
—ছবি মুক্ত প্রভাত
আর্থিক দৈণ্যতায় ২০০২ সালে ‘চন্দ্রপুর গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্ণামেন্টে’র ফাইনাল ম্যাচটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর কেটে গেছে দীর্ঘ ২২টি বছর। পরবর্তীতে আয়োজক কমিটিতে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরলেও এই দীর্ঘ সময়ে রাজনৈতিক আগ্রাসনের কারণে খেলাটি আর চালু করা যায়নি।
তবে দুই দশক পর ‘চন্দ্রপুর ফুটবল একাডেমী’র উদ্যোগে ফাইনাল ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছে শুক্রবার বিকেল তিনটার দিকে গুরুদাসপুরের নাজিরপুর ইউনিয়নের চন্দ্রপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে। খেলাটিতে অংশ নেয় সিংড়ার লাড়ুয়া ফুটবল দল ও গুরুদাসপুরের চকআদালত খাঁ ফুটবল দল। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের এই খেলায় লাড়ুয়া ফুটবল দলকে ২-১ গোলে হারিয়ে ‘চন্দ্রপুর গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্ণামেন্টে’র শিরোপা জিতে নেয় চকআদালত খাঁ ফুটবল দল।
‘চন্দ্রপুর ফুটবল একাডেমী’র ম্যানেজার মুস্তাফিজুর রহমান মুক্তা বলেন, আর্থিক দৈন্যতা থাকা সত্তেও ‘চন্দ্রপুর ফুটবল একাডেমী’র তত্বাবধায়নে ২০০২ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে ‘চন্দ্রপুর গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্ণামেন্ট’ নামে খেলাটির আয়োজন করা হয়েছিল। সেসময় নাটোর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁও, রাজশাহী ও বগুড়ার ১৪টি দল টুর্ণামেন্টে অংশ নেয়। স্থানীয় ও জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়ারদের অংশ গ্রহণে টুর্ণামেন্টটি জাকজমকপূর্ণ হয়ে ওঠে। চন্দ্রপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে প্রথম, দ্বিতীয় রাউন্ড ও দুটি সেমিফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। অপ্রতুল্য যোগাযোগ ব্যবস্থাতেও খেলা উপভোগ করতে আসেন আশপাশের বিভিন্ন জেলা উপজেলার হাজারও দর্শক।
তিনি বলেন, দুটি সেমিফাইনাল ম্যাচে জয় লাভ করে ফাইনালে ওঠে লাড়ুয়া ফুটবল দল ও চকআদালত খাঁ ফুটবল দল। কিন্তু আয়োজক কমিটির মধ্যে দ্বন্দ্ব ও আর্থিক দৈন্যতায় ফাইনাল খেলাটি বন্ধ থাকে। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর কয়েকবার টুর্ণামেন্টটির ফাইনাল আয়োজনের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। সবশেষ ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগের পতন ঘটলে ফাইনাল ম্যাচটি আয়োজনের উদ্যোগ নেন তারা। রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রেখে ফাইনাল ম্যাচটি অনুষ্ঠিত’র মধ্য দিয়ে ‘চন্দ্রপুর গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্ণামেন্টে’র সফল সমাপ্তি করতে পেরে তারা আনন্দিত।
খেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গুরুদাসপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আসাদুল ইসলাম। খেলাটি দেখতে মাঠের চারপাশে ভিড় জমিয়েছিলেন শত শত দর্শক। এর আগে খেলাটি উপভোগের জন্য উপজেলা ব্যাপী মাইকিংও করা হয়। খেলা শেষে বিজয়ী ও রানার্সআপ দলের অধিনায়কের হাতে শিরোপা তুলে দেন প্রধান অতিথি।
নাজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আয়ুব আলী বলেন, দীর্ঘ দুই দশকের বেশি সময় পর ফাইনাল খেলাটি আয়োজন করতে পেরে ফুটবলের ওপর তাদের আগ্রহ আরো বেড়েছে। উৎসব মুখর পরিবেশে গ্রামের মানুষ খেলাটি উপভোগ করেছেন।
গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা ফাহমিদা আফরোজ বলেন, দীর্ঘ ২২ বছর পর একটি টুর্ণামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়াটা ফুটবলের প্রতি সীমাহীন ভালোবাসার প্রতিফলন। ফুটবল খেলার প্রতি এই অঞ্চলের মানুষের আগ্রহ দেখে তিনি মুগ্ধ। আগামীতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আন্তঃজেলা ফুটবল আয়োজনের ব্যবস্থা করবেন তারা।