
জামালপুরে সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে হত্যা, লাশ গুম ও ১০কোটি টাকার মানহানি মামলা- ছবি মুক্ত প্রভাত
সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান (৪৯) বিরুদ্ধে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় ১০ হাজার কোটি টাকার মানহানির মামলা ছাড়াও মাসুদ নামে ছাত্রদল নেতাকে খুন ও লাশ গুমের অভিযোগে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করা হয়।
১০সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) বিকেলে জামালপুর অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দুটি দায়ের করা হয়। মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালে ‘পানসীয়ানা’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলে এক স্বাক্ষাৎকারে তৎকালীন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে কুরচিপূর্ণ মন্তব্য করেন।
ওই স্বাক্ষাৎকারে ডা. মুরাদ হাসান বলেন, ‘ঐ জাইমা রহমানের মত একটা লুচ্চা, প্রতিরাতে কৃষ্ণাঙ্গদের সাথে না ঘুমালে যার ঘুম হয় না। এই ধরণের কুলাঙ্গারদের বাংলাদেশে আইনা নেতৃত্ব করাবে বিএনপি, এই স্বপ্ন বাংলার মাটিতে হবে না। তখন উপস্থাপক মহি উদ্দিন হেলাল নাহিদ প্রশ্ন করেন, ‘এখন তারেক জিয়াকে কিছু বলবেন না আপনি? জবাবে ডা. মুরাদ হাসান বলেন, ‘তারেক জিয়া সম্পর্কে এইডা তো মানুষের জাতই না। এই বেজন্মা সম্পর্কে আমার কিছু বলার নাই। সে বেগম জিয়ার পোলা না কার পোলা এইডা আল্লাহই জানে। ওকি জিয়াউর রহমানের পোলা না কার পোলা এইডা আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ছাড়া কেউ বলতে পারবে না।
এই ধরণের মানহানিকর বক্তব্য প্রদান করায় তারেক রহমান ও তার মেয়ে জাইমা রহমানের ১০ হাজার কোটি টাকার অধিক মানহানী ঘটেছে। এ ছাড়া ঐ মামলায় ইউটিউব চ্যানেলের কর্ণধার ও উপস্থাপক চট্টগ্রামের পটিয়া পৌর এলাকার বাসিন্দা এ.টি.এম আবুল কাশেমের ছেলে মহি উদ্দিন হেলাল নাহিদকেও আসামী করা হয়েছে। মানহানি মামলাটি দায়ের করেন সরিষাবাড়ী উপজেলার চেচিয়াবাধা গ্রামের বাসিন্দা মৃত ইদ্রিস আলীর ছেলে রুমেল সরকার (৪৫)।
অপরদিকে একই দিন একই আদালতে সরিষাবাড়ী উপজেলার মৃত আব্দুল হাকিমের ছেলে ছাত্রদল নেতা মাসুদ হত্যা ও লাশগুমের অভিযোগ এনে উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো: মাজহারুল ইসলাম (৪৫) বাদী হয়ে ডা. মুরাদ হাসানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা ও লাশগুমের অভিযোগে আরো একটি মামলা দায়ের করেন।
ঐ মামলা সুত্রে জানাযায়,২০১০ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে ফেরার পথে সরিষাবাড়ী উপজেলার কান্দারপাড়া বাসস্ট্যান্ডে বাস থেকে মাসুদ, আইয়ুব আলী ও শফিকুল ইসলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে চলে যাওয়ার পর তৎকালীন সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসানের নির্দেশে সন্ত্রাসীরা মাসুদ ও তার সাথে থাকা আইয়ুব আলীকে ধরে নিয়ে ব্যাপক মারধর করে যমুনার শাখা নদীতে হত্যার উদ্দেশ্যে দুইজনকে ফেলে দেয়।
জীবন রক্ষার্থে আইয়ুব আলী একটি নৌকার আড়ালে লুকাতে পারলেও মাসুদকে আর খুজে পাওয়া যায়নি। নিখোঁজ মাসুদের ভাই ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো: মাজহারুল ইসলাম (৪৫) বাদী হয়ে ডা. মুরাদ হাসানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা ও লাশগুমের অভিযোগ এনে মামলাটি দায়ের করেন। অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা আক্তার মামলা দুটি আমলে নিয়ে সারিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার আদেশ দেন।