
—ছবি লেখকের
আরাশ বিছানায় শুয়ে থেকেই পড়ছে। সার্ভিস রুলস। কাল সকালে মোবাইল কোর্ট এ যেতে হবে। ভেজাল বিরোধী অভিযান। একজন সৎ, তারুণ্যে ভরা বুদ্ধিদিপ্ত,স্মার্ট অফিসার। অথচ পুরদস্তুর সাধারন জীবন যাপনে অভ্যস্ত। সে সাধারণ হয়েও অসাধারন। সকালে উঠতে হবে। সে তারাতারি ঘুমিয়ে পরে।
আলো ঝলমলে সকাল। নতুন আরেক টা দিনের শুরু। ভেজাল বিরোধী অভিযান চলছে। মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ রাখার জন্য ফার্মেসীর দোকানী কে জরিমানা করা হয়েছে। আরাশ এখান থেকে যাবে এক বিয়ে বাড়ী। বাল্য বিবাহ বন্ধ করতে। সব কাজ শেষ করে বাসায় ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। কিছুক্ষন বিশ্রাম নিয়ে সে চলে যায় কলিগদের সাথে টেনিস খেলতে। তারপর বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে ফোনে কিছুক্ষণ বাবা মার সাথে কথা বলে। এটা তার রুটিন মাফিক কাজের একটা।
আজ পুর্নিমা। আরাশ বিছানায়। জানালার পর্দাটা সরিয়ে দিয়েছে। আকাশে এক ফালি চাঁদ সাথে নির্মল বাতাস রুমে এসে পুরো রুমের পরিবেশ টা এক অন্য আভায় নিয়ে গিয়েছে। হঠাত ই তার পেছনে ফেলে আসা দিনের কথা মনে হয়ে এক দীর্ঘশ্বাস বের হয়ে আসে।
পুষ্পিতা নওরিন। তার কলেজ লাইফ এর প্রথম প্রেম,ভাললাগা,প্রথম আবেগ এর নাম। কলেজ এর এক প্রোগ্রাম এ প্রথম দেখা। লাল টকটকে শাড়ী পড়া, কপালে লাল টিপ,ঘন কালো চুলের এক অদ্ভুত মায়াবতী মেয়ে। সেই প্রথম দেখাতেই আরাশ এর পুষ্পিতা কে ভালো লেগে যায়। সেই থেকে শুরু। আরাশের জীবন তখন গান কবিতা আর ভালবাসার রংগিন মলাটে বাধা পড়ে। কত জোস্ নায়, কত বরষায়, কত বসন্তে, কত রাতে তার সেই বাস্তবে দেখা অধরা রাজকন্যা কে নিয়ে ভেবে শেষ হয়েছে ঠিক নেই।
অসম্ভব আত্তসম্মানে ভরপুর এই ছেলে টাও একদিন সব লজ্জা,ভয়ের মাথা খেয়ে পুষ্পিতা কে ভালোবাসার কথা জানিয়ে দেয়। অনেক দিন ধরে ভাবনার পর আরাশের ব্যাক্তিত্তে মুগ্ধ হয়ে পুষ্পিতাও রাজি হয়ে যায়। তারপর শুরু হয় দুজনের নতুন পথচলা। একসাথে পড়াশুনা,দুজনের একসাথে সারাজীবন পাড়ী দেয়ার জন্য হাজারো সপ্নের বুনন। গল্প গানে, হাসিতে ভরা এক সপ্নময় জীবন।
সময়ের পরিক্রমায় দুজন এ একই বিশবিদ্যালয়ে পড়াশুনা প্রায় শেষ করে গ্রাজুয়েট হবার পথে। আরাশ আর পুষ্পিতা একদিন ক্লাস শেষ করে ক্যাম্পাস এর ভেতর দিয়ে হাটছে। আরাশ আমার খুব খারাপ লাগছে বলেই পুষ্পিতা মাথা ঘুরে পড়ে যায়। যখন চোখ খুলে তখন সে হাসপাতালের বেডে শুয়ে।
পাশে ছলছল চোখে তার হাত ধরে বসে আছে আরাশ। সে চোখে প্রেম,ভয়,কষ্ট সব একসাথে ছাপিয়ে উঠেছে। আরাশের এ চোখ তো পুষ্পিতা আগে কখনো দেখেনি। পুষ্পিতার বুকের মাঝে অস্থির আলোড়ন। আরাশ কি সেটা দেখতে পাচ্ছে না? এক অজানা ভয়ে পুষ্পিতা আড়ষ্ট হয়ে যাচ্ছে...... ।
(চলবে....)
২৯.৯.২১
রাজ