সংবাদ প্রকাশের জের ধরে গুরুদাসপুরের এক গণমাধ্যমকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। খুবজীপুর এম হক ডিগ্রী কলেজের দর্শন বিষয়ের প্রভাষক মো. রবিউল করিম বাদি হয়ে গুরুদাসপুর আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন গত ৫ সেপ্টেম্বর।
মামলায় উপজেলার খুবজীপুর ইউনিয়নের বামনবাড়িয়া গ্রামের ভুক্তভোগি কৃষক হায়দার আলী (৭০), আমিরুল ইসলাম (৪২), আফতাব আলী (৫৫), নাজমুল হক (৩০), মোজাম্মেল হক (৬৫), মো. ফজলার সরকার (৬৫), মো. ভোলা (৮০) ও ইত্তেফাকের গুরুদাসপুর সংবাদদাতা মো. রাশিদুল ইসলামকে আসামি করা হয়। মামলাটি বর্তমানে নাটোরের ডিবি তদন্ত করছে।
মূলত বগুড়া পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপপরিচালক রফিকুল ইসলাম শফি ও তার ছোট ভাই বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক মো. শওকত আলীর নামে ২৬ আগস্ট ইত্তেফাকের অনলাইন সংস্করণে ‘কোটিপতি দুই ভাইয়ের ভয়ে তটস্ত গ্রামের মানুষ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে বামনবাড়িয়া গ্রামের স্থানীয় ভুক্তভোগি কৃষক হায়দার আলী, আমিরুল ইসলাম, আফতাব আলীসহ অন্তত ২০জন কৃষক লিখিত এবং ভিডিও বক্তব্য দেন। বক্তব্যে রফিকুল ইসলাম শফি, মো. শওকত আলী ও প্রভাষক রবিউল করিমের বিরুদ্ধে জমাজমি দখলসহ নানা অভিযোগ তুলে ধরা হয়।
এতে শিক্ষক রবিউল করিমের ৫ কোটি টাকার মানহানি হয়েছে মর্মে আদালতে একটি মানহানি মামলা দায়ের করা হয়। এতে রাশিদুল ইসলামের নামটি ৮ নম্বর বিবাদি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে গণমাধ্যমকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রতিবাদ ও অবিলম্বে মামলাটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে আলোচনা সভা করেছেন গুরুদাসপুরের সাংবাদিক মহল। এসময় উপস্থিত ছিলেন, গুরুদাসপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি যুগান্তরের গুরুদাসপুর প্রতিনিধি দিল মোহাম্মদ, চলনবিল প্রেসক্লাবের সভাপতি কালের কণ্ঠের এম এম আলী আক্কাছ, প্রথম আলোর আনিছুর রহমান, রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি সাজেদুর রহমান, ইত্তেফাকের রাশিদুল ইসলাম, কালবেলার মিজানুর রহমান, সমকালের নাজমুল হাসান নাহিদ, মানবকণ্ঠের জালাল উদ্দিন, সকালের সময়ে’র আতিকুর রহমান, বাংলাদেশ বুলেটিনের রহমত আলী প্রমূখ।
সাংবাদিক দিল মোহাম্মদ, আলী আক্কাছ ও আনিছুর রহমান মামলাটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেন, সাংবাদিকতার নিয়মানুযায়ী সাংবাদিক সম্মেলনের সংবাদ প্রকাশ করা গণমাধ্যমকর্মীদের দায়িত্ব। ইত্তেফাকে সংবাদ প্রকাশ করে সেই দায়িত্বই পালন করেছেন রাশিদুল ইসলাম। অথচ ঈষান্বিত হয়ে সাংবাদিককে প্রতিপক্ষ সাজিয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি অগ্রহণযোগ্য ও বিব্রতরকর।
তারা বলেন, মামলার বাদি মো. রবিউল করিম দর্শন বিষয়ের শিক্ষক হয়েও মনোবিজ্ঞান বিষয়ে বেতন/ভাতা উত্তোলন করেছেন। এটি এমপিও নীতিমালা বহির্ভূত। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
মামলার বাদি প্রভাষক মো. রবিউল করিম বলেন, ‘আমার বক্তব্য না নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে মানহানি মামলাটি দায়ের করেছি’।