ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে তার নির্দেশে বিশাল আকৃতির ২টি মেহগনী গাছ কেটে বরিশালে নিয়ে যাবার সময় পুলিশ আটক করেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সারে ৫ টার দিকে।
পুলিশ গোপন সূত্রে সংবাদ পেয়ে ঝালকাঠি বরিশাল মহাসড়কের পেট্রোল পাম্প মোড় থেকে ট্রলিসহ গাছ আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনার পর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি।
ট্রলিচালক ও প্রত্যক্ষদর্শী সংবাদ কর্মী সূত্রে জানাযায়, গতকাল শেষ বিকেলে পানিউন্নয়ন বোর্ডের ভিতর থেকে বিশাল আকৃতির দুটি মেহগনী গাছ কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।
ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর নির্দেশে এ গাছ নিয়ে চালক বরিশালের একটি স্বমিলে যাচ্ছিল। ঘটনাক্রমে সংবাদ কর্মীরা ট্রলি থামিয়ে জানতে চাইলে চালক নির্বাহী প্রকৌশলীর কথা জানালে বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করা হয়।
সাথে সাথে পুলিশ ঘটনা স্থলে এসে গাছ ট্রলিসহ আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর অফিস সহকারি মো. ফেরদৌস জানান, নির্বাহী প্রকৌশলীর নির্দেশে গাছ কেটে স্বমিলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তবে বরিশালে নয়। কারণ আমাদের অফিসের দালান থেকে বর্ষার সময় পানি পরে। তাই এ গাছ কাটিয়ে অফিস ভবনের ছাদে টিনের বেড়া দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এত বড়গাছ কেটে কেন টিনের বেড়া দেয়া হবেএবং বরিশালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল কেন জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তোর দিতে পারেনি। তবে এই অফিস সহকারি ফেরদৌস বলেন, স্যারের স্ত্রী বরিশালের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্ব্হাী প্রকৌশলী হওয়ায় স্যার বরিশালে থাকেন।
কিন্তু তিনি বরিশালের স্বমিলে নিতে বলেননি। স্থানীয় সংবাদকর্মী এসএম রাজ্জাক হোসেন পিন্টু বলেন, আমরা যখন গাছ সহ ট্রলিটি বরিশাল যাবার পথে পেট্রোল পাম্প মোড়ে থামাই তখন পিছনে নির্বাহী প্রকৌশলীর গাড়িছিল। তিনি দূর থেকে গাছের ট্রলি থামানোর বিষয়টি দেখে পাশ কেটে জোড়েগাড়ি টেনে বরিশালের দিকে চলে যান।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নিলয় পাশা মোবাইল ফোনে সাংবাদিকদের প্রথমে বলেন, আমি এ বিষয়েকিছুইজানিনা। বরিশালে কে বা কারা গাছ নিয়ে যাচ্ছিল তা আমার জানা নেই। তবে এই গাছ কাটার নির্দেশ আমি দিয়েছিলাম বণ বিভাগের অনুমতি নিয়ে। কিজন্য গাছ কাটা হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার অফিস ভবনের অবস্থা নাজুক।
বর্ষার সময় পানি পড়ায় ভবনের উপরে টিন দিয়ে কাঠের বেড়া নির্মান করতে গাছ কাটতে বলেছি। টিনের বেড়ায় এতো মূল্যবান গাছ কাটার যৌক্তিকতা কতখানি জানতে চাইলে তিনি বলেন কাল অফিসে আসেন। সামনাসামনি কথা হবে।
এ প্রসঙ্গে ঝালকাঠি সদর থানার এসআই সাখাওয়াত হোসেন বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঝালকাঠি পেট্রোল পাম্প মোড় থেকে ট্রলিতে গাছ সহ আটক করেছি। এ সময় ট্রলি চালক জানিয়েছে বরিশালের কটি স্বমিলে নির্বাহী প্রকৌশলীর নির্দেশে এ গাছ কেটে নিয়েযাচ্ছিল।
তাই কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তবে পানিউন্নয়ন বোর্ডের অফিসে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে গাছ কাটার বৈধতা না পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গাছ কাটার প্রসঙ্গে ঝালকাঠি বণ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আরিফ হোসেন জানান, কোন ডিপার্টমেন্টের কোন গাছ কাটার অনুমতি দেয়ার এখতিয়ার আমার নেই।
তবে দুপুরে নির্বাহী প্রকৌশলী আমাকে ডিসি অফিসের একটি মিটিং এ বসে বলেছে ২টি গাছ অপসারন করা দরকার। তাকে বলেছি আপনি চিঠি দেন, আমি দেখব। এটুকুই। তিনি কি গাছ কোথা থেকে কাটছে তা আমার আদৌ বোধগম্য নয়।