সহজ মাস মুহূর্তে কঠিন করে ফেলল দক্ষিণ আফ্রিকা। এই কঠিন আবারো শিরোপা বঞ্চিত করল দক্ষিণ আফ্রিকাকে। অপরপ্রান্তে ভারত আবারও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিতল।
শেষ ওভার। প্রথম বল। আউটসাইড-এজে চার রাবাদার। পরের বলে ব্যাটে লাগাতে পারেননি, বাই থেকে এসেছে সিঙ্গেল। মহারাজকে এরপর ব্লকহোলে করেন পান্ডিয়া, লেগ বাই থেকে ১ রানের বেশি আসেনি। ২ বলে দরকার ১০ রান। ক্লাসেন ডাগআউটে বিশ্বাস করতে পারছেন না কিছুই। ভারত বিশ্বাস করছে—মাঠে এবং গ্যালারিতে। হয়তো আরও অনেক জায়গায়। পান্ডিয়া ওয়াইড করে অবশ্য ঝুলিয়ে দিলেন ব্যাপারটি। শেষ ২ বলে ২ চারে সম্ভব সুপার ওভার। পঞ্চম বলে লং অফে রাবাদা ধরা পড়েছেন। কোহলি-রোহিত আর দ্রাবিড়ের উদ্যাপনই বলে দিচ্ছিল—শিরোপা সময়ের অপেক্ষা। শেষ বলে ১ রানের বেশি আসেনি। ভারত চ্যাম্পিয়ন!
শেষ বলটা করার পর শুয়ে পড়লেন পান্ডিয়া। ওদিকে রোহিত শর্মাও তাই। পান্ডিয়া এরপর কেঁদেই ফেলেছেন। আবেগী ঋষভ পন্তও। এ শিরোপার অর্থ ভারত ক্রিকেটারদের কাছে অ-নে-ক।
৩০ বলে দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার ছিল ৩০ রান। এর আগে কখনো ফাইনালে আসেনি দক্ষিণ আফ্রিকার। শিরোপাটি হাতছোঁয়া দূরত্বে তখন তাদের। বুমরার ওভারে এরপর এল ৪ রান। পরের ওভারে তিনি দিলেন ২ রান। মাঝে পান্ডিয়ার ওভারে প্রথম বলে আউট ক্লাসেন। ভারত বিশ্বাস রেখেছিল। চাপ সামলেছে তারা। অন্যদিকে হাতের মুঠোয় আসা ম্যাচটি এক অর্থে পড়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকার।
দুদলই ফাইনালে এসেছিল অপরাজিত থেকে। দক্ষিণ আফ্রিকা হারল এরপর। ভারত রইল অপরাজিত।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে এটি এখন সর্বোচ্চ স্কোর, আগের সর্বোচ্চ ছিল ২০২১ সালে অস্ট্রেলিয়ার ১৭৩। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার সে স্কোর এসেছিল রান তাড়ায়, যে ম্যাচটি জিতেছিল তারা।
আগের ২ ওভারে এসেছিল ৩৩ রান। তবে নর্কিয়ার করা শেষ ওভারে ৯ রানের বেশি আসেনি। দুবের পর জাদেজার উইকেটও পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা, জাদেজা আউট হয়েছেন শেষ বলে গিয়ে। ভারত তুলেছে ৭ উইকেটে ১৭৬ রান।
টসে জিতে ব্যাটিং নিয়ে ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়েছিল ভারত। এরপর কোহলির সঙ্গে অক্ষরের ৫৪ বলে ৭২ ও দুবের ৩৩ বলে ৫৭ রানের দুটি জুটি টানে তাদের। কোহলি ফিফটি পর্যন্ত বেশ সময় নেন।
এরপর গতি বাড়ান। যদিও শেষ করে আসতে পারেননি। তবে ভারত পেয়েছে বেশ ভালো একটা সংগ্রহ। দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে বোলিংটা একেবারে খারাপ করেনি। তবে মাঝেই মাঝেই এলোমেলো হয়ে পড়ছিল তাদের ব্যাটিং।
ফাইনালে ম্যাচে অতিরিক্ত চাপ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। শুরুতেই সেই চাপে পড়ে ভারত। মাত্র ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে রোহিত শর্মার দল। তবে সেই চাপ সামাল দিয়েছেন আসর জুড়ে রান খরায় ভোগা বিরাট কোহলি।
বড় ম্যাচে ঠিকই রানের দেখা পেয়েছেন তিনি। তুলে নিয়েছেন ফিফটি। কোহলির ফিফটিতে ভর করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১৭৭ রানের টার্গেট দিয়েছে ভারত।
শনিবার (২৯ জুন) বার্বাডোজের ব্রিজটাউনের কেনসিংটন ওভালে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ব্যাট করতে নেমে আক্রমণাতœক শুরু করেন দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি। তবে দলীয় ২৩ রানে জোড়া উইকেট হারায় ভারত।