
—ছবি মুক্ত প্রভাত
বিএনপির জনসভা মঞ্চে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলকের শ্যালিকা ফারজানা রহমান উপস্থিত থাকায় রাজনৈতিক অঙ্গনে সমালোচনা শুরু হয়েছে। সমালোচনার মুখে পলকের আপন চাচাশ্বশুড় সিংড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আনোয়ারুল ইসলামকে কারণদর্শানোর নোটিশ দিয়েছে নাটোর জেলা বিএনপি।
শুক্রবার বিকেলে সিংড়া উপজেলার কোর্ট মাঠে অনুষ্ঠিত জনসভায় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুও একই মঞ্চে ছিলেন। জনসভায় সভাপতিত্ব আহ্বায়ক আনোয়ারুল। পলকের শ্যালিকা ফারজানা রহমান বিএনপির আহ্বায়ক আনোয়ারুলের ভাতিজী।
বিএনপির স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, সিংড়া উপজেলা ও পৌর বিএনপির যৌথ আয়োজনে শুক্রবার জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা দুলু। তার সঙ্গে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা কাজী গোলাম মোর্শেদ, নাটোর জেলা বিএনপির সদস্যসচিব রহিম নেওয়াজ, যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ এমদাদুল হক আল মামুনও মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন। এসময় রহিম নেওয়াজ ও শেখ এমদাদুল হক আল মামুনের ঠিক পেছনের চেয়ারেই বসে ছিলেন পলকের শ্যালিকা ফারজানা রহমান। বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের কর্মী-সমর্থকেরা ছবি এবং ভিডিও ধারণ করে শুক্রবার রাতেই ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বিএনপিতে ব্যপাক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
সিংড়া পৌর বিএনপির সদস্যসচিব তায়েজুল ইসলাম বলেন, পলকের শ্যালিকা ফারজানা রহমান যুব মহিলা লীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। নৌকার নির্বাচনী প্রচারণা, হাসিনাপূত্র জয়ের হাত থেকে পুরষ্কার নেওয়াসহ ফারজানাকে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে দেখা যেত। অথচ ওই নারীকে বিএনপির জনসভা মঞ্চে বসতে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি দলের জন্য লজ্জাজনক।
এই ঘটনায় গতকাল শনিবার নাটোর জেহলা বিএনপির আহ্বায়ক দেয়ান শাহীন উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আনোয়ারুল ইসলাম আনুকে কারণদর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন। আগামী ৮৪ ঘন্টার মধ্যে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে স্বশরীরে হাজির হয়ে ব্যাখা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জনসভার সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, তিনি জনসভার কার্যক্রম নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। মঞ্চে অনেকেই বসেছিলেন। এর মধ্যে ফারজানা রহমান যে বসে আছেন, তা তিনি খেয়াল করেননি।
এ বিষয়ে ফারজানা রহমান বলেন, যুব মহিলা লীগে তার কোনো পদ ছিলনা। বিএনপির সভামঞ্চে বসে থাকার বিষয়েও তার কোনো রানৈতিক অভিপ্রায় ছিলনা। মূলত তিনি সামাজিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের ধারাবাহিকতায় বিএনপির জনসভার মঞ্চে বসেছিলেন।
জনসভার প্রধান অতিথি কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, পলকের শ্যালিকা ফারজানা রহমানসহ সিংড়ার অনেককেই তিনি চেনেন না। মঞ্চে ফারজানার আসন গ্রহণের বিষয়টি খেয়াল করতে পারেননি তিনি। তবে সভা চলাকালে ঘটনাটি জানার পর ফারজানাকে মঞ্চ থেকে নেমে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন।
বিএনপির (রাজশাহী) সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন শওকত বলেন, বিষয়টি তিনি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জেনেছেন। দলের কেউ তাঁকে জানাননি। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।