
—ফাইল ছবি
সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে কোনো কিছুই এখন আর স্থির থাকে না। মুহূর্তেই পুরনো কনটেন্ট নতুনভাবে আলোচনায় চলে আসে। এমনই একটি উদাহরণ হল ‘ছি ছি ছি রে ননি ছি’ শিরোনামের একটি পুরনো গান। ভারতের উড়িষ্যা প্রদেশের এই গানটি এখন ইন্টারনেটের দুনিয়ায় তোলপাড় সৃষ্টি করছে।
‘ছি ছি ছি রে ননি’ গানটি ১৯৯৫ সালে প্রথম রেকর্ড করা হয়। শিল্পী সত্য অধিকারী গানটি রচনা এবং পরিবেশন করেন। এর পর ২০০৫ সালে প্রযোজক সীতারাম আগরওয়াল গানটির একটি মিউজিক ভিডিও নির্মাণ করেন, যার পরিচালনা করেন মানবভঞ্জন নায়ক। গানটির ভিডিওতে এক দরিদ্র কৃষক এবং তার প্রেমিকার প্রেম কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, প্রেমিকার অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়ার পর কৃষক প্রেমিক তার হৃদয়ের ব্যথা গানের মাধ্যমে প্রকাশ করেন।
ভিডিওতে অভিনয় করেছেন বিভূতি বিশ্বল, যিনি সম্বলপুরের গোবিন্দতলার বাসিন্দা এবং একজন অভিজ্ঞ থিয়েটার অভিনেতা। তিনি অল ইন্ডিয়া রেডিওর একজন প্রতিষ্ঠিত শিল্পী এবং শিক্ষক।
যদিও গানটি প্রথম রিলিজের পর তেমন জনপ্রিয়তা পায়নি, তবে ইন্টারনেটের এই যুগে গানটি হঠাৎ করেই ভাইরাল হয়ে ওঠে। টিকটক, ইউটিউব, ফেসবুক রিলসসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে এটি এখন ব্যাপক জনপ্রিয়। আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে গানটির অদ্ভুত সুর এবং কাহিনী নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছেছে। গানটির বিরক্তিকর হাস্যরসাত্মক সুর এবং আকর্ষণীয় ভিডিও কন্টেন্ট শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছে।
বহু মানুষ গানটির অংশবিশেষ ব্যবহার করে মজার ভিডিও তৈরি করছে, যা ভাইরাল হচ্ছে এবং বিভিন্ন কমেন্টস ও শেয়ার পাচ্ছে। এমনকি বহু শ্রোতাই গানটির ভাষা বা অর্থ না জানলেও তার সুর এবং আবেগপূর্ণ পরিবেশনা তাদের মন ছুঁয়ে গেছে। ইন্টারনেটের এই যুগে সুরের এমন বৈচিত্র্য এবং আবেগময় পরিবেশনা শুধু ভারত নয়, বাংলাদেশ, নেপাল, পাকিস্তানসহ বহু দেশের মানুষের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
‘ছি ছি ছি রে ননি’ গানটি গ্রামীণ সংস্কৃতির একটি উদাহরণ, যা সুরের মাধ্যমে গ্রামীণ জীবনের সহজ-সরল আবেগ এবং প্রেমের একটি মর্মস্পর্শী চিত্র তুলে ধরে। এই গানটির মাধ্যমে শহুরে শ্রোতারা গ্রামীণ জীবনযাত্রার সরলতা এবং বাস্তবতার সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে। গানটির জনপ্রিয়তার এই নতুন অধ্যায় দেখিয়ে দিয়েছে, পুরনো সংস্কৃতি এবং সুর কখনো হারিয়ে যায় না। বরং সময়ের সঙ্গে তা আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে যায়।
গানটির এই ভাইরাল যাত্রা গ্রামীণ সংস্কৃতির প্রতি এক নতুন শ্রদ্ধা জ্ঞাপন। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সুরের দুনিয়া নতুনভাবে খুলে গেছে, যেখানে এই পুরনো গানটি আরও নতুন মাত্রা পেয়েছে। সময়ের সাথে আরও জীবন্ত এবং আকর্ষণীয় হয়ে ওঠেছে পুরনো সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য।