
ভারত-নেপালের নতুন চুক্তি; কতটা সহজ হবে বাংলাদেশ বাণিজ্য
বাংলাদেশের সড়ক পথে বাণিজ্যক কার্যক্রম বাড়াতে দিল্লি-কাঠমন্ডু বৈঠকে দু’দেশের বাণিজ্যিক কর্মকর্তারা। অবশেষে সম্মত হয়েছে বলে দুই দেশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে।
এই চুক্তির পর ভারতীয় রুট দিয়ে নেপাল ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য অনেকটা সহজ হয়ে যাবে। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যমা প্রধান বাণিজ্যিক সহযোগী বলা হচ্ছে। কেননা এ চুক্তিতে সমুদ্র পথের সাথে সরাসরি কোন সংযোগ নেই তাই কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশী বন্দর গুলো ভারতীয় বন্দরের বিকল্প হতে পারে।
আসলে চুক্তিতে কি আছেঃ গত সপ্তাহে কাঠমন্ড রুটে ভারত নেপাল আন্তঃসরকার বাণিজ্য পরিবহন কমিটির দুই দিনের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে নেপাল থেকে ওই বৈঠকের নেতৃত্ব দেন শিল্প বাণিজ্য ও সরবরাহ মন্ত্রণালয়ের সচিব গোবিন্দ বাহাদুর কার্কি। অপরদিকে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন সুনীল বার্থওয়াল। বৈঠকে তারা একাধিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করা হয় বলে জানাগেছে।
নেপাল-ভারতের বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরে দুই দেশের দুই কর্মকর্তা - ছবি সংগ্রহিত
নেপালের পূর্ব সীমান্ত কাকারভিট্টা থেকে ভারতের ফুলবাড়ি হয়ে বাংলাদেশের বাংলাবান্ধা পর্যন্ত ট্রানজিট ব্যবস্থা সহজকরার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত ছিল। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতে বলা হয়েছে- নেপালের মধ্যে ভারত ফুলবাড়ী থেকে কাঁকড়াভিট্টা বাংলাবান্ধা রোড দিয়ে কার্বন ট্রানজিট এর অনুমোদন দিয়েছে এক্ষেত্রে ভারতের সড়ক পরিবহন ও প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী টু এক্সেল যানবাহনের জন্য সর্বোচ্চ এক্সেল ওজন ১৮.৫ টন এবং থ্রি-এক্সেল যানবাহনের জন্য সর্বোচ্চ ওজন ১৮ টন নিতে পারবে। এর অতিরিক্ত হতে পারবে না বলে কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ীরা আশা করছেন। নতুন ব্যবস্থাটি তাদের সম্মতি অনুযায়ী শিগগিরই বাস্তবায়িত হবে।
বাংলাদেশের এর সুবিধা কিঃ নেপালের পক্ষে নেতৃত্বদানকারী দেশটির বাণিজ্য সচিব কার্কি বলছেন এই চুক্তি নেপাল এবং বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য আরো সহজ করবে আমরা আরো অনুরোধ করছি যাতে এই রুটে পরিবহন আরও সহজ করা যায় আমরা ইতিমধ্যে ইতিবাচক সারা পেয়েছি।
ন্যাফা এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নরেশ কুমার আগারওয়াল বলেছেন, এই চুক্তি দীর্ঘদিনের দাবি সমাধান করছে তিনি বলেন এখন থেকে আমাদের ট্রাক এবং ভারতীয় রাস্তা ভারতীয় ট্রাকের ক্ষেত্রে একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে আগে ভুটান এই ধরনের সুবিধা পেয়েছিল আমরা বলেছিলাম যে আমাদেরও একই সুবিধা থাকা উচিত এতে করে নেপাল থেকে রপ্তানি বাংলাদেশ থেকে আমদানির সময় এর ফলের পণ্য দাম কমবে যার সুবিধা ভোক্তারা পাবেন।
নেপাল ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে,- কাঠমান্ডু-ঢাকার মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারিত হচ্ছে। সামনে আরো বড় বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। নেপালের বাণিজ্য রপ্তানি উন্নয়ন কেন্দ্র তথ্য অনুযায়ী- দেশটি থেকে প্রধানত মসুর ডাল বীজ, আমরা, এলাচ, জুস এবং অন্যান্য জিনিসপত্র বাংলাদেশের রপ্তানি করা হয়। সম্প্রতি নেপাল ভারতে রাস্তাঘাট বাংলাদেশ থেকে নেপালের রপ্তানি হওয়া প্রধান পণ্যের মধ্যে রয়েছে তৈরি পোশাক ওষুধ বৈদ্যুতিক পণ্য। গত অর্থবছর নেপাল থেকে বাংলাদেশে প্রায় ৫৫ কোটি ৫০ লাখ নেপালি পণ্য রপ্তানি করা হয়েছে যেখানে বাংলাদেশ থেকে ৪২২ কোটি টাকা পণ্য আমদানি করা হয়েছে।