
—ছবি মুক্ত প্রভাত
রাজশাহীতে নগর বিএনপির একাংশ নেতা-কর্মী আওয়ামী দলের সহযোগী হিসেবে মৈত্রী গড়ে তোলা কিছু সিনিয়র নেতার বিরুদ্ধে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
তারা দাবি করেছেন, বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদ অতিক্রান্ত হওয়ায় রাজশাহী মহানগর, থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের সকল কমিটি নতুন ভাবে পুনর্গঠন করতে হবে।
সোমবার বেলা ১১-টায় সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “গত ১৭ বছরে কিছু নেতা সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনায় দলকে ত্যাগ করেছেন, কিন্তু কর্মীদের বিপদে পাশে দাঁড়াননি। ৫ আগস্টের আন্দোলনের পর তারা আবারো সক্রিয় হয়ে দলীয় নেতৃত্বে প্রভাব বিস্তার করতে চায়।
বক্তারা আরও অভিযোগ করেন, বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্যদের মধ্যে অনেকে মামলা-হামলার শিকার না হয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করেছেন এবং চাপের সময় দল ত্যাগ করেছেন। তারাই এখন নেতৃত্ব দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
তারা বলেন, “আগামী কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে পরীক্ষিত, ত্যাগী এবং নির্ভীক কর্মীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী নগরের বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান পিন্টু, মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইট, মহানগর মহিলা দলের সভাপতি এ্যাডভোকেট রওশন আরা পপি, মহানগন যুবদলের সাবেক আহবায়ক আব্দুল কাদের বকুল, মহানগর যুবদলের সাবেক সহসভাপতি মাইনুল ইসলাম হারু, রাজশাহী বিভাগীয় মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক রোকসানা বেগম টুকটুকি, ২৫ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি আখতারুজ্জামান টেনি, মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক রুহুল আমিন বাবলু প্রমূখ।
নগর যুবদলের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমরা যদি মনে করি, ঢাকা থেকে কোনো নেতা রাজশাহীতে আসবে না। কারও বাবার ক্ষমতা নেই যে রাজশাহীতে আসে। আমরা যদি মনে করি, এই অযোগ্য কমিটি রাজশাহীতে কোনো কর্মসূচি পালন করবে না, অবশ্যই তাদের ক্ষমতা নেই করার। আমরা এত দিন কেন্দ্রের দিকে, পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দিকে তাকিয়ে আছি। এখনো তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা আছি। যারা ১৯৯৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে খালেদা জিয়াকে কালো পতাকা প্রদর্শন করেছিল, আজ তারা বিএনপির নেতা।’
আবুল কালাম আজাদ আরও বলেন, ‘যাদের কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে, তারা রাজশাহীতে বিএনপির নেতৃত্ব দিতে পারবে না। যারা দিনের বেলায় বিএনপি, রাতের বেলাতে আওয়ামী লীগ করে, তারা বিএনপির নেতৃত্ব দিতে পারে না। এদের যোগ্যতা নেই।আজ এখান থেকে বলছি, অবিলম্বে কেন্দ্র থেকে এই আওয়ামী লীগের দোসরদের কমিটি বাদ দিতে হবে। ত্যাগী নেতাদের দিয়ে কমিটি গঠন করতে হবে।’
নগরের বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান বলেন, ‘আজ এখানে রাজশাহী নগরের সব ত্যাগী নেতা-কর্মী অবস্থান করছেন। সাড়ে তিন বছর হয়ে গেল, একটি আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হয়েছে। কতিপয় কেন্দ্রের নেতা প্রভাবিত হয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ভুল বুঝিয়ে কমিটি করা হয়েছে। সেই কমিটি আহ্বায়ক, সদস্যসচিব, উনারা বিতর্কিত। কারণ,বিগত ১৭ বছরের আন্দোলনে আমি ব্যক্তিগতভাবে কোথাও কোনো আন্দোলন- সংগ্রামে দেখিনি। তাঁরা ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে ৩০টি ওয়ার্ডের বিভিন্নভাবে থানা ও ওয়ার্ড কমিটি দেওয়া শুরু করেছেন। ওই কমিটিগুলোতে আওয়ামী লীগের দোসরদের রাখা হয়েছে। রাজশাহীর আপামর জনতা জানে বিএনপি মানে মিজানুর রহমান মিনু, শফিকুল হক মিলন, মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল।’
এর আগে ১১ মে নগর বিএনপির একাংশ একই দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন। ওই সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়,বর্তমান কমিটির কিছু নেতা ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে দলকে দুর্বল করে তুলছেন। সেই সঙ্গে চাঁদাবাজি, মাদক কারবার ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে যুক্তদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না।