
—ছবি সংগৃহিত
একদিন এই রঙ,রূপ, গন্ধে, বর্নে ভরা পৃথিবীতে আমি থাকবো না। জানি সেদিনও ভোরে শুকতারা টা জেগে উঠবে। পাখির কিচিরমিচির করা শব্দ শুনতে শুনতে সাদা পাঞ্জাবি পড়ে,টুপি মাথায় দিয়ে হেটে হেটে কেউ মসজিদে যাবে।
কারো আঙিনায় তারার মতো শিউলি পড়ে থাকবে। ঘাসের উপর শিশির পড়বে। টিনের চালে বৃষ্টির শব্দ শুনতে শুনতে কোন প্রেমিক তার নতুন প্রেমের কবিতা লিখবে অথবা কেউ পেছনে ফেলে আসা হাজারো স্মৃতি মনে করে বৃষ্টির জলের মত দু চোখ বেয়ে অশ্রু গড়াবে।
যে পথে আমি হেটে গেছি সে পথ দিয়ে হেটে যাবে নতুন কোন আগুন্তুক। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে সেদিন ও পিপিএইচ,প্রিএক্লামশিয়া,লেবার পেইন,পিভি ব্লিডিং নিয়ে রোগি ভর্তি হবে। ফিটাল ডিস্ট্রেস এর জন্য ইমিডিয়েট সিএচ করার জন্য কেউ ওটি তে যাবে। ফারুক ভাই অথবা সাবিনা খালার মত আরও কেউ তৈরি হবে।
একবুক ভালবাসা নিয়ে যার জন্ম হয়েছিলে সেটা না দিয়ে যেতে পারার মতো আরও অনেকের জন্ম হবে। অথবা যারা শুধু পেয়েই যাবে অথচ দেবার মত সাহস হবেনা এমন কেউ। অথবা সব কথা কোথাও লিখে রেখে যাবে শুধু এটুকু বলে যেতে যে আমি তোমাকে ভালবেসেছি। তীব্র দহনে পুড়ে অংগার হয়ে, বুকফাটা আর্তনাদ, শব্দহীন চিৎকার করে করে তবুও তার হতে দেয়নি। এমন কেউ।
আমাকে মনে করবে কজন? জানিনা। এ জীবন শেষ হয়ে যাওয়ার পর সেটার আর কি মানে রাখে? কিছু ভালো কাজ থাকলে সেটা তো একজনের হিসেবের খাতায় তোলাই থাকে।
এতো কিছুর পরেও এই যে চাঁদ, তারা, পুর্নিমা দেখা, বৃষ্টির সময় এক ঝটকা হাওয়ার স্পর্শে এলোমেলো মন, সদ্য জন্ম নেয়া তুলতুলে শিশুর নিষ্পাপ চাহুনি, বাবা মা ভাই বোন কোন খোশগল্পে হেসে মেতে উঠেছে, কোন প্রিয় মুখ, চেনা কন্ঠস্বর অথবা কারো সুখী চেহারা দেখার মত আনন্দ এই নস্মর জীবনের প্রাপ্তি।
জীবন তো শেষ হবারই। প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির। শান্তনার। হারানোর। সব কিছু মেনে নিয়ে টিকে থাকায়। বলা না বলায়।
৩.৮.২২
রাজ