
—ছবি মুক্ত প্রভাত
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ঠাকুর-দেবতার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে ব্রহ্মপূত্র নদে স্নান করে পাপ মোচনের জন্য লাখো পূণ্যার্থীর আগমন ঘটেছে।
শুক্রবার দিবাগত রাত ২টা ৭ মিনিট থেকে শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ৫১ মিনিট পর্যন্ত মূল সময়কে ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত ছাড়াও পাশ্ববর্তী ভারত, চীন ও নেপাল থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ঐতিহ্যবাহি এ স্নানে সামিল হন।
অষ্টমীর স্নান উপলক্ষে গত তিনদিন ধরে চিলমারীতে শুরু হয় সনাতন ধর্মের মানুষের আগমন। প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকা ব্যাপি ব্রহ্মপূত্র নদে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষের স্নানের মধ্যদিয়ে সকল পাপ মুছে ফেলার জন্য প্রার্থনা করেন তারা।
দিনাজপুরের অজয় চক্রবর্তি জানান, বিগত ১৯৬৯ সাল থেকে এখানে পাপ মোচনের জন্য আসছি। যুদ্ধের সময়টা বাদে পরবর্তীতে প্রতিটি বছর এখানে স্নান করে যাই।
নীলফামারী থেকে আসা প্রাণ কৃষ্ণ দেবনাথ জানান, পরশুরামের মাতৃহত্যার পাপ মোচনের জন্য ব্রহ্মপূত্র নদে এসে স্নান করেছেন। ধর্মীয় ওই রীতি মানার জন্য আমরা প্রতিবছর ব্রহ্মপূত্র নদে প্রাত:স্নান করি।
এদিকে বিশাল এ জনতাকে সামলাতে চিলমারী উপজেলা প্রশাসন থেকে নেয়া হয়েছে সব ধরণের ব্যবস্থা। এবারের স্নান চলে সারাদিনব্যাপী। পূণ্যার্থীদের আগমন উপলক্ষে নদীর তীরে বসেছে মেলা। স্নানের পর নারী-পুরুষের জন্য নেয়া হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
৪ থেকে ৫ লাখ মানুষ প্রতিবছর এ মেলায় অংশ নেয় বলে জানান মেলা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক শ্রী বিষ্ণু চন্দ্র। তিনি আরো জানান, শুক্রবার দিবাগত রাত ২টা ৭ মিনিট থেকে শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ৫১ মিনিট পর্যন্ত মূল সময়কে ধরা হলেও স্নানের উত্তম সময় ধরা হয়েছে শনিবার দুপুর ১২ টা ৮ মিনিট থেকে দুপুর ১টা ৪১ মিনিট পর্যন্ত।
চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সবুজ কুমার বসাক জানান, সরকারিভাবে অষ্টমীর স্নানে মেলা স্থলে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন, বিশুদ্ধ পানীয় জলের জন্য নলকুপ স্থাপন, মহিলাদের কাপড় বদলানোর জন্য তাবু টানানো হয়। নিরাপত্তার জন্য ১৪০ জন পুলিশ, ২৫ জন আনসার, ২ জন ম্যাজিস্ট্রেট, ১ জন ডুবুরি ও সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে।