
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় ক্যাম্পাসে উপস্থিত হয়ে আত্মপক্ষের সমর্থন করে বক্তব্য দিয়েছেন সাময়িক বহিষ্কৃত পাঁচ ছাত্রী।
সোমবার (১২ জুন) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কার্যালয়ে ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির কাছে আত্মপক্ষের সমর্থনে সাক্ষ্য দেন তারা। একইসঙ্গে ভুক্তভোগী ফুলপরীরও সাক্ষাৎকার নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এ সময় ভিসি অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম, প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ ও ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত বহিষ্কৃত পাঁচ ছাত্রীকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, লিখিত বক্তব্য ছাড়াও অন্য কোনো বক্তব্য আছে কিনা তা জানতে আজ ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তদের আত্মপক্ষের সমর্থনে সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে।
অভিযুক্তদের মধ্যে দু’জন (মোয়াবিয়া জাহান ও হালিমা খাতুন ঊর্মি) নতুন বক্তব্য সংযোজন করেছেন। ঈদের ছুটি শেষে তাদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে। হাইকোর্ট আগামী ১৯ জুলাইয়ের মধ্যে সব কার্যক্রম শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি দুই দফায় দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে নবীন ছাত্রী ফুলপরীকে (ফিন্যান্স বিভাগ-২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ) রাতভর র্যাগিং, শারীরিকভাবে নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করার অভিযোগ উঠে ছাত্রলীগ নেত্রী অন্তরাসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। পরে ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১৫ ফেব্রুয়ারি পৃথকভাবে তিনটি তদন্ত কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, সংশ্লিষ্ট হল কর্তৃপক্ষ ও শাখা ছাত্রলীগ।
এছাড়া হাইকোর্টের নির্দেশেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন। তদন্তে নির্যাতনের সত্যতা পাওয়ায় ১লা মার্চ ওই পাঁচ ছাত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী বহিষ্কার ও শিক্ষা কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেয়ার নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট।
পরে অভিযুক্ত পাঁচ ছাত্রীকে হল ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়। একইসঙ্গে তাদের বিষয়ে কেন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে না, সে বিষয়ে ১৫ মার্চের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় কর্তৃপক্ষ। তবে নোটিশ ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় রেজিস্ট্রারকে ভৎর্সনা করে হাইকোর্ট। পরে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের আবার শোকজ নোটিশ দেয়া হয়।
নির্যাতনের ঘটনায় বহিষ্কৃতরা হলেন শাখা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি ও পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মিম, চারুকলা বিভাগের হালিমা আক্তার ঊর্মি ও ফিন্যান্স বিভাগের মুয়াবিয়া জাহান। অন্তরা বাদে সবাই ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী।