সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার পঞ্চক্রোশী ইউনিয়নের সদাই গ্রামের মাঝে ফুলজোর নদীর শাখা খালের উপর নবনির্মিত বক্স কালভার্টটি শনিবার রাতে ধ্বসে পড়েছে।
ফলে উভয় পাড়ের লোকজনের যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে। পঞ্চক্রোশী ইউনিয়ন পরিষদের ইউনিয়ন পরিষদ উন্নয়ন সহায়তা তহবিলের প্রকল্প থেকে ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৮ ফুট লম্বা এবং ১৪ ফুট চওড়া এই বক্স কালর্ভাটটি নির্মান করা হয়।
৩ মাস আগে এই কালর্ভাটটি স্থানীয় লোকজনের চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। কালর্ভাট নির্মান প্রকল্পের সভাপতি ছিলেন উক্ত ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল আলীম। স্থানীয়দের অভিযোগ নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কালভার্টটি তৈরি করায় এটি ভেঙ্গে পড়েছে। প্রকল্প সভাপতি বলছেন প্রবল বৃষ্টির কারণে দুই পাশ ও নিচের মাটি সরে যাওয়ায় কালভার্টটি ধ্বসে পড়েছে।
সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন, আবু সালে, আরজান আলী, ইসলামাইল হোসেন, আব্দুস সালাম, শেফালী বেগম, সবুজ আলী ও বেলাল হোসেন অভিযোগ করেছেন, পঞ্চক্রোশী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এই ওয়ার্ডের পাশাপাশি সদাই ও রাঘবড়িয়া গ্রামের লোকজনের যাতায়াতের সুবিধার্থে চলতি অর্থ বছরে সদাই গ্রামের মধ্যে এই কালভার্টটি তৈরি করা হয়।
মাত্র ৩ মাস আগে এটির কাজ সম্পন্ন হবার পর জনগণের চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। ইউনিয়ন পরিষদের কথিত তহবিলের প্রকল্পের প্রথম কিস্তি থেকে এটি নির্মানের জন্য ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
এই প্রকল্পের কাজের সভাপতি ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল আলীম। তিনি নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার এবং সময় মতো কাজের তদারকি না করায় এটি নির্মানের ৩ মাসের মধ্যেই সামান্য বৃষ্টিতে ধ্বসে গেল। তারা অবিলম্বে এই বক্স কালভার্ট নতুন করে নির্মানের দাবি জানিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের প্রতি।
এ ব্যাপারে পঞ্চক্রোশী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ও উক্ত প্রকল্পের সভাপতি আব্দুল আলীম তার বিরুদ্ধে আনিত নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে কালভার্ট নির্মানের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি উন্নত সামগ্রী ব্যবহার করেছেন এ কাজে।
কিন্তু প্রবল বৃষ্টির কারণে খালের দুই পাশের মাটি এবং নিচের অংশের কিছু মাটি ধ্বসে যাওয়ায় কালভার্টটি ভেঙ্গে পড়েছে। বর্তমানে খালে অনেক পানি। আগামী দু এক মাস পরে পানি কমে গেলে তিনি এই ভেঙ্গে যাওয়া কালভার্টটি সংস্কারের ব্যবস্থা করবেন।
সদাই গ্রামে বক্স কালভার্ট ধ্বসে পড়ার কারণ সম্পর্কে উল্লাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী আবু সায়েদের সঙ্গে কথা বললে তিনি তিনটি কারণ উল্লেখ করেন। প্রথমতঃ নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রীর ব্যবহার। দ্বিতীয়তঃ কালভার্টের ভার বহনের ক্ষমতা খালের নিচের মাটিতে সহনীয় অবস্থা ছিল কিনা। বিশেষ করে অনেক ক্ষেত্রে নিচের বেজ ঢালাইয়ের গভীরতা কম বেশির উপর কালভার্টের স্থায়ীত্ব নির্ভর করে। এক্ষেত্রে হয়তো বেজের গভীরতা কম ছিল। তৃতীয়তঃ খালের পানির স্রোতের তিব্রতা অনেক সময় কালভার্টের ভেতর দিয়ে পানি নিষ্কাশন বাধা গ্রস্থ করে। সে ক্ষেত্রে কালভার্টের মুখের প্রশস্ততা কম হলে এটি ভেঙ্গে যেতে পারে বলে উল্লেখ করেন এই প্রকৌশলী।
এ বিষয়ে পঞ্চক্রোশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম ফিরোজ জানান, ৩ লাখ টাকায় এই জাতীয় কালভার্ট যথাযথভাবে নির্মান করা কখনই সম্ভব নয়। তারপরেও স্থানীয় জনগণের সমস্যা সমাধানে তার সদস্য এটি তৈরি করেছিলেন। নতুন করে কালভার্টটি নির্মান করার দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।