
—ছবি মুক্ত প্রভাত
টোকাই রাশেদ ওরফে মুরগী রাশেদ ওরফে প্রয়োজনে রাশেদ বিভিন্ন নামে তাকে চেনেন রাজারহাটের মানুষ। মূলতঃ তার নাম রাশেদুল ইসলাম। তার বাবা স্থানীয় হাট-বাজারে হাঁস-মুরগী বেচাকেনা করে সংসার চালান। ছোট বেলায় রাশেদুলও তার বাবার মুরগী ব্যবসার সহযোগী ছিল জানান এলাকাবাসী। বড়ভাই কাঠমিস্ত্রী।
অনেক কষ্টের মধ্যেও তার বাবা তাকে শিক্ষিত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু হয়নি। কোন রকম ভাবে এসএসসি পাস করার পর রাজারহাট এম আই ডিগ্রি কলেজ থেকে কয়েকবার চেষ্টা করেও আইএ পাস করতে পারেনি রাশেদুল।
এরপর রাজনৈতিক দলে ভর্তি হয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠে রাশেদুল। সর্বশেষ সে ২মে ২০২২ইং বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক লীগ রাজারহাট উপজেলা শাখার অনুমোদিত আহবায়ক কমিটির ১২নম্বর সদস্য হিসেবে নিজের নাম স্থান করে নেয়।
রাজনৈতিক দলের সদস্যের পাশাপাশি নিজেকে সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিত রাশেদ। সামান্য কয়েকটি টাকা হলেই সে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাকে ফেসবুকে প্রশংসায় ভাসিয়ে দিতে পারতো। টাকার বিনিময়ে ফেসবুক লাইভও করতে পারে সে।
রাজনৈতিক ও সাংবাদিক পরিচয়ে মানুষকে ভয়ভীতি ও হুমকী ধামকি দিয়ে হয়রানী-চাঁদাবাজি করে সে অল্প দিনেই একটি মোটর বাইকের মালিক বনে যাওয়ারও জনশ্রুতি রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
শুধু সাংবাদিক পরিচয় নয়,রাশেদের ফেসবুক প্রফাইলে দেখা যায়,সে নিজেকে উলিপুর উপজেলার সাকসেস রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের ডিসপ্লে,কুচকাওয়াজ,কোরিওগ্রাফি ও শারীরিক শিক্ষক হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। শুধু এসএসসি পাসের যোগ্যতা দিয়ে কিভাবে এধরনের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক হওয়া যায় এনিয়েও জনমনে রয়েছে নানা প্রশ্ন। করনা কালীন সময় প্রথম সাংবাদিক পরিচয়ে ব্যাপক দৌড় ঝাপ শুরু করে রাশেদ। রাজারহাটেরই একটি অপসাংবাদিক চক্রের (বর্তমানে পলাতক) দ্বারা সে পরিচালিত হতো।
রাজনৈতিক বিভিন্ন মিছিল-মিটিংয়েও সরব ছিল টোকাই রাশেদ। সর্বশেষ গত ৪ আগষ্ট তার নেতৃত্বে রাজারহাট উপজেলায় এক দফার কবর দে বলে বৈষম্য বিরোধি আন্দোলনের বিপক্ষে মিছিল করেছিল রাশেদুল।
এছাড়াও সব সময় তার ফেসবুকে নানা রকম উস্কানি মূলক ও দালালি পোস্ট দিয়ে ভীতি প্রদর্শন করে সুবিধা লুটতো তেলবাজ রাশেদুল। এমনকি বৈষম্য বিরোধি আন্দোলনে থাকা ছাত্রদের নামের লিস্ট করার হুমকী দিয়ে আর্থিক সুবিধা নেয়ার চেস্টা চালায় রাশেদুল।
পরে নানা অভিযোগ ও রাষ্ট্রদ্রোহি ষড়যন্ত্রের অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় শুক্রবার সকালে রাজারহাট উপজেলা সদরের মেকুরটারী তেলিপাড়া গ্রামের বাড়ি থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এরআগে সে দীর্ঘ ৫মাস পালিয়ে ছিল।
এদিকে রাশেদুল গ্রেফতারের পর থেকে এলাকার লোকজন বলাবলি করছেন,প্রয়োজনে রাশেদ নয়,প্রয়োজনে ডাস্টবিন ব্যবহার করুন।
রাজারহাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রেজাউল করিম রেজা গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রাষ্ট্র বিরোধি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে রাশেদুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।