
—ছবি মুক্ত প্রভাত
জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ অভিঘাতে যখন উপকূল এলাকা বারবার বিপর্যস্ত, তখন সেই সংকটে এক আশার আলো নিয়ে এগিয়ে এসেছেন স্থানীয় মানুষ।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও নদীভাঙন থেকে উপকূলীয় বাঁধ রক্ষায় শ্যামনগরের মানুষ হাতে নিয়েছেন সবুজ বর্ম তৈরির মহৎ উদ্যোগ-চরবনায়ন।
২৬ জুন বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় সুন্দরবনের কোলঘেঁষা মালঞ্চ নদীর চরজমিতে ১ একর ৪৪ শতক এলাকাজুড়ে অনুষ্ঠিত হলো এক অনন্য বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি। যৌথভাবে এই উদ্যোগ গ্রহণ করে স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা লিডার্স এবং ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (টখঅই)।
উপকূলের পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্র উপযোগী নানাবিধ চারা রোপণের মাধ্যমে এ কর্মসূচির মূল লক্ষ্য ছিল—নদীভাঙন রোধ, জীব বৈচিত্র্য রক্ষা এবং উপকূলীয় বাঁধ কে দীর্ঘস্থায়ী সুরক্ষা প্রদান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন লিডার্স-এর নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মন্ডল। তিনি বলেন, এই বৃক্ষরোপণ শুধু প্রকৃতিকে নয়, এ অঞ্চলের মানুষের জীবন ও জীবিকার সুরক্ষায় অবদান রাখবে। আমাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসা জরুরি।
চরবনায়নের এই মহৎ কার্যক্রমে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি জিয়াউর রহমান, পরিবেশবাদী সংগঠনের প্রতিনিধি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সুন্দরবন প্রেসক্লাবের সাংবাদিকগণ এবং স্বেচ্ছাসেবীরা।
স্থানীয় নারী পঞ্চি রানী বলেন, প্রতিদিনই আমরা ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের আতঙ্কে কাটাই। চরবনায়ন যত বাড়বে, ততই উপকূলের বাঁধ মজবুত হবে। এই গাছ আমাদের শুধু অক্সিজেনই দেবে না, দেবে আশ্রয় আর আশা।
উল্লেখ্য, লিডার্স দীর্ঘদিন ধরে উপকূলীয় অঞ্চলের জলবায়ু অভিযোজন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ সংরক্ষণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
এই উদ্যোগ শুধু প্রকৃতির সঙ্গে সহাবস্থান নয়, বরং একটি দূরদর্শী চিন্তার প্রতিফলন—যেখানে মানুষ, প্রকৃতি ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এক সুতোয় গাঁথা। এ যেন সবুজে মোড়ানো প্রতিরোধের প্রতিজ্ঞা, যেখানে জীবনের কোলাহল রক্ষা পায় বৃক্ষের নিঃশব্দ ছায়ায়।