
—ছবি মুক্ত প্রভাত
কুড়িগ্রামের চিলমারীর চরাঞ্চলের নারীরা এখন শাক সবজি বীজ, ভেড়া পালন করে সুখের স্বপ্ন বুনছেন। নানান চড়াই উৎরাই পেরিয়ে জীবন যাপন করে আসছেন চরাঞ্চলের মানুষেরা। কখনো নদী ভাঙ্গনে নিঃস্ব হচ্ছেন আবারো নদীর বুকে ফসল ফলিয়ে সাফলতা অর্জন করে আসছেন।
চিলমারী, নয়ারহাট, অষ্টমীরচর ইউনিয়নের চরাঞ্চলের সফলতা আর স্বচ্ছলতা মানুষের মাঝে ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘদিন থেকে কাজ করছেন ফ্রেন্ডশিপ নামে একটি বে- সরকারি এনজিও।
কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় বেসরকারি এনজিও ফ্রেন্ডশিপের সহযোগিতায় নদী ভাঙ্গন কবলিত মানুষের জন্য গুচ্ছ গ্রাম গড়ে তুলে মাথা গোজার ঠাঁইসহ বসবাসের ব্যবস্থা ও আশ্রয় নেয়া পরিবারের জন্য ফ্রেন্ডশিপের ট্রানজিশনাল ফান্ড প্রকল্প (এএসডি) প্রকল্পের মাধ্যমে ২০১৭ সাল থেকে ১ হাজার ২ শত ৬০টি পরিবারকে বিভিন্ন শাক সবজি বীজ, ভেড়া প্রদানসহ প্রশিক্ষনের মাধ্যমে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিয়ে আসছে।
এতে করে নদী ভাঙ্গনের শিকার চরাঞ্চলের পরিবার গুলোর মধ্যে ফিরছে স্বচ্ছলতা। এছাড়াও আইনি সহায়তাও দিয়ে আসছে এনজিওটি।
নয়ারহাট ইউনিয়নের নাইয়ার চর ফ্রেন্ডশিপ গুচ্ছ গ্রামে বসবাসরত মোছা. রোসনা বেগম জানান, আধুনিক পদ্ধতিতে শাক-সবজি উৎপাদনের প্রশিক্ষণ পাওয়ার পর আমি ফেন্ডশিপ এএসডি এর সহয়োগিতায় বসতবাড়ীতে সবজি উৎপাদন করে নিজেদের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করছি সেই টাকা সঞ্চয় করছে।
একই ইউনিয়নের সালমা বেগম বলেন জানান , ফ্রেন্ডশিপের ট্রানজিশনাল ফান্ড প্রকল্পের মাধ্যমে সবজি বীজ ছাড়াও ভেড়া পালন করে আসছি, সবজি থেকেও আয় করছি এবং ভেড়া পালন করেও টাকা রোজগার করছি। এখন স্বামী সন্তান নিয়ে সুখে শান্তিতে আছে।
নয়ারহাট ইউনিয়নের শাহিনুর বেগম জানান, এএসডি প্রকল্প থেকে কেঁচো সার তৈরীর প্রশিক্ষণ পাওয়ার পর বসতবাড়ীতে কেঁচোসার উৎপাদন করছে এবং প্রতিমাসে প্রায় ২ হাজার টাকার কেঁচো সার বিক্রি করছে।
ফ্রেন্ডশীপ এর ট্রান্সজিশনাল ফান্ড (এএসডি) প্রজেক্টের রিজিওনাল কুড়িগ্রামের ম্যানেজার কৃষিবিদ মোঃ আশরাফুল ইসলাম মল্লিক জানান, ফ্রেন্ডশিপ লুক্সেমবার্গ এর সহায়তায় সদস্যদের আয় রোজগার নিয়মিতকরণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন , সুশাসন এবং স্থানীয় অবকাঠামো উন্নয়ন সহ বিভিন্ন উপজেলার ১৪টি চরে এ বছর ৪২০ জন সদস্যকে এ প্রকল্পে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কুমার প্রণয় বিষাণ দাস জানান, এনজিও প্রকল্পের পাশাপাশি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপকারভোগীদের পূর্বের ন্যায় প্রশিক্ষণ প্রদানসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নে সর্বাত্নক সহযোগিতা করে আসছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ সাগরিকা কার্জ্জী জানান, চিলমারী উপজেলায় ফ্রেন্ডশিপের ট্রানজিশনাল ফান্ড প্রকল্পের মাধ্যমে এ বছর ২৪০টি পরিবারকে ভেড়া প্রদানসহ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে; ফলে পরিবারগুলোর ভেড়া পালনের মাধ্যমে স্বল্প সময়ে অধিক আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।