কচুগাড়ি, বলদখাল, মাটিকোপা, কুঞ্চি ও কুত্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো শ্রুতিকটু ২৪৭ বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নেতিবাচক এসব নাম পরিবর্তন করে মুক্তিযুদ্ধ, গল্প, কবিতা, নদী এবং সমসাময়িক বিষয়ের উপর ভিত্তি করে তাৎপর্যপূর্ণ নাম দেওয়া হয়েছে।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামকরণ ও বিদ্যমান নাম পরিবর্তন নীতিমালা ২০২৩ এর নীতি ৪ (ক) ও ৫ অনুযায়ী দেশের ২৪৭ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে ৩ এপ্রিল প্রজ্ঞাপন জারি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ কবির উদ্দীন স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে দেখা গেছেÑ দেশের যে ২৪৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে তার মধ্যে নাটোর জেলাতেই রয়েছে ৫১টি বিদ্যালয়।
এছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৪৭, রাজশাহী ২, বগুড়া ৪, সিরাজগঞ্জ ১১, চট্টগ্রাম ১, বাগেরহাট ৩, জামালপুর ৪, খুলনা ৪২, ময়মনসিংহ ১, গাইবান্ধা ৯, বরিশাল ২, পঞ্চগড় ১০, ভোলা ২, বরগুনা ২, ঠাকুরগাঁ ২, নীলফামারি ১১, রংপুর ৬, কুরীগ্রাম ৫, মানিকগঞ্জ ১, ঢাকা ৫, সিলেট ১, হবিগঞ্জ ৩, মাগুড়া ১, চুয়াডাঙ্গা ২, নরাইল ২, মুন্সিগঞ্জ ৩, নরসীংদি ১, ফরিদপুর ৫ ও গোপালগঞ্জ বিভাগে ১ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম দেওয়া হয়েছে।
সূত্র বলছে, দেশে এই প্রথম বিপুল সংখ্যক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে নাটোর জেলার ৫১ টি বিদ্যালয়ের নামের পরিবর্তন নিয়ে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। আবার কুরুচিপূর্ণ শ্রুতিকটু নাম পরিবর্তনের ফলে বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
বলদখাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি গোপাল চন্দ্র কর্র্মকার জানান, বিদ্যালয়টি ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এলাকার নামের সাথে মিল রেখে বিদ্যালয়টির নাম ‘বলদখাল’ রাখা হয়। এই নামের কারণে মানুষ কটু কথা বলতেন। একারণে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা বিব্রতবোধ করতেন। এখন বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে স্বপ্নসিঁড়ি রাখায় তারা উচ্ছ্বসিত।
মাটিকোপা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, মাটিকোপা নামটি নিয়ে শিশু শিক্ষার্থীরা মজা করতো। নামের ভালো তাৎপর্য না থাকায় শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের নামের মাহত্তো বোঝানো যায়নি। এছাড়া মানুষও তিরষ্কার করতো। তবে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে ‘মাতৃছায়া’ রাখায় তারা আনন্দিত।
এদিকে এলাকার নামের সাথে মিল রেখে বিদ্যালয়গুলোর নামকরণ হয়েছিল। কিন্তু পরিবর্তন করে বিদ্যালয়ের নতুন নাম দেওয়ায় অসন্তোষও প্রকাশ করেছেন অনেকে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানাগেছে, দেশের শ্রুতিকটু বিদ্যালয় নাম পরিবর্তনের জন্য জেলা উপজেলা থেকে প্রস্তাব চাওয়া হয়েছিল। উপজেলা পর্যায় থেকে পাঠানো নামের তালিকা জেলা প্রশাসনের সভায় মাধ্যমে চূড়ান্ত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল।
নাটোরের জেলা আবু নাছের ভূঁঞা বলেন, যথেষ্ট পর্যালোচনার পর শ্রুতিকটু নাম পরিবর্তনে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। তবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ কবির উদ্দীন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের ব্যপারে ইত্তেফাকের কাছে কোনো মন্তব্য করেননি।