
উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) . মৃতু্্যর খবরে স্বজনদের আহাজারি। —ছবি মুক্ত প্রভাত
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বহুল আলোচিত পূর্ণিমা ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন কারাদনন্ডপ্রাপ্ত আসামি ইয়াসিন আলী (৬৪) মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ইয়াসিন আলী উল্লাপাড়া উপজেলার পূর্বদেলুয়া গ্রামের নিদান আলীর ছেলে। তিনি ছিলেন মামলার ৬ নম্বর আসামি। ২০০১ সালের ৮ অক্টোবর উল্লাপাড়ায় হিন্দু কিশোরী পূর্ণিমা রানী শীল ধর্ষণের শিকার হন।
এ ঘটনায় ধর্ষিতার বাবা অনিল চন্দ্র শীল ১০ অক্টোবর উল্লাপাড়া থানায় ১৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়া শেষে ২০১০ সালে সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করা হয়, আর বাকি ৬ জন খালাস পান। সাজাপ্রাপ্ত ১১ আসামির মধ্যে ১০ জন গ্রেপ্তার হলেও একজন এখনও পলাতক রয়েছেন।
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোঃ শাহ আলম খান জানান, কথিত ইয়াসিন আলী কঠিন টিবি রোগে ভুগছিলেন। গত ১১ মে তাকে সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। রাজশাহীতে প্রথমে ইয়াসিনকে কেন্দ্রীয় কারাগার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ১ সপ্তাহ আগে তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। দুদিন আগেও এই হাসপাতাল থেকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হলে আবারও রাজশাহী কারাগারে আনা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে ইয়াসিন আলীর অবস্থা আবারও খারাপ হয়ে পড়লে তাকে দ্বিতীয়বার রাজশাহী মেডিক্যালে নেওয়া হয়। আর এই হাসপতালেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ইয়াসিন আলীর মরদেহ তার পরিবারকে হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া চলছে।
ইয়াসিন আলীর ছেলে ইদ্রিস আলী জানান, তার বাবা বেশ কিছুদিন ধরে সিরাজগঞ্জ কারাগারে টিবি রোগে আক্রান্ত হয়ে ভুগছিলেন। তার প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট ছিল। সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
তিনি অভিযোগ করেন, ২০০১ সালে তার বাবা বিএনপি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় সে সময়ের আওয়ামীলীগ নেতারা তাকে পূর্ণিমা ধর্ষণ মামলায় জড়িয়ে দেন। প্রকৃতপক্ষে তার বাবা একেবারেই নিরাপরাধ ছিলেন বলে দাবি করেন তিনি