রাজনৈতিক বিরোধে বিভক্ত হয়ে পড়েছে গুরুদাসপুর পৌর বিএনপি। একে অপরের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা পরিপন্থি নানা অভিযোগ এনে পাল্টাপাল্টি সাংবাদিক সম্মেলনও করেছেন সভাপতি মশিউর রহমান বাবলু ও সাধারণ সম্পাদক দুলাল সরকার। এখন দলীয় কোন্দলে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন পৌর বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
দলীয় সূত্র বলছে— স্বৈরাচার সরকার পতনের পর প্রাণ ফিরে পেয়েছে তৃণমূল বিএনপি। এরই মধ্যে দলীয় কোন্দলে জড়িয়েছে গুরুদাসপুর পৌর বিএনপি। তিন বছর মেয়াদি পৌর বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়েছিল ২০২২ সালে। ওই কমিটিতে সভাপতি মশিউর রহমান বাবলু ও সাধারণ সম্পাদক দুলাল সরকারকে মনোনীত করা হয়। অথচ এই দুই নেতাই দলের ভেতর বিভেদ সৃষ্টি করছেন। তাদের কোন্দলে বিভক্ত হচ্ছেন সাধারণ কর্মী সমর্থকরাও।
মূলত গণমাধ্যমকর্মী আনিসুর রহমানের সিনে কমপ্লেক্স ভাংচুর, লুটপাটের অভিযোগ অস্বীকার করে মঙ্গলবার দুপুরে গুরুদাসপুর থানা শিক্ষাসংঘে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে সাধারণ সম্পাদক দুলাল সরকারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরেন সভাপতি মশিউর রহমান বাবলু। এসময় তার পক্ষে পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, বজলুর রহমান, ছাত্রদল নেতা সেলিম শাহ, কৃষক দলের সভাপতি আব্দুল হামিদ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ২০২২ সালে চাঁচকৈড় বাজারস্ত একটি গুদামঘর আনিসুর রহমানকে ভাড়া দেন তিনি। কিন্তু সময় গড়ালেও এখন পর্যন্ত ভাড়া পরিশোধ করেননি আনিসুর রহমান। তাছাড়া ওই সিনেমা হলে অনৈতিক কার্যকলাপ চলায় স্থানীয় লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ৮ আগষ্ট সন্ধ্যায় হলটিতে হামলা চালান। অথচ ওই হামলার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে আনিসুর রহমান মামলা দায়ের করেছেন।
তিনি বলেন, পৌর মেয়র হওয়ার স্বপ্নে বিভোর হয়ে দুলাল সরকার তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সংকট তৈরির অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। অথচ বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন দুলাল সরকার। সম্প্রতি থানার ভেতরে তার সাথে অশালিন আচরণ করেছেন তারই কমিটির সাধারণ সম্পাদক। তাছাড়া হলের মালিক আনিসুর রহমানকে অর্থনৈতিকসহ নানাভাবে সহযোগিতা দিয়ে রাজনৈতিক এবং সামাজিকভাবে হেয় করার চেষ্টা করছেন। আওয়ামী লীগের সাথে সখ্যতাসহ আওয়ামী নেতাকর্মীদের পূনর্বাসনও করছেন দুলাল সরকার।
এদিকে মশিউর রহমান বাবলুর সাংবাদিক সম্মেলনের পর পরই দুপুর আড়াইটায় পাল্টা সাংবাদিক সম্মেলন ডাকেন সাধারণ সম্পাদক দুলাল সরকার। এসময় তার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, পৌর বিএনপি জ্যেষ্ঠ সহ সভাপতি নাজমুল করীম নজু, যুগ্ম সম্পাদক মিলন মাহমুদ, পৌর বিএনপি নেতা হাবিব শেখ, ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক মাসুদ রানা, ছাত্রদল নেতা আব্দুল আলীম প্রমূখ।
দুলাল সরকার বক্তব্যে বলেন, গুরুদাসপুর পৌর বিএনপির সভাপতি মশিউর রহমান বাবলুর বিরুদ্ধে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ, আওয়ামী লীগের সাথে আঁতাত, চাঁদাবাজি, হামলা-ভাংচুর, লুটপাট শিক্ষা সংঘ দখল করে অফিস বানানোসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া মদন শর্মা নামের নেশাগ্রস্ত এক আওয়ামী লীগ নেতাকে ব্যবহার করে তার বিরুদ্ধে নানা ধরণের অপপ্রচার চালাচ্ছেন সাবেক মেয়র বাবলু।
মূলত মাস দেড়েক আগে তিনি পৌর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আগ্রহ প্রকাশ করার পর থেকেই তার জনপ্রিয়তা নষ্ট করতে নানাভাবে প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন সভাপতি মশিউর রহমান বাবলু। এসব বিষয় তিনি দলের উচ্চ পর্যায়ে অবগত করেছেন।
গুরুদাসপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল আজিজ মোবাইল ফোন না ধরায় এ ব্যপারে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া য়ায়নি।