মাটি ফেলে সড়ক নষ্টের প্রতিবাদ করায় বাড়ির নারীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছেন মাটি ব্যবসায়ী আজিজ বাহিনীর লোকজন। আহতদের গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় আহতদের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের বামোনকোলা ছোট বটতলা এলাকায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই হামলার ঘটনা ঘটেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক রাজিব হোসেন ইত্তেফাককে জানান, মাধরের ঘটনায় নারীসহ অন্তত দশজন ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। প্রত্যেকের শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে।
মাটি ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজ উপজলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাঁচশিশা গ্রামের মৃত সেকেন প্রামাণিকের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে গুরুদাসপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার তিন ফসলি জমিতে অবৈধভাবে পুকুর খনন করে আসছেন।
স্থানীয়দের পক্ষে নজরুল ইসলাম বাদি হয়ে ৮জনকে অভিযুক্ত করে গুরুদাসপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। হামলাকারীরা মশিন্দা চরপড়া গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয়রা জানান, বেশ কিছু দিন ধরে মশিন্দা ইউনিয়নের শিকারপুর এলাকায় অবৈধভাবে পুকুর খনন করছেন মাটি ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজ, আয়ুব আলী ও আব্দুল লতিফ। তাদের খননকৃত পুকুরের মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। মাটি বহনকারী ট্রাক্টর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে। ট্রাক্টরের মাটি উপচে পরে পাকা সড়কে মাটির স্তর পড়েছে। প্রখর রোধে ধুলিময় পরিবেশে আশপাশের বামনকোলা, মশিন্দা চরপড়া, মশিন্দা মাঝপাড়াসহ অন্তত ৫ গ্রামের মানুষ জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। প্রতিবাদ করায় তাদের ওপর হামলা চালিয়ে পুকুর খননকারীরা।
পুকুর খননকারীদের হামলায় আহত গৃহবধূ নিলুফা ইয়াসমিন বলেন, গুরুদাসপুর-কাছিকাটা আঞ্চলিক সড়কের ধারেই তাদের বাড়ি। সড়কে পড়া মাটিতে ধুলোয় আচ্ছন্ন হওয়ায় বৃহস্পতিবার বিকালে স্থানীয়রা ওই সড়কে পানি ছিটিয়ে দেন। পানি ছিটানোর বিষয়টি নিয়ে মাটি বাব্যবসায়ী আব্দুল আজিজের পক্ষে হাফিজুল লোকজন নিয়ে স্থানীয়দের ওপর চড়াও হন। এসময় স্থানীয় লোকজনের সাথে হাফিজুলের বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
তিনি বলেন, ওই ঘটনার জের ধরে সন্ধ্যার দিকে অভিযুক্ত হাফিজুল লোকজন নিয়ে বামনকোলা গ্রামের মজিবর, আহম্মেদ আলী ও আব্দুল মান্নানের বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালান। এসময় বাড়িতে পুরুষ না থাকায় তাকেসহ সেলিনা বেগম (৩৫) ও সাহেদা বেগমকে (৩২) বেধরক পিটিয়েছেন। এ সময় স্থানীয় মামুন ইসলাম, রাব্বী প্রামাণিক, হাসান আলী ও খোদেজা বেগম এগিয়ে এলে তাদেরও পিটিয়ে যখম করা হয়। এতে তিনিসহ অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন।
এদিকে পুকুর খননকারীদের পক্ষে হামলায় অংশ নেয়া হাফিজুল ইসলাম দাবি করেন, পাকা সড়কে পানি দেওয়ায় তাদের মাটিবাহি যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন হচ্ছিল। এ কারণে তিনি প্রতিবাদ এলাকার লোকজন তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এ বিষয়ে মাটি ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) উজ্জল হোসেন জানান, মারধরের ঘটনায় অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ কাজ করছে।