
নষ্ট হয়ে যাচ্ছে পাকা সড়ক
বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে ফসলী জমি কেটে পুকুর করছে। আর সে পুকুরের মাটি যাচ্ছে বিভিন্ন ইট ভাটায়। ড্রাম, ট্রাকসহ অনেক হাইলোডের ট্রাকে মাটি নেয়ায় আঞ্চলিক রাস্তা ও হাইওয়ে রাস্তা চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। অপরদিকে ট্রাকের মাটি রাস্তায় পড়ে ধুলাবালিতে একাকার হয়ে বাড়ছে শ্বাসকষ্টজনিত রোগ।
জানা যায়, পাবনা জেলার সাঁথিয়া পেঁয়াজ, ধান, পাটসহ সম্মৃদ্ধ কৃষি উন্নয়নমুখী একটি উপজেলা। পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়নের সকল স্থানে ভাল ফসল উৎপন্ন হয়। ইদানীং দেখা যাচ্ছে,অনেকেই দুইতিন ফসলী জমি কেটে পুকুর করছে। পুকুরের মাটি উচ্চ মূল্যে ইট ভাটায় বিক্রি করছে।
সাঁথিয়া উপজেলার ক্ষেতুপাড়া ইউনিয়নের সামান্যপাড়ায় অবস্থিত এমএসবি ইট ভাটায় প্রতিদিন ৪০/৫০ ট্রাক মাটি উপজেলার হাসানপুর গ্রামের ট্রেন রাস্তা সংলগ্ন ঠাকুর বিল থেকে মাসের পর মাস বিক্রয় করছে অর্থলোভীরা।
পুকুর সংস্কারের কথা বলে এ মাটি বিক্রয় করছে পুকুরের মালিক হাসানপুর গ্রামের চাঁদ আলীর ছেলে নজরুল ইসলাম, আবু বক্কারের ছেলে ফজলুল মোহরী, জাহের খাঁর ছেলে মানু ও খালইভরা গ্রামের আ: আওয়ালের ছেলে রাশেদুল ইসলাম।
তারা ওই মাটি উচ্চ মূল্যে ইটভাটায় বিক্রয় করে। মাসের পর মাস ট্রাক ও ইজ্ঞিনচালিত নছিমনে মাটি সরবরাহ করায় গ্রামীণ ও মহাসড়ক হুমকির মুখে পড়েছে। সড়কে মাটির স্ত’প পড়ে ধুলাবালির সৃষ্টি হয়েছে।
এমন কি, এ মাটি বৃষ্টি হলে সড়ক পিচ্ছিল করায় বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশংকায় থাকে যাত্রীবাহী ও ভারী যানবাহনের চালকরা। সরেজমিন হাসানপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, হাসানপুর-খালইভরা গ্রামের পাকা সড়কের উপর মাটির স্তুপ পড়ে আছে। বৃষ্টির পানিতে মাটি কাদায় পরিণত হওয়ায় যানবাহন ও মানুষের চলাচেলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে পাকা সড়কটি।
সড়কের বিভিন্নস্থানে ট্রাকের চাকায় সড়ক ভেঙে ও নিচু হয়ে কার্পেটিং উঠে গেছে। হাসানপুর গ্রামের মমিন জানান, বিলে ধান কাটা শুরু হয়েছে। সড়কের বেহাল অবস্থায় আমরা বাড়িতে ধান পরিবহন করতে পারছি না। নিজেরা খালি পায়ে সড়ক দিয়ে হাঁটতে গেলে পিচ্ছিল খেয়ে পড়ে যাচ্ছি। আমরা মাটি বিক্রয় বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এছাড়াও উপজেলার যশোমন্ত দুলাই গ্রামের সুজন মেম্বার ও মতির যোগসাজশে পুকুর খনন করে মাটি বিক্রয় করছে।
প্রতিদিন সড়কে মাটির ট্রাক চলায় ধুলাবালিতে অসুস্থ হয়ে পড়ছে স্কুল, কলেজের শির্ক্ষাথী ও এলাকাবাসী। রাস্তায় ধুলাবালি প্রসঙ্গে কলেজপড়ুয়া সুমী, খোরশেদ, পথচারী নাজমুলসহ আরও অনেকে বলেন, রাস্তায় ধুলাবালিতে চলতে কষ্ট হয়। নাক, মুখ বন্ধ হয়ে যায়।
এছাড়াও ফুসফুসে অনেক সমস্যা হয়ে সর্বদা হাচি-কাশি হতে থাকে। খালইভড়া গ্রামের আ: আওয়ালের ছেলে রাশেদুল ইসলাম জানান, প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই আমরা মাটি বিক্রয় করছি। এমএসবি ইট ভাটার মালিক আঃ হালিম বলেন, তার ভাটায় ইট কাটার জন্য যে মাটি আসছে তা পুকুরের মাটি। এলাকার দালালরা আমার কাছে মাটি বিক্রি করে।
তাদের নিকট থেকে সাড়ে আট টাকা ফিট মাটি ক্রয় করা হয়। প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ ট্রাক মাটি ক্রয় করি। মাটি ব্যবসায়ী ক্ষেতুপাড়া ইউনিয়নের খালইভড়া গ্রামের সিরাজুল,বহলবাড়িয়ার কামাল হোসেন জানান, পুকুরের মাটি বিক্রয় করে আমরা বিপদকালিন সময়ে অর্থ পেয়ে থাকি। ইট ভাটায় মাটি না দিলে এতো পরিমাণ মাটি অন্য কোথায় বিক্রয় সম্ভব নয়।
সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে আমরা ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। প্রায়ই তাদের বিরুদ্ধে জরিমানা শাস্তি দিয়ে থাকি।