
-ছবি মুক্ত প্রভাত
গেপালগঞ্জের নামে চলা প্রতাপশালী সাতক্ষীরা জনস্বাস্থ্যের নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলামের দুর্নীতির দায়ে বদলী করার পর দ্বায়িক্ত বুঝে না দিয়ে গতরবিবার ও অফিস করেছেন। জেলা বি এন পির এক শীর্ষ নেতা ও ঢাকায় এক সমন্বয়ককে ধরে বদলী আদেশ স্থগিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত আছেন শহিদুল ইসলাম।
ঘটনাটি সাতক্ষীরার এখন টল অফ বা টাউন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপকূলীয় এলাকায় সুপেয় পানির ড্রাম দেওয়ার নামে দীর্ঘ চার বছরে সাতক্ষীরায় প্রকৌশলী শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর নড়ে-চড়ে বসেছে সর্বপদ।
পাহাড়সম দুর্নীতির খবর পেয়ে ফেব্রুয়ারী মাসের ১৭ সারক্ষীরা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহিদুল ইসলামকে অফিস আদেশে কুষ্টিয়া জেলায় বদলি করেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। তবে বদলী হলেও থেমে নেই তার দৌরস্থ। গত রবিবার ২ মার্চ বিকালে সাতক্ষীরা জেলা অফিসে বসে বদলী ঠেকাতে বিভিন্ন মহলে তদ্বির করতে দেখা গেছে তাকে।
এদিকে, এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজি ও দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল ধন সম্পদ গড়ে তোলা, যশোরের নিউ মার্কেট এলাকায় ৫ তলা বাড়িসহ ৮/১০টি প্লট সহ কয়েক বিঘা জমি, গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানীসহ বিভিন্ন স্থানে নামে বেনামে সম্পত্তি কেনার অভিযোগ রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২১ সালে ২০ মে সাতক্ষীরা জনস্বাস্থ্যের নির্বাহী প্রকৌশলী হিসাবে যোগদান করেন শহিদুল ইসলাম।
এরপর থেকে তিনি জড়িয়ে পড়েন লুটপাটের মহাযঞ্জে। গত ২০২০-২১ অর্থ বছরে সুপেয় পানির জন্য সারাদেশে ৮ হাজার ৮৫০ কোটি ৭৩ লাখ টাকা খরচ করে হাতে নেয় আওয়ামী সরকার। এর মধ্যে ৫টি প্যাকেজে ২শত ১২ কোটি বরাদ্ধ হয় সাতক্ষীরার জন্য। প্রকল্প গুলোর মধ্যে রয়েছে রেইনওয়াটার হারবেষ্ট , গভীর নলকুপ, সাব মার্সেবল।
প্রকল্পটির শুধু মাত্র গরীব আর পিছিয়ে পড়া মানুষকে স্বল্প মূল্যে নিরাপদ পানি দেওয়ার জন্য ছিল। কিন্তু বরাদ্ধের হাজার হাজার কোটি টাকা অপচয় করে অনিয়মের মাধ্যমে লাভবান হয়েছে, সরকারি কর্মকর্তা, এমপি ও সহ স্থানীয় জন প্রতিনিধিরা।
জেলার আশাশুনি ও শ্যামনগর উপকূলীয় এলাকায় সুপেয় পানি সংকট নিরসনে সারা, দেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্প ও ‘উপকূলীয় জেলা সমূহে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে পানি সরবরাহ নামে দুটি প্রকল্পের আওতায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে প্রকল্পে ৩ হাজার লিটারের পানিসংরক্ষণের ট্যাংক ও অন্যান্য সরঞ্জামাদিসহ স্থাপন করা হয়।
এসব প্রকল্পের আওতায় সরকারের উপকারভোগী প্রতি ব্যয় প্রায় ৪২ হাজার ২০০ টাকা (ভ্যাট ট্যাক্সসহ)। তবে সরকারী এ প্রকল্পে গ্রাহক প্রতি ১৫০০ থেকে ২৫০০ টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও কৌশালে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা। এছাড়া নিম্ন আয়ের মানুষদের বাদ দিয়ে স্বচ্ছল চাকরীজীবীদের কাছে ১২ থেকে ১৭হাজার টাকায় বিক্রি করছেন এসব ট্যাংকি।
নাম না জানানোর শর্ত দিয়ে সাতক্ষীরার জনস্বাস্থ্য বিভাগের সাবেক প্রকৌশলী জানান, নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহিদুল ইসলাম করেছিলেন তৎকালীন সময়ে গোপালগঞ্জ জেলার হওয়ার সুবাদে অফিসের সকল কাজ নিজের হাতে রাখতেন। এছাড়া আত্নীয়করণ করে টেন্ডার নিয়ে ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। নিজের আত্মীয় পরিচয়ে প্রকল্পের একটি প্রতিষ্ঠান দুর্নীতির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কামাল এন্টারপ্রাইজের ঠিকাদার প্রতিনিধি নজরুল ইসলাম।
খুলনা সুপারিনটেনডেন্ট প্রকৌশলী জানান, ২ মার্চ রবিবার তার খারিজ বুঝে দেওয়ার কথা। তারা বদলীর আদেশ মোতাবেক সে পূর্বের কর্মস্থল ত্যাগ করবেন।
তবে প্রকৌশলী শহিদুল ইসলামকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, আরো কিছুদিন সাতক্ষীরায় থাকব। বিষয়টি আমার কর্তৃপক্ষ অবহিত আছেন।
প্রধান প্রকৌশলী জানান, বদলীর আদেশের দিন থেকে ১৪দিন অর্থাৎ ২ মার্চ পর্যান্ত সাতক্ষীরায় থাকতে পারবেন শহিদুল ইসলাম।