও জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা ।
অ্যাকাউন্টিং এ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে বন জঙ্গল গড়ে উঠেছে। এগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা দরকার। এই জঙ্গলগুলো এখন সাপের বাসস্থানে পরিণত হয়েছে। আমাদের হলের পাশেও ঘন জঙ্গল রয়েছে। এ
মনকি একটি হলের নিচ তলার একটি কক্ষে সাপ ঢুকে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত সাপ দমনের পদক্ষেপ এবং মেডিকেল সেন্টারে এন্টিভেনম সংরক্ষণ করা।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের চিকিৎসক ডা. লিখন চন্দ্র বালা বলেন, ‘মেডিকেলে কোন প্রকার এন্টিভেনম নাই প্রশাসন এ বিষয়ে যোগাযোগ করছিল। তখন আমি জানিয়েছিলাম এন্টিভেনম বিশ্ববিদ্যালয়ে রাখা সম্ভব নয়। ’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসার নিজামুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমরা নিয়মিতভাবে ক্যাম্পাস পরিষ্কার করি। মসজিদ এলাকা ও হলের চারপাশে বিগত ৪-৫ দিন আগেও মেশিন দিয়ে পরিষ্কার করা হয়েছে। বর্তমানে আগের মতো বড় জঙ্গল নেই। আষাঢ় শ্রাবণে যেসব কাশবন হতো, এবার তা নেই বললেই চলে। আমরা নিয়মিত চারটি মেশিন দিয়ে পরিচ্ছন্নতার কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। ’
তিনি আরও বলেন, ‘সাপ কোথায় থাকে, সেটা তো আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। তারপরও ভাবছি, অফিস খুললে বিষয়টি আবার দেখা হবে।’