
—ছবি মুক্ত প্রভাত
কুড়িগ্রামের রাজারহাট সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে একের এক দুর্গন্ধযুক্ত পঁচা ও নিম্ন মানের চাল বেড়াচ্ছে। টিসিবি’র পণ্য হিসেবে পঁচা-দুর্গন্ধযুক্ত নিম্নমানের চাল বিক্রির ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছেন ইউএনও। তারপরও থামছে না নিম্নমানের চাল সরবরাহ।
জানা গেছে,সোমবার রাজারহাট ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে টিসিবি’র চারজন ডিলার সমন্বিতভাবে পণ্য বিতরণ শুরু করেন। এসময় পঁচা ও দুর্গন্ধযুক্ত চাল বিতরণের একপর্যায়ে সুবিধাভোগী -পথচারীরা পঁচা ও দুর্গন্ধযুক্ত নিম্নমানের চাল বিতরণের প্রতিবাদ জানান।
পরে ভূক্তভোগীদের পক্ষ থেকে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়। এঘটনায় মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী কর্র্মকর্তা আল-ইমরান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
তবে মঙ্গলবার পূণঃরায় উপজেলার চাকিরপশার ইউনিয়নের রাজারহাট পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে টিসিবি’র ২জন ডিলার যৌথভাবে পণ্য বিক্রি শুরু করলে নিম্নমানের খাবার অনুপযোগী দুর্গন্ধযুক্ত চাল সরবরাহ করতে থাকেন। এতে ভোক্তাদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়,বিগত সময়ে আওয়ামী দলীয় সাবেক ছাত্র নেতার পরিচয়ে দাপট খাটিয়ে সাবেক ভারপ্রাপ্ত খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা সরকারি গুদামে নিম্নমানের চাল ক্রয় করে যাওয়ায় এসমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
চাকিরপশার ইউনিয়নের পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোক্তা নজরুল ইসলাম বলেন,খাওয়ার অনুপযোগী চাল দিয়ে টিসিবি’র বদনাম করা হচ্ছে,জরুরী ভিত্তিতে এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
রাজারহাট ইউনিয়ন পরিষদে টিসিবি’র সুবিধাভোগী,রেজাউল করিম রেজা বলেন,পঁচা দুর্গন্ধযুক্ত এবং পোকা ধরা খাওয়ার অনুপযোগী নিম্নমানের চাল বিক্রির ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষ জড়িতদের বিচার চাই। টিসিবি’র সুবিধাভোগী জাহাঙ্গীর আলম বলেন,এই চাল খাওয়ার অনুপযোগী,হাস মুরগী ছাড়া মানুষ খাওয়া যাবে না।
রাজারহাট পইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে টিসিবি’র পণ্য সরবরাহকারী ডিলার সেলিম আহমেদ নিম্নমানের চাল সরবরাহের সত্যতা স্বীকার করে বলেন,আমাদের কিছু করার নেই,যা দেয়া হচ্ছে তাই বিক্রি করছি।
রাজারহাট ইউনিয়ন পরিষদে পণ্য সরবরাহকারী ডিলার হরিশ চন্দ্র বলেন,যখন যেমন পণ্য পাই,তাই বিতরণ করি।
রাজারহাট পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ট্যাগ অফিসার ও উপজেলা যুব-উন্নয়নের সুপারভাইজার রাজু বলেন,নিম্ন মানের চালের বস্তা গুলো থেকে চাল বিক্রি না করে আলাদা করা হচ্ছে,তারপরও নিম্নমানের চাল যেতে পারে।
রাজারহাট ইউনিয়ন পরিষদে পণ্য সরবরাহে তদারকি কর্মকর্তা ও উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা উজ¦ল কুমার বলেন,অভিযোগ পাওয়ার পর সরেজমিনে গিয়ে অবশিষ্ঠ ভোক্তাদের মাঝে ভালো চাল সরবরাহ করা হয়েছে।
উপজেলা ভারপ্র্প্তা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন,আমি নতুন যোগদান করেছি,এসমস্ত চাল পূর্বের ওসিএলএসডি ক্রয় করে রেখে গেছেন,যা আছে তাই দেয়া হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল-ইমরান বলেন,সোমবারের ঘটনায় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। মঙ্গলবারের ঘটনায়ও তদন্ত কমিটি করা হবে। প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।