
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ৬০হাজারেরও বেশী মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।বন্যার ফলে ৪১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ করা হয়েছে। অপরদিকে তীব্র স্রোতে কয়েকদিনে অন্তত ২শতাধিক বাড়ী-ঘর ব্রহ্মপুত্র নদে বিলিন হয়ে গেছে।
জানা গেছে,উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে কুড়িগ্রামে চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি শুক্রবার বিকালে চিলমারী পয়েন্টে ৭৮সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
এতে মাঠে থাকা পাট,আমন বীজতলা,সবজি,তিল,তিসিসহ কৃষিজাতীয় প্রায় ২হাজার হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত অবস্থায় রয়েছে।এভাবে কিছুদিন থাকলে এসব ফসল বিনষ্ট হওয়ার আশংকা করছে চাষিরা।
হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধির ফলে বিপাকে পড়েছে বানভাসি মানুষ। একটু আশ্রয়ের খোঁজে বিভিন্ন উচু জায়গায় যাচ্ছে তারা। নিরুপায় হয়ে অনেকে নৌকার মধ্যে রাত্রিযাপন করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলা হলেও এখনো সবার কাছে পৌঁছেনি সরকারি সহায়তা।
সরেজমিনে উপজেলার রাণীগঞ্জ,নয়ারহাট ও রমনা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়,গত কয়েকদিন ধরে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি অস্বাভাবিকহারে বৃদ্ধির ফলে গরু-ছাগল,সহায়-সম্পদ ও বৃদ্ধ-শিশুদের নিয়ে বিপাকে পড়েছে ওইসব এলাকার বানভাসি মানুষ।ঘরের ভিতর পানি প্রবেশ করায় অনেকে বাড়ী-ঘর ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্র কিংবা উচু জায়গায় স্থান নিয়েছে।
যাদের নৌকা আছে তারা নৌকায় আশ্রয় নিয়েছে।অনেকে ঘরের ভিতর মাচা ও চৌকি উঁচু করে সেখানেই আশ্রয় নিয়েছে এবং সেখানেই কোন রকমে রান্না করে জীবন বাচাচ্ছেন। এদিকে বন্যার পানি বৃদ্ধির ফলে নদের ভাঙন তীব্র আকার ধারন করেছে। গত কয়েকদিনে বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ২শ পরিবার তাদের বাড়ী-ঘর হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে।
উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নের বজরাদিয়ারখাতা গ্রামের মাহফুজার রহমান,আ.রশিদ,শামছুল হক ও সাইফুল ইসলামসহ অনেকে জানান,বাড়িঘরে পানি ওঠায় গবাদি পশু ও বাচ্চাদের নিয়ে খুব বিপদে আছি। তার উপর গত দুই দিনে গ্রামের ১৭টি বাড়ী নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।
ইউনিয়নটির ১নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো.রফিকুল ইসলাম উজ্জল বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাধারন জিআর এবং বন্যার্তদের জন্য সহায়তা আসলেও ইউপি চেয়ারম্যান আমার ওয়ার্ডে কাউকে তা দেননি,ফলে বন্যার্ত ওয়ার্ড বাসীকে নিয়ে বিপাকে রয়েছি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার(ভারপ্রাপ্ত)মো.জাহিদুর রহমান জানান,৪১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় পানি বন্দি হওয়ায় বিদ্যালয়গুলি ছুটি ঘোষনা করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.মিনহাজুল ইসলাম বলেন,বানভাসী মানুষের সাহায্যার্খে প্রাপ্ত সহায়তা পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হচ্ছে।