
ভূয়া সভাপতি সেজে নওগাঁর বদলগাছীতে এমপির বিশেষ বরাদ্দ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদ সংস্কার বাবদ প্রকল্পের টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মসজিদ কমিটির সভাপতিকে না জানিয়ে নিজেকে সভাপতি জাহির করে উপজেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে বরাদ্দের চেকটি নেন রবিউল ইসলাম । বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনা চলছে।
জানা যায়,গত ৮ই জুলাই রবিবার উপজেলা হল রুমে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ভাতসাইল গ্রামে অবস্থিত বাজার জামে মসজিদের নামে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এমপির বিশেষ আর্থ সামাজিক কাজে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদ সংস্কার বাবদ ৬৫ হাজার টাকা বরাদ্দের একটি চেক দেওয়া হয়। চেকটি এমপি সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তীর নিকট থেকে গ্রহণ করেন রবিউল ইসলাম নামে যুবক।
যে যুবক চেকটি গ্রহন করে ঐ যুবক কমিটির সভাপতি বা সদস্য কেউ নয়। সে বদলগাছীতে ভাড়া বাসায় বসবাস করে এবং চেকটি গ্রহন করে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে বরাদ্দের অর্থ আত্মসাতের পাঁয়তারা করছে।
স্থানীয়দের দাবি, প্রকল্পের টাকা মসজিদ কমিটির কাউকে না জানিয়ে ভুয়া সভাপতি সেজে গuত চার দিন আগে ৮ই জুলাই নওগাঁ-৩আসনের এমপি সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তীর নিকট থেকে চেক গ্রহন করে ভাতসাইল গ্রামের মো. রবিউল ইসলাম নামে স্থানীয় এক যুবক ও চেক গ্রহন করে টাকা উত্তোলন করেছে। পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে মসজিদ কমিটির সভাপতি এবং কমিটির লোকজন টাকা চাইতে গেলে বিভিন্ন অজুহাতে তালবাহানা করে আসছে মো. রবিউল ইসলাম।
স্থানীয়রা আরো জানান, রবিউল ইসলাম ভাতসাইল বাজার জামে মসজিদের নামে গত কয়েক মাস আগেই একটি বরাদ্দ নেয়। সেসময়ও বরাদ্দের টাকা মসজিদে দেওয়ার সময় বিভিন্ন অনিয়ম করে। কিন্তু গত কয়েকদিন আগে ৬৫ হাজার টাকা মসজিদ সংস্কারের জন্য দেওয়া হয়েছে।
সে বিষয়ে কমিটির সভাপতি এবং সদস্য কেউ কিছু জানে না। পরে জানাজানি হলে সে বিভিন্ন তালবাহানা শুরু করে। পরে কমিটির সভাপতি এবং সদস্য সবাই মিলে সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো আনোয়ার হোসেনের দ্বারস্থ হই। অনেক চেষ্টার পরও আমরা মসজিদের নামে ৬৫ হাজার টাকা হাতে পাই নি। সরকারি টাকা মসজিদ কমিটিতে জমা না দিয়ে আত্মসাতের পাঁয়তারা করছে।
এছাড়াও স্থানীয়রা আরও জানান,জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হয়ে ভোট করেছে এই রবিউল হোসেন। সে নিজেকে এমপির নিকটতম লোক বলে এলাকায় নিজের পরিচয় দেন।
এ বিষয়ে ভাতসাইল জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি মো.আব্দুস সাত্তার বলেন,আপনি যা শুনেছেন সবই সত্য। আমি কমিটির সভাপতি কবে চেক দেওয়া হবে আমি কিছুই জানি না। পরে জানতে পারার পর রবিউলের কাছে গেলে বিভিন্ন অজুহাতে টাকা খরচ হয়েছে বলে জানান। পরবর্তীতে চেয়ারম্যানের কাছে গেলে কয়েকদিন সময় লাগবে বলে জানান।
তবে অভিযুক্ত স্থানীয় যুবক রবিউল ইসলাম সত্যতা স্বীকার করে বলেন, জাতীয় নির্বাচনের সময় মসজিদ কমিটির বর্তমান সভাপতি ঈগল এবং বিএনপির ভোট করেছে। আগের কমিটির সাথে ঝামেলা আছে এই জন্য তারা চেক নিতে আসতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছে।
যাই হোক বিষয়টি প্রসেসিং চলছে। আজকে আসরের নামাজ পরে চেকটি কমিটির কাছে হস্তান্তর করবো। এ ব্যপারে উপজেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা মরিয়া ইবনে আজিজ বলেন, এ রকম করার সুযোগ নেই। তারপরেও বিষয়টি আমি দেখতেছি।
এ ব্যপারে বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (চ.দা) মো কামরুল হাসান সোহাগ বলেন, আমি এ বিষয়ে সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার সাহেবের সাথে কথা বলেছি। টাকা ব্যাংক হিসাবে জমা আছে। বর্তমানে কমিটির সভাপতি অন্য কেও আমার মনে হয়। তবে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎসহ সকল অভিযোগের বিষয়ে আমরা খোঁজখবর নেব। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অর্থ ফেরতসহ তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।