
লোডশেডিং
এমনিতেই প্রচন্ড গরম ও তাপদাহ তার উপর বিদ্যুতের লাগাতার লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উল্লাপাড়ার জনজীবন। বিশেষ করে বিদ্যুৎ অভাবে গ্রামের মানুষগুলো একবারেই অতিষ্ঠ। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, রায়গঞ্জ ও তাড়াশ উপজেলা নিয়ে সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর এলাকা।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬ থেকে শনিবার বেলা ২টা পর্যন্ত সময়ে উল্লাপাড়া উপজেলা সদর ও পার্শবর্তী এলাকায় সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির-১ এর সরবরাহ করা বিদ্যুতের অন্ততঃ ২০টি ফিডার লাইনে গড়ে ৯ বার লোডশেডিং দেওয়া হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং হয়েছে ৫ নম্বর ফিডার লাইনে।
উল্লাপাড়া সদরে প্রথমে শুক্রবার রাত ১০ টা ৩০ মিনিটে বিদ্যুৎ যায়। আসে ১১ টা ২০ মিনিটে। এর পর রাত ১টায় লোডশেডিং দেবার পর ২টায় সরবরাহ করা হয় বিদ্যুৎ। ৩য় বার শনিবার ভোর ৫ টা ৩৫ মিনিটে লোডশেডিং দেওয়া হয়।
চলে ৬ টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত। এরপর বেলা ১১ টা থেকে ১২ টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে। আবার বেলা ২ টায় আবারও চলে যায় বিদ্যুৎ। এই সমিতির আওতায় মোট ৮১ টি ফিডার লাইনে ৫ লাখ ৪০ হাজার গ্রাহক পরিবারকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। বর্তমানে দৈনন্দিন চাহিদার অর্ধেক পরিমান বিদ্যুৎ দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১।
উল্লাপাড়ার সলপ ইউনিয়নের সংকরহাটি গ্রামের শিক্ষক বানছা রাম সরকার ও ডাঃ বাহারুল ইসলাম জানান, শুক্র এবং শনিবার রাত ১০ থেকে একটানা ২ টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত তাদের এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। এরপর রাত ৩ টায় বিদ্যুৎ এসে স্থায়ী হয় মাত্র ২০ মিনিট।
তারপর সকাল ৯ টা পর্যন্ত তাদের এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। ফলে তাদের বাড়ির শিশু সন্তানদেরকে নিয়ে চরম দুর্ভোগে রাত কাটে তাদের। এমন কথা বললেন পঞ্চক্রোশী ইউনিয়নের বেতবাড়ী গ্রামের আব্দুল আলীম, বড়হর ইউনিয়নের আব্দুর রশিদসহ আরও অনেকে। এরা জানান, চরম গরম ও লোডশেডিংয়ে ওষ্ঠাগত হয়ে পড়েছে তাদের জন জীবন।
সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহা ব্যবস্থাপক মোঃ আবু সালেহ জানান, তাদের বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর আওতায় ৪ টি উপজেলা রয়েছে। এই সমিতিতে মোট ৮১টি ফিডার লাইন আছে। বর্তমানে এই সমিতিতে প্রতি ২৪ ঘন্টায় ১০০ থেকে ১০৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন।
সেখানে তারা পাচ্ছেন গড়ে ৬০ থেকে ৬২ মেগাওয়াট। আর এ কারণে প্রতিটি ফিডার লাইনে পর্যায়ক্রমে ২ ঘন্টার পর পর তাদেরকে বাধ্য হয়ে লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। তবে উল্লাপাড়া উপজেলা সদরে (১ নম্বর ফিডার) হাসপাতাল, প্রশাসনিক দপ্তর ও আইন শৃংখলা বাহিনীর অফিসগুলো অবস্থানের কারণে এই লাইনে অপেক্ষাকৃত কম লোডশেডিং দেওয়া হয়। মহাব্যবস্থাপক আরও বলেন, পায়রা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ১ নম্বর ইউনিট ৩/৪ দিন আগে বন্ধ হয়ে গেছে। গত শনিবার এই কেন্দ্রের ২ নম্বর ইউনিটও বন্ধ হয়েছে। ফলে এখন তাদেরকে বিদ্যুৎ সমন্বয় করার জন্য আরও বেশি লোডশেডিং দিতে হবে।