
-ছবি মুক্ত প্রভাত
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে খুন ও ধর্ষণের চেষ্টাসহ লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার (৭ এপ্রিল) রাতে মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের ঘটকের আন্দুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ইব্রাহিম জোমাদ্দার বাদী হয়ে ১১ জনকে আসামী করে বুধবার (০৯ এপ্রিল) মির্জাগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করেছেন। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে মির্জাগঞ্জ থানাকে এজাহার নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সোমবার রাতে দা, রামদা, জিআই পাইপ সহ দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে ইব্রাহিম জোমাদ্দারের গােয়াল ঘরে রাখা একটি গরুর গলায় বাধা শিকল কেটে নিয়ে যাওয়ার সময় শব্দ শুনতে পেয়ে ইব্রাহিম জোমাদ্দার লাইট জ্বালিয়ে দরজা খুলে বাইরে বের হয়ে দরজার সামনে সশস্ত্র লোকজন দেখেতে পেয়ে ভয়ে আঁতকে ওঠেন।
এসময় আসামিদের হাতে থাকা ধারালাে রামদা দিয়ে খুন করার উদ্দেশ্যে ইব্রাহিম জোমাদ্দারের মাথা লক্ষ্য করে কোপ মারেন। রামদার কোপে মাথার হাড় রক্তাক্ত জখম হয়।
সাথে থাকা অন্যান্য আসামিরা তাকে এলােপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করেন। ইব্রাহিম জোমাদ্দারের ডাক-চিৎকারে তাঁর স্ত্রী শিউলি বেগম তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসলে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে তাঁরও মাথা লক্ষ্য করে কোপ মারে দুর্বৃত্তরা।
এতে শিউলি বেগমের মাথার হাড় কেটে গিয়ে রক্তাক্ত জখম হন। শিউলি বেগম মাটিতে লুটিয়ে পরলে আসামিরা রামদা দিয়ে তাঁর মাথায় পুনঃরায় কোপ মারলে তিনি মারাত্মকভাবে রক্তাক্ত জখম হন।
এরপরই আসামিরা ইব্রাহিম জোমাদ্দারের ঘরে প্রবেশ করে আলমারি থেকে আহত দ্বয়ের পুত্রবধুর স্বর্ণের রুলি, কানের দুল, স্বর্ণের চেইন ও আংটি সহ প্রায় সাড়ে চার লক্ষ টাকা মূল্যের মালামাল এবং নগদ ৫৫ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায় এবং এসময় আসামিদের মধ্যে দুই জন পুত্রবধূর কক্ষে প্রবেশ করে তাঁর শ্লীলতাহানি ঘটায় এবং ধর্ষণের চেষ্টা করে।
এসময় আহতরা ৯৯৯ এ কল দিয়ে সহযোগিতা চাইলে মির্জাগঞ্জ থানা পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। আহতরা এখনও মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছে।
আসামিরা হলেন, খালেক জোমাদ্দারের পুত্র কামাল জোমাদ্দার (৩৮) ,জসিম জোমাদ্দারের স্ত্রী রোজিনা বেগম (৪০), মৃত হাসেম জোমাদ্দারের পুত্র মাজেদ জোমাদ্দার (৫০),গনি হাওলাদারের ছেলে মোশারেফ হাওলাদার (৪৫),শিরু ফকিরের ছেলে তৌহিদ (৪০), ওয়াজেদ ফরাজীর ছেলে বশির ফরাজী (৪৫),হামেল চৌকিদারের ছেলে রাসেল চৌকিদার (৩৫),আদম হাওলাদারের ছেলে হাবিব হাওলাদার (৫৫),কাছেম হাওলাদারের ছেলে মজিবুর হাওলাদার (৩৩), কামাল জোমাদ্দারের ছেলে মাইনুল জোমাদ্দার (১৯)। এরা সকলেই ঘটকের আন্দুয়া গ্রামের বাসিন্দা।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইব্রাহিম জোমাদ্দার বলেন, আসামিরা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ। এলাকার এমন কোন অপকর্ম নাই যা আসামিরা করে না। তাদের ভয়ে এলাকার সাধারণ মানুষ সর্বদা আতঙ্কে থাকে। আমরা ন্যায় বিচার চাই।
ইব্রাহিম জোমাদ্দারের স্ত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিউলি বেগম বলেন,আমরা এখনও চিকিৎসাধীন আছি। আমার স্বামী মামলা করেছে এইজন্য আমাদের জীবনে শেষ করে দিবে বলে আসামিরা হুমকি দিচ্ছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
এ বিষয়ে মির্জাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শামীম হাওলাদার বলেন, আদালতের কাগজ এখনও হাতে পাইনি। পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।