
-ছবি লেখকের
ইদানীং অভিমান বড্ড বেশি বেয়ারা হয়েছে তোমার, বোধহয় কোনোভাবেই তাকে আর বশে আনতে পারছ না
কথা শোনে না, সময়-অসময় চেনে না-নোটিস ছাড়াই বেড়াতে আসে আমার বাড়িতে
মাঝেমাঝে আমি বেশ পাজেল্ড হয়ে যাই-
এতো অভিমান রাখার খোঁয়াড় আমার কাছে যে নাই!
বেশ অভিমান জমা হয়েছে, বাড়তি চাপ নেওয়ার ক্ষমতা নাই, মগজ বাড়িতে আর জায়গা নাই-
কোথাও ভাড়ায় একটু মগজ পাব এমন আশাও নাই ইদানীং আমার
ভেবেছিলাম তোমার অভিমানগুলো বিদেয় করে নতুন কারও অভিমানের বাসস্থানের জোগান দিব আমার বাড়িতে-
কিন্তু যে আশায় গুড়েবালি!
আচমকা এতো অভিমান যে পাঠাবে তার পূর্ব পশিম উত্তর দক্ষিণ কোন ধারণাই ছিল না আমার, মোখার রাজত্বের দিন তো কোনো অভিমানের ছায়া লক্ষ করিনি তোমার চোখেমুখে!
দিনে দিনে তুমি বেশ আনমনা হয়েছে-
আগের মতো এখন আর অভিমানগুলো ভেঙেচুরে সমুদ্রের নোনাজলে ফেলে দাও না
অপ্রয়োজনীয় বলে অবজ্ঞা কর না
অভিমানের ব্রান্ড কোয়ালিটি বাছ-বিচার কর না
যখন যেখানে যেটুকু পাও অনেক যত্নে কুড়িয়ে নাও, জমা কর
কাস্টমাইজ ছাড়াই কুরিয়ারে পাঠিয়ে দাও আমার ঠিকানায়
একবার জানতেও চাইলে না-
"নতুন কোনো অভিমান লাগবে কিনা আমার, আগের পাঠানো সব অভিমানের মেয়াদ ফুরালো কিনা?"
কিছুই তোয়াক্কা করলে না, ড্যাম কেয়ার!
আমার এখানে যে অভিমান রাখার জায়গা নেই তা তুমি ভালো করেই জান
তাছাড়া তুমি ব্যতীত আরও তো কেউ কেউ অভিমান পাঠায় আমাকে-
তাও-বা কি করে ইগনোর করি?
তারাও তো একটা আশা করে পাঠায় আমাকে!
প্রতিটা অভিমানের কিছু না কিছু আশা থাকে, প্রাপ্তিও থাকে-হোক না তা যৎসামান্য
কেউ কেউ অভিমান জমিয়ে জমিয়ে অনেক বেশি লভ্যাংশও খোঁজে, না পেলে আরও পাঠানোর ধমক দেয়, হুমকির কড়া বার্তা পাঠায়-
আমি আছি এক দারুণ বেকায়দায়!
যদি বলি আমি এখন স্বার্থপর হবো-
বেছে বেছে কোয়ালিটি অভিমান নিব
মাত্র সাতদিন দশদিন মেয়াদের অভিমান নিব
দীর্ঘ মেয়াদি অভিমানগুলো সমুদ্রে পাঠাব
মেয়াদহীন অভিমান ভুলেই যাব
এরপরও যদি ভাঙতি কিছু অভিমান থেকেই যায়-
সিলগালা করে আকাশের ঠিকানায়
পাঠিয়ে দিব
আমি নৈসর্গিক নিস্তব্ধতায় মোড়া এক খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে নিশ্বাস নিব
অভিমানের আড়মোড়া ভেঙে
মেয়াদোত্তীর্ণ অভিমান ভুলে
আমরা কফির পেয়ালায় চুমুক বসাব
জনম জনমনের মতো অভিমানকে গুডবাই জানাব।
লেখক-
ড. নজরুল ইসলাম খান,
অধ্যক্ষ, প্রাবন্ধিক, কবি ও কথাসাহিত্যিক)