
—ছবি মুক্ত প্রভাত
অবশেষে বাগমারায় পুকুর খনন বন্ধে হার্ড লাইনে কঠোর অবস্থানে নেমেছেন ইউএনও মাহবুবুল ইসলাম। ছুটির দিন শনিবার দুপুরে পুকুর খনন বন্ধে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে শুভডাঙ্গার নিমাই বিলে অভিযানে নামে ইউএনও। এ সময় পুকুর খননকাজে নিয়েজিত দুইটি ভ্যেকু গুড়িয়ে দেওয়া হয়। তবে পুকুর খনন কাজে জড়িতরা প্রশাসন আসার খবর পেয়ে আগেই সটকে পড়ে।
ইউএনও’র অফিস সূত্রে জানা গেছে, বাগমারার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক বিল দখল করে শুরু হয়েছে পুকুর খননের মহোৎসব। বাগমারার ১৬ টি ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটিতে রয়েছে বিশাল আকারের বিল। আর এই বিল দখল করে বর্তমানে শুরু হয়েছে পুকুর খনন। এসব খনন কাজে জড়িত রয়েছে রাজনৈতিক ক্ষমতাধর বিএনপি’র স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। স
রেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাগমারার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে কমবেশি পুকুর খনন করা হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি পুকুর খনন করা হচ্ছে আউসপাড়া, শুভডাঙ্গা, গনিপুর, ঝিকরা ও বিহানালী ইউনিয়নে। এসব ইউনিয়নের অন্তত অর্ধশতাধিক স্পটে রাতের আঁধারে চলছে পুকুর খনন। আউচপাড়া ইউনিয়নের নিমাই বিলে একই স্টাইলে চলছে পুকুর খনন।
এই বিলের চারিপাশের গ্রাম সারন্দি, কোন্দা, ধামিনকৌড়, খোদ্দকৌড়, গাঙ্গোপাড়া সহ ১০/১২ টি গ্রামের শতশত কৃষকের আবাদী ধানী জমি জোরপূর্বক দখল করে তিনটি স্পটে রাতের আধারে পুকুর খনন করছে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক ছত্রছায়ার থাকা স্থানীয় প্রশাবশালী মহল।
একই ভাবে শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের নিমাই বিল এলাকার ৪/৫ টি গ্রামের প্রায় ৭০ জন কৃষকের জমি জোরপূর্বক দখল করে পুকুর খনন করছে ওই ইউনিয়নের ক্ষমতাসীন ছত্রছায়ায় থাকা জাহাঙ্গীর হোসেন, খুরশেদ আলম, আব্দুল হাকিম, আব্দুল মকিম ও সাহেব আলী সহ ১০/১২ জনের একটি সিন্ডিকেট।
অসুধু এই সিন্ডিকেটের পুকুর খননের বিষয়টি অবগত হয়ে ইউএনও মাহবুবুল ইসলাম নিমাই বিলে অভিযোন পরিচালনা করেন। ইউএনও মাহবুবুল ইসলাম জানান, বাগমারায় মহামারি আকার ধারন করেছে এই পুকুর খননের বিষয়টি।
এটাকে কোনভাবেই নিয়ন্ত্রন করা যাচ্ছে না। এক দিকে বন্ধ করলে আরেক দিকে কাটা শুরু করছে অসাধু চক্র। অধিকাংশই পুকুর খননের কাজ চলছে রাতের আঁধারে।
দিনের বেলায় তারা গা ঢাকা দিয়ে থাকে। এর দুই দিন আগে সহকারি কমিশনার ভুমি নাহিদ ইসলাম গনিপুরের দুবিলা নামক বিলে অভিযান চালিয়ে পুকুর খনন কাজে নিয়োজিত আরো দুইটি ভ্যেকু গুড়িয়ে দেয়।
তার পরও টনক নড়ছে না খননকারীদের। পুকুর খনন নিয়ে বিএনপি নেতাদের ছত্রছায়ায় বিষয়ে জানতে চাইলে বাগমারা বিএনপি’র সদস্য সচিব অধ্যাপক কালাম হোসেন প্রায় হাফ ডজন বিএনপি নেতার নাম উল্লেখ করে বলেন, তারা নিজেরাই পুকুর খননের সাথে সরাসরি জড়িত। আমরা প্রশাসনকে ব্যাপক ভাবে সহযোগিতা ও সাহস দিয়েও পুকুর খনন নিয়ন্ত্রন করা যাচ্ছে না।
এতে দলের ব্যাপক ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। সাধারন মানুষের আস্থা হারাচ্ছে বিএনপি। ইউএনও মাহবুবুল ইসলাম জানান, পুকুর খনন বন্ধে কাউকে বিন্দু মাত্র ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। খবর পাওয়া মাত্রই আমরা অভিযান পরিচালন করছি। এখন থেকে পুকুর খনন বন্ধে আইনের সর্বোচ্চ ধারা প্রয়োগ করা হবে।