
সফল বাগান মালিক- মোঃ নাইম ইসলাম
“নাজিরপুর লিচু উৎপাদনের সেরা। মওসুমের শুরুতেই এখানে যেমন লিচুর উৎপাদন হয় ব্যাপক তেমনি এখানে জমে উঠে লিচুর ক্রয়-বিক্রয়ের আড়ৎ। বিভিন্ন আড়ৎ ঘুরে দেখা গেল এই অঞ্চলের লিচুই সেরা কথাটি এখন আর কেবল গর্বের ভাষা নয়, এটি বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি।
নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার এই ইউনিয়ন আজ পরিচিত হচ্ছে তার সুস্বাদু, রসালো লিচুর জন্য। যেভাবে এই অঞ্চলে লিচু চাষ ছড়িয়ে পড়েছে, তা দেখে অনেকেই বলছেন—নাজিরপুর এখন দেশের অন্যতম লিচু উৎপাদনকারী অঞ্চল হয়ে উঠছে।
এলাকার উর্বর মাটি, পর্যাপ্ত রোদ ও সময়মতো বৃষ্টিপাত—সব মিলিয়ে নাজিরপুর যেন লিচু চাষের জন্য প্রকৃতির আশীর্বাদ। এখানকার চাষিরা জানালেন, তারা এখন ধানের বদলে বেশি লাভজনক হওয়ায় লিচুর দিকে ঝুঁকছেন। ‘বোম্বাই’, ‘চায়না থ্রি’ ও ‘মাদ্রাজি’ জাতের লিচু এই অঞ্চলে ভালো ফলন দিচ্ছে।
স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, এক বিঘা জমিতে লিচু বিক্রি করে গড়ে ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করা যায়। ফলে তুলনামূলকভাবে কম খরচে অধিক লাভে চাষিরা দিন দিন লিচুর দিকেই ঝুঁকছেন। এখানকার শত শত বিঘা জমিতে চাষ হওয়া লিচু থেকে প্রতিবছর কোটি টাকারও বেশি লেনদেন হচ্ছে, যা এই অঞ্চলের অর্থনীতিকে প্রাণ দিচ্ছে।
তবে সব ভালো দিকের মাঝেও কিছু সমস্যা রয়ে গেছে। জলবায়ুর অনিশ্চয়তা, সঠিক সংরক্ষণ পদ্ধতির অভাব এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য লিচু চাষিদের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। তবুও তারা আশাবাদী—উপযুক্ত সহায়তা পেলে তারা নাজিরপুরকে “লিচুর রাজধানী” হিসেবে গড়ে তুলতে পারবেন।
নাজিরপুরের লিচু শুধু ফল নয়, এটি এখানকার মাটি, ঘাম আর স্বপ্নের মিশ্রণে গড়ে ওঠা এক অনন্য পরিচয়। আর তাই তো এলাকাবাসীর গর্বে উচ্চারিত হয়—"নাজিরপুরে এমনিতেই লিচুর রাজা!"
লেখকঃ মোঃ মাইনুল হাসান সীমান্ত, গুরুদাসপুর থেকে-