
ঝালকাঠিতে নবম শ্রেণির ছাত্রী আফিয়া আক্তার (১৪) শহরের সরকারি হরচন্দ্র বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ফ্যানের সাথে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ১ জুলাই সকাল ১০ টা ৪০ মিনিটে বিদ্যালয়ের ৪ তলা ভবনের একটি কক্ষে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় জেলা প্রশাসক ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, আফিয়া আক্তার সুগন্ধা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ এসএম ওবায়দুল্লাহ্ আমিরের বড় মেয়ে। তার মা কুরছিয়া খাতুন, পরিবার পরিকল্পনার স্বাস্থ্য সহকারী পদে কর্মরত। ঘটনার বিশয়ে আফিয়ার বাবা এসএম ওবায়দুল্লাহ্ আমির বলেন, ঘটনার আগে ও আমার সাথে কোন বিষয় নিয়ে কোন সমস্যার কথা আলাপ করেনি। সোমবার স্কুলে যাওয়ার আগে বাসা থেকে ভাত খেয়ে আমার কাছ থেকে টিফিনের জন্য ২০ টাকা নিয়ে চলে যায়। ঘটনার আগে এমন কিছুই ঘটেনি যে সে আত্মহত্যা করতে পারে।
ঘটনার পর বিদ্যালয়ের সহপাটিরা বিষয়টি জানতে পেরে শিক্ষদের অবগত করে। এরপর দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষকরা ঝুলন্ত মৃতদেহ নামিয়ে পুলিশকে খবর দেয়। ঘটনার বিষয়ে বিদ্যালয়ের সহপাঠিরা জানায়, ঝালকাঠি সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র মোস্তাফিজুর রহমান তনয় (১৫), পিতা মোঃ পলাশের সাথে প্রেমের সম্পর্কের সুত্র ধরে এই ঘটনা ঘটতে পারে।
তবে বিদ্যালয় সুত্রে জানাযায়, প্রধান শিক্ষক মোঃ নুরুল ইসলাম প্রশাসনিক ভাবে কঠোর না হওয়ায় এবং শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রনে রাখতে না পারায় এই দূর্ঘটনা। প্রধান শিক্ষক তার বিদ্যালয়ের চাকুরিচ্যুত নারী নির্যাতন মামলার আসামী সুইপার মোঃ নয়নকে দিয়ে তার পিয়নের কাজ করাচ্ছেন। এই নিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করা সত্বেও তিনি কোন ব্যাবস্থা নেননি। এছাড়াও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়মিত বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকাসহ বিভিন্ন অনয়িম ও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ রয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ নুরুল ইসলাম বলেন, আত্মহত্যার কারন আমার জানানেই। জেলা প্রশাসক কমিটি করে দিয়েছেন। কমিটির তদন্ত রিপোর্ট পাওয়া গেলে জানা যাবে।
এ বিষয়ে ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মহিতুল ইসলাম জানান, ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইটি) সাজিয়া আফরোজকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি যাচাই বাছাই করে দেখবে এই ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে কোন অবহেলা ছিল কিনা। সদর থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।