
ল্যান্ডমাইন বোমা নিয়ে আতঙ্ক
বাংলাদেশ মায়ানমারের সীমান্তবর্তী বান্দরবনের নাইক্ষ্যংছড়ি শুক্রবার পৃথক দুইটি ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে হয়েছে বলে জানা গেছে। মায়ানমারে অভ্যন্তরে দেশটির সামরিক জান্তাবাহিনীর সাথে যুদ্ধের পর ওই এলাকার বিদ্রোহী গোষ্ঠীর আরাকান আর্মি দখলে এসেছে বলে দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ করেছেন। এরই মধ্যে গেল শুক্রবার স্থলমাইন বিস্ফোরণে তিনজন গুরুত্বর আহত হন।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী মুক্ত প্রভাতকে জানান বাংলাদেশি অবচেতনভাবে বা সচেতনভাবে খারাপ উদ্দশ্য নিয়ে সীমান্ত এলাকা অতিক্রম করার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার সময় ওই ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
হঠাৎ কেন একই দিনে এরকম তিনটি ঘটনা ঘটলোঃ এব্যাপারে সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দা, জনপ্রতিনিধি এবং সেখানকার প্রশাসনের সাথে কথা বলে মুক্তপ্রভাতের প্রতিনিধি যেটি জানতে পারে তা হলো।
সেখানকার একজন প্রাক্তন চেয়ারম্যান নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তবর্তী এলাকা মিয়ানমারের অংশ সম্প্রতি আরকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে আসার
পর বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন পণ্য যেমন মায়ানমারে যাচ্ছে একই সাথে সে দেশ থেকে গরুসহ সব বিভিন্ন পণ্য বাংলাদেশে আসছে জানিয়েছেন। যে পণ্য আনা নিয়ে ওই
সীমান্তের কিছু নির্দিষ্ট রুট দিয়ে অবৈধ পথে প্রবেশ করতে গেলে মিয়ানমারের বিদ্রোহী বাহিনীকে ঘুষ দিতে হয়। আমি যতটুকু জানি অনেকেই ঘুষ না দিয়ে চোরাকারবারি
করতে গিয়ে বিকল্প পথ ব্যবহার করেন। শুক্রবার যারা বিকল্প রুট ব্যবহার করতে গিয়েছিলেন তারা ওই মাইন বিস্ফোরণে আহত হয়।
এ ব্যাপারে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন- সীমান্তে অবৈধ প্রবেশ বাধাগ্রস্থ করতে এটি ব্যবহার করা হয়। তবে এটি সীমান্তে ব্যবহারের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট আইন অনুসরণ
করতে হয়। সে আইন মিয়ানমার অনুসরণ করছে না। মিয়ানমার যা করছে তা সত্যিই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করছে।
কি করতে পারে বাংলাদেশ: স্থল মাইন নিষিদ্ধকরণ চুক্তি যেটা অটোঅ্যাপ কনভেনশন নামে পরিচিত। সেই চুক্তি অনুযায়ী কোন দেশের স্থলমাইন ব্যবহার মজুদ উৎপাদন ও হস্তান্তর নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তবে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেননি মিয়ানমার, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ভারত, পাকিস্তান, উত্তর কোরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান, ইসরাইল শাহ আরো কয়েকটি দেশ। বাংলাদেশের ১৬৪ দেশ এখন পর্যন্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষণে বলেছেন, বাংলাদেশকে এখন এই বিষয়টি কূটনৈতিকভাবে সামাল দিতে হবে নিরাপত্তা বিশ্লেষক অব অবসরপ্রাপ্ত এক মেজর জানান বাংলাদেশে অবশ্যই গোয়েন্দা কার্যক্রম আরও বাড়াতে হবে।
তবে কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তের টেকনাফ উখিয়া এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছে প্রতিবেশী দেশের অভ্যন্তরীণ যুদ্ধের কারণে। সে দেশের অভ্যন্তরে যুদ্ধ হলেও বাংলাদেশের বাসিন্দারা আহত হচ্ছেন এমনকি সীমান্তবর্তী নাফনদী দিয়ে বাংলাদেশের চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
এ অবস্থায় এই সংকট কাটাতে বাংলাদেশকে শক্ত হয়ে প্রতিবাদ জানানো এবং কৌশল গ্রহণের পরামর্শ দিচ্ছেন নিরাপদ নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।