
গুরুদাসপুর (নাটোর). প্রেমিকার সাথে নিহত রঞ্জু আহমেদ।-ছবি ফেসবুক থেকে নেওয়া।
ফেসবুক লাইভে এসে গলায় ফাঁসি নিয়ে আত্মহত্যা করেছে রঞ্জু আহমেদ (১৫) নামের এক স্কুল শিক্ষার্থী। স্কুল পড়ুয়া এক মেয়ের প্রেমে ব্যর্থ হয়ে নিজের শয়নঘরে রশিতে ঝুলে আত্মহনন করে সে। গুরুদাসপুরের মশিন্দা ইউনিয়নের কাছিকাটা গ্রামে রোববার দিবাগত মধ্যরাতে ওই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে।
পরিবারের লোকজন টের পেয়ে দরজা ভেঙ্গে রঞ্জুর লাশ উদ্ধার করে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে গতকাল সোমবার সকালে রঞ্জুর লাশটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।
ইংরেজিতে লেখা ‘রঞ্জু আহমেদ’ নামের ফেসবুক আইডির লাইভে দেখা যায়- স্কুল ছাত্র রঞ্জু লাইভে আসার পর ঘরের চালার সাথে ঝুলানো রশিতে ঝুলে যায়। রশিতে ঝোলার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে রঞ্জু হাত-পা নাড়া দিয়ে বাঁচার চেষ্টা করে। এরপর ৩ মিনিটের মাথায় সে মারা যায়। এসময় তার ফেসবুক বন্ধুরা লাইভের কমেন্টে আত্মহত্যা না করার জন্য অনুরোধ জানান। কেউ কেউ তার পরিবারের কাছে বিষয়টি জানানোর জন্য বলেন।
আত্মহত্যার আগে রঞ্জু তার ফেসবুক আইডিতে পর পর কয়েকটি স্ট্যাটাস দেন। মৃত্যুর চারদিন আগে দেওয়া একটি স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘ছেড়ে যাওয়ার কোনো কারণ ছিলনা, তবে থেকে যাওয়ার জন্য যতেষ্ট কারণ ছিল, তাও তুমি থাকলে না।’ ৬ দিন আগের একটি স্ট্যাটাসে লেখেন, দোয়া করি প্রিয়! ভালোবাসার মানুষটাকে না পাওয়ার অসুখটা তোমার না হোক।’
এছাড়া মৃত্যুর আগে ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন- ‘সবাই ভালো থেকো আমিও ভালো থাকবো ওপারে’, মৃত্যু-হ্যাস ট্যাগ দিয়ে লেখেন, ‘শেষ আয়োজন! এবং শেষ ঠিকানা! কখন জানি মৃত্যু এসে বলবে, চলো এবার যাওয়া যাক, জিন্দা থাকলে নিন্দাতো হবেই, সাদা কাপড়ে জড়িয়ে গেলে ভালোবাসার মানুষের অভাব হয়না। সময় যখন থমকে যাবে শেষ হবে সফর! বিদায় দেবে বন্ধু-স্বজন, স্বাগত জানাবে পরপার।’ আরেকটি স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘ সরি বাবা কত কষ্ট দিয়েছি আপনাকে, হয়তো আমাকে নিয়ে আপনার অনেক স্বপ্ন ছিল।’
এদিকে রঞ্জু আহমেদের ফেসবুক আইডি ঘেঁটে দেখা গেছে, ফেসবুক আইডির প্রফাইল ছবিতে রঞ্জুর সাথে একই গ্রামের স্কুল পড়ুয়া একটি মেয়ের যৌথ ছবি পোস্ট করা আছে।
নিহত রঞ্জুর চাচাতো ভাই সোহেল রানা বলেন, এই প্রেমের বিষয়ে রঞ্জু বেশ কিছুদিন ধরেই বিষন্নতায় ভুঘছিল। তার চলাচল উদাসিন মনে হচ্ছিল। কিন্তু কেউ বুঝতে পারেনি সে আত্মহত্যার পথ বেছে নেমে। তবে রঞ্জুর পরিবার প্রেমের কারণে আত্মহত্যার ব্যপারে কোনো মেয়েকে দায়ি করেননি।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল মতিন জানান, আত্মহত্যাকারী রঞ্জুর ঘর থেকে রক্তমাখা গোলাপসহ একটি ডায়েরি উদ্ধার করা হয়েছে। এঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।