কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় খরিপ-২ আওতায় শীতকালীন সবজি চাষ করা কৃষকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।
অনেক ক্ষেতে পানি ওঠায় গাছ নষ্ট হয়েছে। এতে কৃষকের লক্ষাধিক টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি বিভাগ । মাঠের পর মাঠ সবজির ক্ষেতে এখন পানি উঠে আছে।
সম্প্রতি টানা বৃষ্টিতে উপজেলার কয়ড়া ইউনিয়ের কৃষ্টপুর, রতন কয়ড়া, দদূর্গানগর ইউনিয়নের মহেশপুর এলাকার কয়েকজন কৃষকদের বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজির ক্ষেতে পানি জমে থাকায় কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কয়েক দিনের ভারী বর্ষণের কারণে এমন ক্ষতি হয়েছে বলে কৃষকরদের দাবি।
কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায় এবারে খরিপ-২ এর আওতায় ২৭০ হেক্টর জমিতে কৃষক শাক-সবজির আবাদ করেছিল। এরমধ্যে ১২৪ শতাংশ সবজির খেত পুরোপুরি নষ্ঠ হয়ে গেছে। যা ক্ষতির পরিমান প্রায় ২ লাখ টাকা।
অনেক মাঠ পুরোটাই তলিয়ে গেছে। আবাদ করা সবজির ক্ষেত পানির নিচে থাকায় উৎপাদনে ধস নামতে পারে বলে শঙ্কা করছে কৃষক ও কৃষি বিভাগ। মাঠের পর মাঠ এমন ক্ষতি হওযায় কৃষকের মাথায় হাত। পানি জমে থাকা সবজির খেত থেকে এখন কৃষকরা বিভিন্ন ধরনের সবজি তুলছেন।
বৃষ্টির কারনে বীজ তলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এবারে ফুলকপি, টমেটো, বেগুন, শসা, লালশাক গাজরসহ লাভের আশায় শীতকালীন সবজির আবাদ করা হয়েছিল। তবে অসময়ের বৃষ্টিতে খরচের টাকাও তুলতে পারবেন কিনা তা নিয়ে দূশ্চিন্তায় সবজি চাষীরা।
দূর্গানগর ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামের কৃষক হোসেন আলী জানান, সবজি চাষে এবারে ভালো লাভবান হওয়ার আশায় ৫০ শতক জমিতে শসা আবাদ করেছিলাম। এই জমিতে খচর হয়েছে ৬৫ হাজার টাকা।
তবে লাভ তো দূরের কথা করচের টাকাও উঠবে না। এই অঞ্চলে টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সবজি খেত তলিয়ে গেছে। এবং শসা খেতের জমিতে পানি জমে থাকায় শসা পঁচে যাচ্ছে।
পানি বের করার জন্য জমির ভিতর দিয়ে ড্রেন করেও কোন উপকার আসছে না। এখন পর্যন্ত ২ বার ২ হাজার ৭ শত টাকার শসা বিক্রি করেছে। আর বাকি সব ফল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তারপরো জমি থেকে কিছু পরিমান শসা তুলে বিক্রি করার চেষ্টা করছি।
কয়ড়া ইউনিয়নের কৃষ্টপুর গ্রামের কৃষক আলম হোসেন বলেন, এবারে ১ বিঘা জমিতে টমেটোর চারা রোপন করেছিলাম। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে সব চারা নষ্ট হয়ে গেছে আর ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার টাকা।
এছাড়াও ১২ শতক জায়গাতে মুলার আবাদ করা হয়েছিল সেটাও নষ্ট হয়েছে। এবারের ক্ষতিতে একেবাওে শেষ হয়ে গেলাম। প্রচন্ড খরা শেষে সবজির খেতে কীটনাশক ব্যবহার করার পর টানা বৃষ্টিতে তা ধুয়ে যায় এবং জমিতে পানি জমায় সকল সবজির বীজতলা ও চারা নষ্ট হয়ে গেছে।
এবিষয়ে উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমি বলেন, এবারে খরিপ-২ এর আওতায় ২৭০ হেক্টও জমিতে সবজি চাষ করা হয়েছিল। এর মধ্যে ১২৪ শতাংশ জমির সবজি পুরো পুরি নষ্ট হয়ে গেছে।
টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে কৃষকরা সব ধরনের সবজির আবাদেই ক্ষতির মুখে পড়েছেন। প্রকৃতির ওপর কারও হাত নেই। তবে এই সব ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের তালিকা করে কৃষি অফিস থেকে সহযোগীতা করা হবে বলে জানালেন এই কর্মকর্তা।