
—ছবি মুক্ত প্রভাত
ছাত্ররা রাজনৈতিক দল গঠন করার পরও যদি সরকারে তাদের প্রতিনিধি থাকে, তাহলে সরকার নিরপেক্ষ থাকতে পারে না। তারা যদি সরকারে থেকেই নির্বাচন করেন, তাহলে তো রাজনৈতিক দলগুলো মেনে নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিবিসি বাংলাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।
বিবিসি বাংলার এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল আরো বলেন, একটা রাজনৈতিক দল গঠন করার কথা ভাবছেন জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীরা। আবার সরকারে যদি ছাত্রদের প্রতিনিধি থাকে তাহলে তো সরকার নিরপেক্ষ থাকতে পারে না।
তিনি বলেন, যেসব ব্যক্তিরা যদি মনে করেন, সরকারে থেকেই নির্বাচন করবেন, তাহলে এই নির্বাচন রাজনৈতিক দলগুলো সেটা মেনে নেবে না।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আগেও বলেছি, আমরা দ্রুত নির্বাচন চাই। যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সংস্কার, যেটা নূন্যতম সংস্কার, সেগুলো করে যত দ্রুত সম্ভব জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার কথা বলেছি আমরা।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এসব কথা প্রথম থেকেই বলেছি। আমরা বিশ্বাস করি যে, আমাদের যে অভিজ্ঞতা দেখেছি আমরা অতীতের কেয়ারটেকার সরকারগুলোতে, তাতে করে এটা অসম্ভব কিছু না। সরকার চাইলে জুন-জুলাইয়ের মধ্যে বা আগস্টের মধ্যে নির্বাচন দেওয়া সম্ভব।
নির্বাচনের সময়সীমা সম্পর্কে বিএনিপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা নির্বাচবন নিয়ে সুনির্দিষ্ট সময় বলতে চাই না। কারণ এ জন্য যে, তাতে কোনো লাভ হবে না। সরকারকেও সেটা চাইতে হবে। অন্য দলগুলোকেও চাইতে হবে। মোটকথা সবাইকেই একসঙ্গে নির্বাচন চাইতে হবে। তবে আমরা মনে করি, যতদ্রুত নির্বাচন হবে দেশের জন্য ততই মঙ্গল হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের চলমান সংস্কার সম্পর্কে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা আমাদের কথাগুলো শুরু থেকেই স্পষ্ট করে বলে আসছি। বলেছি যে, যতগুলো সংস্কারের মধ্যে হাত দেওয়া হয়েছে, অতগুলো সংস্কার করতে গেলে ১০ বছরের মধ্যেও শেষ হবে না। আর সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। দুই বছর আগে রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা দিয়েছি আমরা। তার মধ্যে এই বিষয়গুলো তো রয়েছে।’
তিনি বলেন, আমাদের দফায় সংবিধান সংস্কারের বিষয় রয়েছে। জুডিশিয়াল কমিশনের কথা আমরাই বলেছি। আমরা নির্বাচন কমিশনের কথা বলেছি। আমরা ব্যুরোক্রেসি সংস্কারের কথা বলেছি ৩১ দফায়। আবার আমরা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের কথাও বলেছি। এগুলো সব আমাদেরই প্রস্তাব। এখন সেক্ষেত্রে তারা যেটা করছেন, সেটা কী রিপোর্ট নিয়ে আসছে আমরা জানি না।
যদি রিপোর্টগুলোয় দেখা যায়, আমাদের সঙ্গে মিলে গেছে, তাহলে তো কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু যেগুলো মিলবে না, সেগুলো তো একটা ন্যুনতম কনসেনসাস হতে হবে। তারপরে সেটা হতে হবে। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, সংস্কার দেওয়া হলো, কিন্তু সেটা গ্রহণ করবে কে? তার জন্র তো আইনগতভাবে যাদের অধিকার আছে, তারাই করতে পারবে। এটাই হবে সংসদ।
তিনি বলেন, ‘সংসদ ছাড়া কোনো সাংবিধানিক সংস্কার কঠিন হবে। এমনকি অন্য অনেক বিষয় আছে, যেগুলো সংবিধানে কিছু কিছু পরিবর্তস আনার দরকার আছে। কিন্তু সেগুলো সংসদ ছাড় সম্ভব নয়। সেজন্যই আমরা মনে করি, দ্য সুনার দ্য ইলেকশন ইজ বেটার।
মুক্ত/আরআই