
গুরুদাসপুর (নাটোর). গুরুদাসপুরে ২০০ বিঘা বোরো খেতে জলাবদ্ধতা তৈরি হেয়ছে।-ছবি মুক্ত প্রভাত
মাঠের বোরো ধানে থোর গজিয়েছে। অনুকুল পরিবেশ পেলে দিন পনেরোর মধ্যে থোর ভেদ করে জমবে দুধসর। অথচ গত দুই দিনের বর্ষণেই বোরো খেতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। পুকুরে আটকে গেছে পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা। পানি বের না হলে খেতের বোরো গাছ—খেতেই পচবে।
গুরুদাসপুরের হাঁড়িভাঙ্গা বিলের বিয়াঘাট বাবলাতলা ও জ্ঞানদানগর অংশের প্রায় ২শ বিঘা জমির বোরো ধান প্লাবিত হয়ে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। স্থায়ী জলাবদ্ধতা শঙ্কায় বোরো ধান বাঁচাতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এসব বোরো চাষীরা।
বোরো চাষী বৃষক আব্দুল হালিম জানান, তার ৮ বিঘা বোরো খেতের পাশজুড়ে পুকুর থাকায় বৃষ্টির পানি খেতে আটকা পড়েছে। আবারো বর্ষণ হলে ধানগাছগুলো তলিয়ে যেতে পারে। এতে ধানের থোরে পানি ঢোকার শঙ্কা রয়েছে। থোরে পানি প্রবেশ করলে সেই থোর থেকে ধান ফলবে না।
একই কথা জানালেন কৃষক মনিরুল ইসলাম, আব্দুল হাই, নুর ইসলাম, আবু সাইদ। তারা বলেন, পশ্চিমের উজান এলাকা মহিষমারী, সোনাপুর, কুমারখালি ও দস্তনানগরের পানি তাদের বোরো খেতে জমেছে। বোরো খেতের উত্তর-পৃর্বে পুকুর থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা। ফলে বোরো খেতে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। লম্বা সময় খেতে পানি জমে থাকলে ধান গাছে পচন ধরবে।
বিয়াঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান, বৃষ্টিতে ভেসে গেছে বাঁশের ডহর, বালুর ধর নামের দুটি খাল। খাল উপচে হাঁড়িভাঙ্গা বিলে প্রবেশ করেছে ঢলের পানি। এতে বিয়াঘাট বাবলাতলা ও জ্ঞানদানগর এলাকার প্রায় ২শ বিঘার বেশি বোরো ধান খেত প্লাবিত হয়েছে। দ্রুত পানি নিস্কাশন না করা গেলে বোরো ধানে অপূণীয় ক্ষতি হবে কৃষকের।
গুরুদাসপুর কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের তথ্যমতে- চলতি মওসুমে হাঁড়িভাঙ্গা বিলে প্রায় ৪৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। স্থানীয় কৃষকেরা বলছেন, শুধু বিয়াঘাট বাবলাতলা ও জ্ঞানদানগর নয়—ভাড়ি বর্ষণ হলে ৪৫ হেক্টর জমির বোরো ধানই তলিয়ে যাবে। ধান রক্ষায় পানি নিস্কাশনের স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তাদের।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশিদ বলেন, হাঁড়িভাঙ্গা বিলে অপরিকল্পিত পুকুর খননের ফলে পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। এতে করে এই বিলে সব ধরণের চাষাবাদ কঠিন হয়ে পড়েছে। চাষাবাদের ক্ষেত্রে ব্যপক সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছেন কৃষকেরা।
তিনি বলেন, বিয়াঘাট বাবলাতলা ও জ্ঞানদানগর এলাকার বোরো খেতে জলাবদ্ধতার কথা তিনি শুনেছেন। এই বিলের পানি নিস্কাশনের জন্য ড্রেন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন তারা। সরেজমিন পরিদর্শন করে বোরো রক্ষায় খুব দ্রুত ড্রেনেজ ব্যবস্থা চালু করা হবে।