
ছবি সংগীত
পুরান ঢাকার বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ আদালতের পরিবর্তে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সংশ্লিষ্ট আদালতে বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার কাজ চলবে বলে জানিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে আজ রোববার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন ও বিচার বিভাগ।
আইন ও বিচারবিভাগের ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়- বলা হয়, পুরান ঢাকার বকশিবাজারের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ আদালতের পরিবর্তে বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার কাজ পরিচালনা করা হবে কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগার সংশ্লিষ্ট আদালতে।
এর আগে পুরান ঢাকার বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে অবস্থিত অস্থায়ী বিশেষ আদালতের এজলাসকক্ষে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে এজলাসকক্ষ এমনভাবে পুড়ে গেছে যে—কোনো সংস্কার না করলে সহসা এখানে বিচারকাজ করা সম্ভব হবে না। রাষ্ট্রপক্সের প্রধান কৌঁশুললি (পিপি) বোরহান উদ্দিন বৃহস্পতিবার এই কথা জানান।
এই বিশেষ আদালতে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা বিস্ফোরক দ্রব্য মামলার শুনানির দিন ধার্য ছিল কত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে। কিন্তু আগুনে এজলাসকক্ষ পুড়ে যাওয়ার ফলে মামলার শুনানি হয়নি।
পিপি বোরহান উদ্দিন বরেন, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলার শুনানির পরবর্তী তারিখ ওই দিন বিকেলে ঘোষণা করেন আদালত। আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ আদালতের এজলাসে ভাঙচুর শেষে আগুন দেওয়া হয়।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের দায়িত্বেরত কর্মকর্তা রোজিনা আক্তার বলেন, বুধবার দিনগত রাত ৩টা ১০ মিনিটের দিকে আগুন লাগার খবর পান তারা। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। তবে এময় ফায়ারকর্মীদের বাধা দেওয়া হয়। বাধার মুখে আগুন নেভাতে পারেননি দমকল বাহিনী। বৃহস্পতিবার সকালে সোয়া ১০ টার দিকে ফায়ারকর্মীরা আবারো ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, এজলাসকক্ষ পুড়ে গেছে। পরে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ফিরে আসেন।
পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, গত ৫ আগস্ট এবং এরপরে বিভিন্ন সময় বকশীবাজারের বিশেষ আদালতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। তবে বুধবার দিবাগত রাত কিংবা আজ সকালে সেখানে আগুন লাগার কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই।
এদিকে অস্থায়ী বিশেষ আদালত মাঠ থেকে সরিয়ে নেওয়ার দাবিতে গতকাল রাত একটার দিকে সড়ক অবরোধ করেন আলিয়া মাদরাসার শিক্ষার্থীরা। ১০ ঘন্টা পর বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টার দিকে তারা সড়ক থেকে সরে যান। মাঠে এই আদালত বসানোর প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। তারা আদালত সরিয়ে নেওয়ার দাবি করেছেরন।
১৫ বছর আগে ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালিন সীমান্তরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) সদর দপ্তর ঢাকার পিলখানায় বিদ্রোহ হয়। বর্তমানে এই বাহিনীর নাম বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বিদ্রোহে বিডিআররের তৎকালিন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। সব মিলিয়ে ৭৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পিলখানায় বিডিআরের বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্ব পালনরত সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যরাও সেদিন নৃশংসতার শিকার হন।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২০০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি হত্য ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে পৃথক মামলা হয়। এর মধ্যে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় বিচারিক আদালত ও হাইকোর্ট ইতিমধ্যে রায় দিয়েছেন। তবে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় বিচারিক আদালতে এখনো সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে।