লাইসেন্সভুক্ত ৯৫টি অস্ত্রের ৮৯টি জমা পড়েছে। তবে নির্ধারিত সময়ে জমা হয়নি নাটোরের সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক ও নাটোর-২ আসনের আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের নামে লাইসেন্স করা চারটি আগ্নেয়াস্ত্র।
এছাড়া সিংড়ার পৌর মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌসের একটি ও ঠিকাদার আশফাকুল ইসলামের নামে লাইসেন্স করা অপর একটি অস্ত্রও এখন পর্যন্ত থানায় জমা পড়েনি।
শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর জুনাইদ আহ্মেদ পলক পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকলেও আত্মগোপনে আছেন শফিকুল ইসলাম শিমুল। এই দুই রানীতিকের নামে লাইসেন্সভুক্ত আগ্নেয়াস্ত্রগুলো তাদের পক্ষ থেকে কেউ জমা দিতে আসেননি।
নাটোরের পুলিশ সুপারের কার্যালয় জানিয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেওয়া সময় পেরিয়ে গেলেও নাটোরের সাবেক দুই সংসদ সদস্য বা তাঁদের পক্ষে কেউ অস্ত্রগুলো জমা দেননি। তাদের নামে রয়েছে লাইসেন্স করা শর্টগান ও পিস্তল। সেগুলো এখানো থানায় জমা হয়নি। অস্ত্র জমাদানের সময় পেরিয়ে যাওয়ায় এই দুজনের হেফাজতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র চারটি অবৈধ অস্ত্র হিসেবে বিবেচিত হবে। দুই নেতার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়েরের বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
দুই নেতার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সরকার পতনের পর ৫ আগস্ট এই দুই সংসদ সদস্যের নাটোরের বাড়িতে বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা চালায়। বাড়িতে লুটপাট ও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তার আগেই বাড়ি থেকে আত্মগোপনে যান অন্য সদস্যরাও। এখন পর্যন্ত দুই সংসদ সদস্য ও তাঁর স্বজনরা বাড়িতে ফিরে আসেননি।
দুই সংসদ সদস্যের পাশাপাশি সিংড়া পৌরসভার মেয়র উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌসের নামে লাইসেন্স করা একটি ও নাটোর শহরের আওয়ামীপন্থি ঠিকাদার আশফাকুল ইসলামের নামে লাইসেন্স করা অপর একটি অস্ত্রও জমা হয়নি। ৫ আগস্ট তাঁদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে তাঁদের পক্ষ থেকেও সাধারণ ডায়েরি করার আবেদন করা হয়েছে।
অস্ত্র জমা না দেওয়া চার ব্যক্তির মধ্যে ঠিকাদার আশফাকুল ইসলামের একজনের বক্তব্য পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, সরকার পতনের দিন ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় শত শত দুর্বৃত্ত তার বাড়ির লোহার গেট ভেঙে হামলা চালায়। লুটপাটের পর ব্যাপক অগ্নিসংযোগ করা হয়। এক পর্যায়ে তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুরুতর জখম করে দুর্বৃত্তরা। লুট করা হয় লাইসেন্স করা দুটি অস্ত্র ও গুলি। অস্ত্র লুটের পর তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ইমেইল পাঠিয়েছেন।
নাটোরের পুলিশ সুপার মারুফাত হুসাইন বলেন, লাইসেন্স করা ছয়টি বৈধ অস্ত্র জমা পড়েনি। এসব অস্ত্র এখন অবৈধ বলে ঘোষিত হয়েছে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে যৌথ বাহিনী কাজ করছে।