
—ছবি মুক্ত প্রভাত
রাজনৈতিক বিরোধের জেরে নাটোর জেলা বিএনপির সদ্য ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটির ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক গুরুদাসপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল আজিজের (৬৫) হুকুমে ছাত্রদলের সাবেক নেতা আবু সাঈদকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। আহত ওই ব্যক্তিকে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
সোমবার দিবাগত রাত ৮ টার দিকে গুরুদাসপুর উপজেলা ধারবারিষা ইউনিয়নের ধারাবাড়িষা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ওই মারধরের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় রাতেই আব্দুল আজিজসহ ৫জনকে অভিযুক্ত করে গুরুদাসপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন আহত নেতা আবু সাঈদ (৩৫)।
ভুক্তভোগী আবু সাঈদের (৩৫) বাড়ি গুরুদাসপুর উপজেলার ধারবারিষা ইউনিয়নের উদবাড়িয়া গ্রামে। তিনি পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি। তিনি নাটোর-৪ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতা নাটোর জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ব্যারিষ্টার আবু হেনা মোস্তাফা কামাল রঞ্জুর সমর্থক।
থানায় দায়ের করা লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জেলা বিএনপির নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবু হেনা মোস্তফা কামালকে অভিনন্দন জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন সাবেক ছাত্রদল নেতা আবু সাঈদ। এতে ক্ষুব্ধ হন ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক গুরুদাসপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল আজিজ।
মারধরের শিকার আবু সাঈদ বলেন, আব্দুল আজিজের হুকুমে মো. মোলাম, মো. স্বপন আলী, মো. রাজিবুল ইসলাম ও মো. রোপাসহ সংবদ্ধ একটি দল সোমবার সন্ধ্যার পর ধারাবারিষা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে তার ওপর হামলা করেন। এক পর্যায়ে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেন। তার ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
প্রত্যক্ষদর্শী উদবাড়িয়া গ্রামের খালেদ সরদার বলেন, সন্ধ্যার পরপরই স্কুল মাঠ থেকে চিৎকারের আওয়াজ আসছিল। তিনিসহ অন্যরা গিয়ে দেখেন আবু সাঈদ আহত অবস্থায় দেখেন। তারা পৌঁছার আগেই হামলাকারীরা পালিয়ে যান।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শারমিন সুলতানা সাথি বলেন, রাত আটটার দিকে শরীরে কালশিরা ফোলা জখম নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন আবু সাঈদ নামের এক ব্যক্তি। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে আঘাত গুরুতর ছিলনা।
তবে আব্দুল আজিজের নেতা-কর্মীরা দাবি করেন, আবু সাঈদ প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে দীর্ঘদিন ধরেই উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল আজিজকে নিয়ে ফেসবুকে নানা ধরণের অপপ্রচার চালিয়ে আসছিলেন। ওই বিষয়টি নিয়েই সোমবার সন্ধ্যায় দুই পক্ষের লোকজনের কথা কাটাকাটি এবং হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে আব্দুল আজিজের সমর্থক স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান আহত হয়েছেন। এঘটনায় আবু সাঈদসহ অন্যদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
বিএনপি নেতা আবদুল আজিজ বলেন, ঘটনার সময় তিনি একটা মাহফিলে ছিলেন। সাঈদকে মারার নির্দেশ তিনি দেননি। এটি মূলত তার বিরুদ্ধে বিশদগাড় করে দায় চাপানোর চেষ্টা করছেন একটা পক্ষ। মূলত আবু সাঈদ ফেসবুকে তার বিরুদ্ধে নানা ধরনের কটূক্তিমূলক লেখালেখি করেন। বিষয়টি নিয়ে আবু সাঈদের সাথে কথা বলতে গেলে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে তার লোকজনও আহত হয়েছেন।
নাটোর জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ব্যারিষ্টার আবু হেনা মোস্তাফা কামাল রঞ্জু বলেন, তিনি নাটোর-৪ আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য মোজাম্মেল হকের ছেলে। বিএনপির রাজনীতিতে তাদের পারিবারিকভাবে শক্ত অবস্থান রয়েছে। তিনিও এই আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী। এসব কারণেই ঈষান্বিত হয়ে তার সমর্থককে মারধর করেছে আব্দুল আজিজের রোকজন।
গুরুদাসপুর থানার ওসি গোলাম সারওয়ার হোসেন বলেন, সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে আবু সাঈদ একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এটি তদন্ত করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।